Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

সপ্তাহে দু’দিন ডিম বা মাছ, মিড-ডে নিয়ে ফাঁপরে স্কুল

বাজারে যেখানে ডিমের দাম ৫ থেকে সাড়ে ৫ টাকা, মাছের পিস অন্তত ১০-২০ টাকা, সেখানে সরকারি নির্দেশ মেনে পড়ুয়াদের পাতে কী ভাবে মাছ-ডিম পড়বে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

তমলুকের একটি স্কুলে মিড-ডে মিল খাচ্ছে পড়ুয়ারা। ফাইল চিত্র

তমলুকের একটি স্কুলে মিড-ডে মিল খাচ্ছে পড়ুয়ারা। ফাইল চিত্র

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:০০
Share: Save:

মাথাপিছু দৈনিক বরাদ্দ ৪ টাকা ১৩ পয়সা। তবু তারই মধ্যে পড়ুয়াদের পাতে সপ্তাহে অন্তত দু’দিন ডিম বা মাছের পদ রাখতেই হবে। অন্য দিনে শাক-সব্জি কিংবা সয়াবিনের তরকারি। মিড ডে মিলের খাদ্য তালিকা নিয়ে এমন সরকারি কপালে ভাঁজ পড়েছে বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের।

বাজারে যেখানে ডিমের দাম ৫ থেকে সাড়ে ৫ টাকা, মাছের পিস অন্তত ১০-২০ টাকা, সেখানে সরকারি নির্দেশ মেনে পড়ুয়াদের পাতে কী ভাবে মাছ-ডিম পড়বে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের জন্য সরকারিভাবে মাথা পিছু চাল বরাদ্দ করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন তরকারি ও রান্নার জন্য জ্বালানি বাবদ মাথা পিছু অর্থ বরাদ্দ করা হয়ে থাকে। চাল ছাড়া এইখাতে বরাদ্দ বর্তমানে ৪ টাকা ১৩ পয়সা। ২০১৬ সালের জুলাই মাস থেকে এই হারে অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে। এ ছাড়া রান্নার জন্য নিযুক্ত কর্মীদের মাসিক পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা রয়েছে।

বিভিন্ন স্কুলের প্রধানশিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, জেলা প্রশাসন গত ২৫ সেপ্টেম্বর এক নির্দেশে জানিয়েছে পড়ুয়াদের খাবারের তালিকায় সপ্তাহে অন্তত দু’দিন ডিম বা মাছের ঝোল রাখতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন দিনে ডাল, আলু-সব্জির তরকারি, ডাল ও আলু-পোস্ত, সয়াবিন ও আলুর তরকারি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, এই দু’বছরে বাজারে আনাজ থেকে ডিম-মাছের দাম অনেক বেড়েছে। কিন্তু মিড-ডে মিল খাতে পড়ুয়াদের মাথা পিছু বরাদ্দ বাড়েনি। ফলে এমন খাদ্য তালিকা মেনে পড়ুয়াদের খাওয়ানো কার্যত অসম্ভব। অবিলম্বে মাথা পিছু বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি তুলেছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন।

বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক সতীশ সাহুর দাবি, ‘‘যেখানে পড়ুয়াদের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ ৪ টাকা ১৩ পয়সা, সেখানে সপ্তাহে দু’দিন ডিম বা মাছ খাওয়ানোর নির্দেশ বাস্তবসম্মত নয়। সে ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের মাথা পিছু বরাদ্দ অন্তত ১০ টাকা করতে হবে।’’

পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপকুমার ভৌমিকের অভিযোগ, ‘‘দু’বছর ধরে বরাদ্দ না বাড়িয়েই খাদ্য তালিকা কড়া ভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এতে মিড-ডে মিল চালাতে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’’ তিনি জানান, শুক্রবার তাঁরা মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ টাকা বাড়ানোর দাবিতে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেবেন।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (ট্রেজারি) শেখর সেন বলেন, ‘‘মিড-ডে মিলের খাদ্যতালিকা মেনে চলার নির্দেশিকা সমস্ত স্কুলে পাঠানো হয়েছে। তবে বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়ে এখনও কেউ দাবি করেননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Quandary School Mid-day Meal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE