জঙ্গলমহলের পড়ুয়াদের ‘মমতাময়ী মায়ের স্নেহের পরশ’ দিতে উদ্যোগী হলেন ঝাড়গ্রামের সাংসদ উমা সরেন! সাংসদ কোটার টাকায় এ বার জঙ্গলমহলের অনেক স্কুলকে সিলিং ফ্যান দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন উমা। প্রস্তাব মঞ্জুরও করেছে প্রশাসন। শীঘ্রই এই সিলিং ফ্যান দেওয়া হবে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, উমার আর্জি মেনে ওই ফ্যানের গায়েই লেখা থাকবে, ‘মমতাময়ী জঙ্গলমহলের মায়ের স্নেহের পরশ’।
বছর দেড়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘জঙ্গলমহলের মা’ বলে সম্বোধন করেছিলেন জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। তা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। এ বার সাংসদ কোটার টাকায় কেনা সিলিং ফ্যানে ওই লেখা থাকা নিয়েও বিঁধছে বিরোধীরা। বিরোধীদের দাবি, পরোক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ঢাক পেটাতেই স্কুলকে দেওয়া সিলিং ফ্যানে এই লেখা রাখা হচ্ছে।
উমা অবশ্য এতে দোষের কিছু দেখছেন না। একধাপ এগিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘জগৎজননী’ বলে সম্বোধন করে তিনি বলছেন, ‘‘জগৎজননীর পরিকল্পনা যদি সঠিক ভাবে রূপায়ণ করা যায় তাহলে মানবসভ্যতার বিকাশ হবে! নতুন পৃথিবী সৃষ্টি হবে!”
স্কুলে পাখা দেওয়ার ভাবনা এল কী ভাবে? ঝাড়গ্রামের তৃণমূল সাংসদের কথায়, “জগৎজননী, আজকে যিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, একদিন তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তুই মানুষকে জল- আলো- বাতাস দে! সেই থেকেই
এই ভাবনা।”
ঠিক কতগুলো স্কুলকে সিলিং ফ্যান দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন উমা। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, স্কুলের সংখ্যাটা ২,৫৭০। সিলিং ফ্যান দেওয়া হবে সবমিলিয়ে ২১,৪৬৮। এ জন্য উমা সাংসদ কোটা থেকে ৪ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। এর আগেও সাংসদ কোটার টাকায় জঙ্গলমহলের বহু স্কুলকে পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন উমা। সাংসদ কোটার টাকা খরচে ঝাড়গ্রামের সাংসদের পারফরম্যান্স অবশ্য খুব ভাল নয়।
এখন সাংসদেরা এলাকা উন্নয়ন তহবিলে বছরে ৫ কোটি টাকা করে পান। এ জেলার অন্য দুই সাংসদ যথাক্রমে সন্ধ্যা রায় এবং দীপক অধিকারী ওরফে দেব যেখানে এই সময়ের মধ্যে সাড়ে ১২ কোটি টাকা করে পেয়েছেন, সেখানে উমা সাড়ে ৭ কোটি টাকা পেয়েছেন।
প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রামের ক্ষেত্রে টাকা এসে পড়ে থাকে। তবে প্রস্তাব না-আসায় কাজ করা যায় না। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীরও অজানা নয়। কেমন? গত জুনে ঝাড়গ্রামে এসে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক চলাকালীন তিনি সাংসদদের পারফরম্যান্স নিয়ে খোঁজখবর নেন।
তখনই মুখ্যমন্ত্রী জানতে পারেন, ঝাড়গ্রামের ক্ষেত্রে সাংসদ কোটার টাকা এসে পড়ে রয়েছে। তবে কাজের প্রস্তাব জমা পড়েনি। এটা জানতে পেরে নিজের অসন্তোষ গোপন করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সামনেই তিনি উমাকে নির্দেশ দেন, টাকা এসে পড়ে থাকবে। অথচ খরচ হবে না। এটা হতে পারে না। দ্রুত কাজের প্রস্তাব জমা দিতে হবে। ফের ঝাড়গ্রামে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, মাস খানেক আগেই স্কুলগুলোকে সিলিং ফ্যান দেওয়ার প্রস্তাব জমা দেন উমা। সেই প্রস্তাব মঞ্জুরও হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy