ফিরিয়ে দেওয়া হোক বাসযোগ্য জমির রায়ত স্বত্ব (জমি কেনা-বেচার অধিকার)। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বৃহস্পতিবার এই আর্জি জানালেন ঝাড়গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা। আবেদন পেয়েই সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করেন তিনি। আবেদনকারীদের আশা, খুব শীঘ্রই মিলবে সুফল।
এ দিন বিকেলে বেলপাহাড়ির সভা সেরে মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রামে ফিরছিলেন। অরণ্যশহরের এসবিআই মোড় এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর অপেক্ষায় ছিলেন দশ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ঘনশ্যাম সিংহ এবং ওই ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়ক গৌতম সিংহ-সহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। ছিলেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকজন নাগরিকও। তাঁদের দেখে মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থামিয়ে কথা বলেন। ঘনশ্যামবাবুরা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে আবেদনপত্র ও ফাইল তুলে দেন। মুখ্যমন্ত্রী যথাযথ পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে ঘনশ্যামবাবুদের ডেকে পাঠানো হয়। ঝাড়গ্রাম জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) টি সুব্রহ্মণ্যম ঘনশ্যামবাবুদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ঝাড়গ্রাম জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) টি সুব্রহ্মণ্যম বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া আবেদনপত্রে এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, শহরের ওই দু’টি ওয়ার্ডের ৪২ একর রায়ত বাসযোগ্য জমিকে ১৯৮১ সালে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর খাস বলে ঘোষণা করে। বাসিন্দারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ১৯৯৭ সালে হাইকোর্ট নির্দেশ জারি করে পুরো জমিটি রায়ত বলে জানিয়ে দেয়। ১৯৯৮ সালে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর ফের ওই ৪২ একর জমি খাস বলে ঘোষণা করে। বাসিন্দারা আবার হাইকোর্টে আপিল করেন। আদালতে ভূমি দফতর জমিটিকে খাস বহাল রাখার আবেদন জানায়। ২০০০ সালে হাইকোর্ট ভূমি দফতরের আবেদন খারিজ করে জমিটি রায়ত বলে জানিয়ে দেয়।
ওই জমিতে ছ’শো পরিবার বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন। কিন্তু তারপরও ভূমি দফতর ৪২ একর বাসযোগ্য জমির রায়ত-স্বত্ব ফিরিয়ে দেয়নি। এর ফলে জমি কেনাবেচা, বাড়ি বিক্রি, বাড়ি বন্ধক রেখে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে চরম সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা। ঘনশ্যাম বলেন, ‘‘ভূমি দফতরের ভুলে আমরা নিজভূমে পরবাসী হয়ে আছি।’’
দশ নম্বর ওয়ার্ডের আহ্বায়ক গৌতম সিংহের কথায়, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এলাকার ছ’শো পরিবারকে এখনও জমির বৈধ অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ভূমি দফতর সক্রিয় হওয়ায় আমরা খুশি। আশা করছি সকলেই সুবিচার পাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy