রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে মদ বিক্রির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন নতুনবাজারের বাসিন্দারা। — নিজস্ব চিত্র।
শহরের ঘনবসতি এলাকা নতুনবাজার। সেখানেই বেআইনিভাবে তৈরি এবং বিক্রি হচ্ছে চোলাই। সকাল থেকে রাত, মদ্যপদের উপদ্রবে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। বেআইনিভাবে মদ তৈরি ও বিত্রি বন্ধের দাবিতে ২০১৩ সাল থেকে বিভিন্ন দফতরে স্মারকলিপি দিয়েও কাজ হয়নি। এ বছর সরস্বতী পুজোর দিন মদ্যপদের দৌরাত্ম্য চরমে পৌঁছয়। তারপর থেকেই রাস্তায় নেমেছেন এলাকাবাসী। সকাল থেকে রাত, পালা করে চলছে পাহারা দেওয়া।
মেদিনীপুর পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনবাজার নেতাজি পার্কের পাশে এই এলাকা। অভিযোগ, স্থানীয় কয়েকটি পরিবার এখানে বেআইনিভাবে চৌলাই তৈরি ও বিক্রি করে। দিনভর নানাবয়সী লোক সেখানে আসে। তারপর মদ্যপ অবস্থায় শুরু হয় গালিগালাজ, চলে অশান্তি। স্থানীয় বাসিন্দা শান্তি ধাড়া, মৌসুমী দাসরা বলছিলেন, ‘‘মদ্যপদের চেচাঁমেচি, গালাগালিতে আমরা সবাই অতিষ্ঠ। সন্ধের পরে বাচ্চাদের পড়াশোনা হচ্ছে না। বেসামাল হয়ে জোরে মোটরবাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে।’’
এই পাড়ার মধ্যে রয়েছে অনেকগুলি মেস। পাশেই রামকৃষ্ঠ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়। সেই মেসে থেকে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের বহু ছাত্র পড়াশোনা করে। এই পথে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে ছাত্ররা। মদ্যপদের উপদ্রবে তারাও বিরক্ত। এলাকার বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক অমল দত্তের অভিযোগ, ‘‘আশিস দাস-সহ কয়েকজন এই বেআইনি ব্যবসা করছে। আমি ওদের এই ব্যবসা বন্ধ করে অন্য কিছু করার কথা বলেছি। প্রয়োজনে আমি টাকা দিয়ে সাহায্য করব বলেছি। কোও লাভ হয়নি।’’ স্থানীয় বাসিন্দা সঙ্ঘমিত্র হালদার ও অতীশ বসু বলেন, ‘‘২০১৩ সাল থেকে আফগারি দফতর, পুলিশ প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কাজ হয়নি। ২০১৬ সালে স্বরাষ্ট্র দফতরকে চিঠি লিখেও ফল মেলেনি।’’
সরস্বতী পুজোর দিন মদ্যপদের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকার প্রায় একশোটি পরিবারের সবাই বৈঠক করে পাহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই থেকেই পাহারা চলছে। মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রধান প্রণব বসু অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার নজরে আসে নি। এখন জানলাম। যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’’ আবগারি দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আধিকারিক সুব্রত দাশগুপ্তেরও আশ্বাস, ‘‘আমরা খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy