Advertisement
০৭ মে ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

চাকরি ছেড়ে জয়ে বাধা কুড়মি ভোট

ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের ৫ নম্বর আসনের তৃণমূল প্রার্থী সুমনের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন নির্দল প্রার্থী ভবেশচন্দ্র মাহাতো।

জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী সুমন সাহু। ফাইল চিত্র

জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী সুমন সাহু। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াগ্রাম শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৩ ০৭:৫৩
Share: Save:

জেলা পরিষদের আসনে ভোটে লড়ার জন্য ছেড়েছেন স্কুলশিক্ষা দফতরের চুক্তি ভিত্তিক চাকরি। জিততে না পারলে একুল-ওকুল দু’কুল ভরাডুবির আশঙ্কা! এই আবহে বছর বত্রিশের সুমন সাহুর চিন্তা বাড়িয়েছে কুড়মি ভোট।

ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের ৫ নম্বর আসনের তৃণমূল প্রার্থী সুমনের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন নির্দল প্রার্থী ভবেশচন্দ্র মাহাতো। নয়াগ্রাম ব্লকের বড়খাঁকড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী তৃণমূল প্রধান ভবেশ ওই আসনে কুড়মি সমাজের নির্দল প্রার্থী। ভবেশকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল। তবে শনিবার ভোটের দিন কুড়মি গ্রামগুলিতে ভবেশের দিকেই পাল্লাটা ভারী ছিল বলে খবর। যদিও সন্ধ্যার পর সুবর্ণরেখা তীরবর্তী এলাকাগুলিতে তৃণমূল দেদার ভোট করিয়েছে বলে অভিযোগ কুড়মিদের।

নয়াগ্রাম ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি সুমন ‘টিম অভিষেকে’র জেলা নেতাও বটে। করোনা কালে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তৈরি হয়েছিল ওই সংগঠন। সূত্রের খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে এবার সরাসরি হাইকমান্ড থেকেই সুমনকে টিকিট দেওয়া হয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, এরপরেই তাঁর যাত্রাভঙ্গ করতে আসরে নেমেছেন জেলা পরিষদের এক বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ। নয়াগ্রামের ভূমিপুত্র ওই বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ এবার দলের টিকিট পাননি। সুমনের সঙ্গে ওই বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষের সম্পর্কও ভাল নয়। নয়াগ্রামের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মুর সঙ্গেও ওই বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষের কার্যত মুখ দেখাদেখি বন্ধ। দলের অন্তর্ঘাতের আশঙ্কায় ভোটের কিছুদিন আগেই ওই বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষের পাঁচ নিরাপত্তা রক্ষীও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

জেলা সভাপতি দুলালের সঙ্গে সুমনের অবশ্য সুসম্পর্ক। তবে তা সত্ত্বেও কুড়মি ভাবাবেগের মোকাবিলা করার মত পরিস্থিতি ভোটের বিকেল পর্যন্ত দেখা যায়নি। নয়াগ্রাম ব্লকের সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে জেলা পরিষদের ৫ নম্বর আসন। ওই নির্বাচনী ক্ষেত্রের ৬৮টি বুথের মধ্যে ৩৩টি বুথ কুড়মি অধ্যুষিত। সেই বুথগুলিতে কুড়মি সমাজের দাপট দেখা গিয়েছিল। তবে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার বুথগুলি কার্যত তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কুড়মিদের অভিযোগ, নিমাইনগর, কুড়চিবনি ও নিচু কমলাপুর বুথগুলিতে বিকেলের পর থেকে রাত পর্যন্ত ছাপ্পা দিয়েছে তৃণমূল। অনেকক্ষেত্রে টাকা দিয়ে ভোট কিনেছে। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, কুড়মিরা গ্রামে গ্রামে লোকজনকে ধর্মের ভাবাবেগ দিয়ে ভোট আদায়ের চেষ্টা করেছে।

ওই আসনে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি ও আরও এক নির্দল প্রার্থী রয়েছেন। তবে লড়াই মূলত হয়েছে তৃণমূল ও কুড়মি সমর্থিত নির্দল প্রার্থীর মধ্যেই। জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলছেন, ‘‘রাজ্য সরকারের প্রকল্প ও পঞ্চায়েতের পরিষেবা প্রাপ্তির নিরিখে সুমনই জয়ী হবেন।’’ বেলিয়াবেড়া ব্লকের তপসিয়া চক্রের সদ্য প্রাক্তন এডুকেশন সুপারভাইজ়ার তৃণমূল প্রার্থী সুমন নিজে বলছেন, ‘‘অন্তর্ঘাত হয়েছে। তবুও মানুষের সমর্থনেই জিতব।’’

আদিবাসী কুড়মি সমাজের রাজ্য নেতা মনোরঞ্জন মাহাতোর কথায়, ‘‘কুড়মিদের সিংহভাগ ভোটভবেশই পাবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Election 2023 TMC nayagram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE