জল আনা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র
গ্রীষ্মের শুরুতেই স্কুলের টিউবওয়েল থেকে জল পড়া বন্ধ হয়ে যায়। তাই প্রতি বছর পানীয় জল আনতে ভ্যান নিয়ে দূরে ছুটতে হয় শিক্ষকদের। আর জলের ডেকচি ভ্যান ঠেলে স্কুলে আসে পড়ুয়ারা। মিড ডে মিলের পরিষেবা চালিয়ে যেতে গ্রীষ্মের কয়েকটা মাস পঠন-পাঠন কার্যত শিকেয় তুলে এভাইবেই জল বইতে ব্যস্ত থাকেন পাঁশকুড়ার গোপীমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-পড়ুয়ারা। অভিযোগ, বহু আর্জিতেও মেলেনি সাব মার্সিবল পাম্প।
১৯০১ সালে স্থাপিত হয় পাঁশকুড়া উত্তর চক্রের অন্তর্গত কেশাপাট এলাকার গোপীনহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা ১১৯। ছ’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। শতাব্দী প্রাচীন এই স্কুলে কোনও সাব মার্সিবল পাম্প নেই। পানীয় জলের উৎস বলতে একটি একটি টিউবওয়েল। সজলধারা প্রকল্পে একটি পানীয় জলের সংযোগ থাকলেও, তা থেকে পর্যাপ্ত জল মেলে না বলে অভিযোগ। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর গ্রীষ্মের শুরুতে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নেমে গেলে টিউবওয়েল থেকে জল পড়া বন্ধ হয়ে যায়। বর্ষাকালে এলে পরিস্থিতি স্বাভবিক হয়।
এ বছরও একই ছবি। চলতি মাসের গোড়াতেই স্কুলের টিউবওয়েলটি অকেজো হয়ে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মিড ডে মিলের রান্না করতে পানীয় জল আনতে হচ্ছে শিক্ষকদের। জল আনার জন্য তাঁরা একটি ভ্যান জোগাড় করেছেন। সেই ভ্যানে অ্যালুমিনিয়ামের ডেকচি নিয়ে স্কুল থেকে কিছুটা দূরে জল আনতে যান। জল ভরা ডেকচি-সহ ভ্যান ঠেলার জন্য যেতে হয় পড়ুয়াদের। স্কুল চলাকালীন দু’বার জল আনতে হয়। সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। সেই জল দিয়ে মিড ডে মিল রান্না, বাসনপত্র ধোওয়ার কাজ চলে। স্কুলে জলের হাহাকার দেখে অধিকাংশ অভিভাবক পড়ুয়াদের জল ভর্তি বোতল সাথে দিয়ে পাঠান। বিগত কয়েক বছর ধরে গ্রীষ্মের সময় গোপীমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই অচলাবস্থা চলছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত, পাঁশকুড়ার বিডিওকে একাধিকবার লিখিত আবেদন জানানো হলেও সাব মার্সিবল পাম্প মেলেনি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ভারতী মণ্ডল মাজী বলেন, ‘‘প্রত্যেক বছর গ্রীষ্মের শুরুতে স্কুলের টিউবওয়েল অকেজো হয়ে পড়ে। পানীয় জলের আর কোনও উৎস নেই। স্কুলের পাশের এক ব্যক্তি আগে তাঁর ব্যক্তিগত সাব মার্সিবল পাম্প থেকে জল দিতেন। তিনিও আর দিচ্ছেন না। স্কুলে থেকে কিছুটা দূরে আমাদের এক শিক্ষকের বাড়ি থেকে ভ্যানে করে ডেকচি ভরে জল আনতে হয়। মিড ডে মিল তো আর বন্ধ রাখতে পারব না। দূর থেকে জল আনতে গিয়ে পঠন পাঠন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিডিওকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। এখনও কোন সুরাহা হয়নি।’’ এ ব্যাপারে পাঁশকুড়া উত্তর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কাঞ্চন পাল বলেন, ‘‘বিডিওর সঙ্গে কথা বলে ওই স্কুলে দ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থাকরা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy