Advertisement
E-Paper

জাঁকিয়ে শীত, বালাপোশ তৈরিতে ব্যস্ত গোপালপুর 

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দর্জি পাড়ায় শতিনেক মানুষের বাস। শীতের সময়ে তাঁদের অনেকেই বালাপোশ তৈরি করেন। আর এখানের তৈরি বালাপোশের চাহিদাও রয়েছে বাজারে। তাই শীত পড়তেই কর্ম ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এখানের বাসিন্দার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৪
বালাপোশ তৈরিতে ব্যস্ত গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র।

বালাপোশ তৈরিতে ব্যস্ত গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র।

কেউ এক দশক ধরে কাজ করছেন। আবার কেউ জীবন যুদ্ধের গোধুলি লগ্নে বসেও কাজে ব্যস্ত। কারণ, রামকৃষ্ণ, শ্যামসুন্দর, সুজয়দের কাছে এটাই কাজের মরসুম। আর সঙ্গে কাঁধ মিলিয়েছেন তাঁদের স্ত্রীয়েরাও। সব মিলিয়ে ব্যস্ততা তুঙ্গে নন্দীগ্রামের গোপালপুরের ‘দর্জি পাড়া’য়।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দর্জি পাড়ায় শতিনেক মানুষের বাস। শীতের সময়ে তাঁদের অনেকেই বালাপোশ তৈরি করেন। আর এখানের তৈরি বালাপোশের চাহিদাও রয়েছে বাজারে। তাই শীত পড়তেই কর্ম ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এখানের বাসিন্দার। পঁয়ত্রিশের শ্যামাপদ দেবনাথ ওই পেশার সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেন, ‘‘সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজে বসে যেতে হয়। ২০ বছর বয়সে পড়া ছেড়ে বালাপোশ তৈরির করছি। বাবা-মার হাত ধরে এই পেশায় এসেছি। এখন এর মাধ্যমেই পরিবার চলে।’’ বর্নালী দেবনাথ নামে এক মহিলার কথায়, ‘‘শ্বশুর বাড়িতে এসে কাজ শিখেছিলাম। এখন সংসারের কাজ সেরে স্বামীর সঙ্গে বসে বালাপোশ বানাতে হাত লাগায়।’’

গোপালপুরের দর্জি পাড়ার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, হাওড়ার বাঁধা ঘাট থেকে রঙিন তুলো কিনে আনা হয়। কিন্তু তুলো দিয়ে বানানো লেপের প্রতি সাধারণের ঝোঁক খানিকটা কম। তার বদলে বালাপোশ বেশি জনপ্রিয়। শ্যামাপদ, বর্ণালীরা জানাচ্ছেন, বালাপোশ বানানোর জন্য বিভিন্ন এলাকার গৃহস্থের বাড়ি থেকে ছেঁড়া শাড়ি নিয়ে আসেন তাঁরা। এছাড়া, কম দামে শাড়িও কিনে আনা হয়। সুজয় দেবনাথ নামে এক যুবক বলেন, ‘‘কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই দিনরাত করে কাজ চলেছে। পরে পাড়ার ছেলেরা সাইকেল বা মোটরবাইক চেপে বালাপোশ ফেরি করি।’’

দর্জিরা জানাচ্ছেন, এক-একজনের পক্ষে রোজ সর্বোচ চারটি বালাপোশ বানানো সম্ভব। প্রতিটি বালাপোশ বানাতে দেড়শো-দুশো টাকা খরচ হয়। কিন্তু সেগুলি বিক্রি করে লাভের অঙ্ক তেমন থাকে না। চার দশক ধরে এই পেশার কাজ করে আসা প্রবীন রামকৃষ্ণ দেবনাথের কথায়, ‘‘কম বয়স্কেরা কায়িক শ্রম করে উপার্জন করতে পারেন। কিন্তু যাঁরা বয়সের ভারে ন্যুব্জ, তাঁরা এই কয়েক মাস বালাপোশ সেলাই করে সারা বছরের উপার্জন করার চেষ্টা করেন।’’

আর্থিক লাভ কম ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয় তাঁদের চিন্তা বাড়াচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বালাপোশ প্রস্তুতকারীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, অগ্রিম সুতো এবং কাপড়ে কেনার জন্য স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের সুদে টাকা ঋণ নিতে হয়। সেই ঋণ মেটাতেই তাঁদের লভ্যাংশ কমে যায়। প্রশাসন পাশে থাকলে তাঁদের কিছুটা সুবিধা হয় বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।

এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বিডিও সুরজিৎ রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের খোঁজ নিয়ে দেখতে বলছি। পরবর্তী ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা হবে।’’

Quilt Maker Quilt winter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy