সবেধন: একজন অস্থায়ী কর্মী দিয়েই চলছে বহির্বিভাগে রোগীদের টিকিট কাটার কাউন্টার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির কথা বলছে রাজ্য সরকার। কিন্তু পরিষেবা থেকে পরিচ্ছন্নতা, সবেতেই পিছিয়ে পড়ছে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল। বাড়ছে ক্ষোভ।
মূলত কর্মী সঙ্কটেই হাসপাতালের এই দশা বলে কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। ওয়ার্ড মাস্টার থেকে সাফাইকর্মী, সব স্তরেই রয়েছে শূন্যপদ। ফলে, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, ফাঁকা কাউন্টার, রাতের অ্যাম্বুল্যান্স বন্ধ-সহ নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে রোজই। চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের আরও সহনশীল হওয়া বার্তা দিচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাড়তি কাজের চাপে কর্মীরাও অসন্তুষ্ট। তবে কর্মী সঙ্কট কবে কাটবে, তার দিশা দেখাতে পারছেন না স্বাস্থ্য কর্তারা।
হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য টিকিট কাটা, ওষুধের টোকেন দেওয়ার জন্য যে তিনটি কাউন্টার রয়েছে, সেখানে কোনও স্থায়ী কর্মী নেই। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধীনে রোগী সহায়তা কেন্দ্রের অস্থায়ী কর্মীদের একজনকে দিয়েই চলে তিনটি কাউন্টারের কাজ। ফলে, এক সঙ্গে দু’জন রোগী এলেই বিপাকে পড়েন ওই কর্মী। অস্থায়ী কর্মীদের দিয়েই চলছে ওয়ার্ড মাস্টার অফিসের কাজও। কাউন্টারে থাকা এক অস্থায়ী কর্মী বলছিলেন, “এ সব নিয়ে মুখ খুলতে ভয় হয়। কর্মীর অভাব দেখিয়ে স্থায়ী কর্মীরা দায় ঝাড়ছে। আর আমাদের উপর চাপ বাড়ছে।” এই হাসপাতালে ৩২জন সাফাইকর্মীর পদ। অথচ মাত্র ১৬জনকে দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। ফলে, হাসপাতাল চত্বর জুড়ে অপরিচ্ছন্নতার ছবি।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সঙ্কটও ভোগাচ্ছে হাসপাতালকে। ৯৯জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর পদে রয়েছেন মাত্র ৩১জন। আর ৪জন ওয়ার্ড মাস্টারের পদে একজনও নেই। সব দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে অবসরপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টার সঞ্জীবকুমার চক্রবর্তীকে। তিনি বলেন, “আমার একার পক্ষে এত কাজ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিন্তু যে ভাবে হোক করতে হচ্ছে।” চালকের অভাবে রাতে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মী ফেডারেশনের হাসপাতাল কমিটির উপদেষ্টা দিলীপ সরখেল বলেন, “আমরা বহু দিন থেকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের চালক-সহ বিভিন্ন ফাঁকা পদে কর্মী নিয়োগে জন্য বলে আসছি। সত্যি বলতে হাসপাতালের মানোন্নয়নে কর্মীর খুব প্রয়োজন।”
কর্মী সঙ্কটের কথা স্বীকার করছেন হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমাদের সত্যি এত কর্মী সঙ্কট তার মধ্যে যে কীভাবে হাসপাতাল চালাচ্ছি বলে বোঝাতে পারব না। ঊর্দ্ধতন মহলে জানিয়েছি। দেখা যাক কী হয়।” এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের সভাপতি নির্মল ঘোষের বক্তব্য, “কর্মী চাইলেই তো পাওয়া যাবে না। সময় লাগবে। তবে খুব শীঘ্র অস্থায়ী কিছু কর্মী নিয়োগ হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy