Advertisement
১৮ মে ২০২৪

পোর্টালে হদিস, বাড়ি ফিরল তিন কিশোর

একজনের বাড়ি বিহার, একজনের ওড়িশায়, আর একজন হুগলির বাসিন্দা। তিন কিশোরই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। শেষমেশ অবশ্য তিনজনই বাড়ি ফিরেছে। সৌজন্যে ‘মিসিং ট্র্যাক চাইল্ড পোর্টাল’। পোর্টালে নিখোঁজ কিশোরদের ছবি মিলিয়ে এই তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে।

উদ্ধার হওয়া দুই নাবালক।—নিজস্ব চিত্র।

উদ্ধার হওয়া দুই নাবালক।—নিজস্ব চিত্র।

সৌমেশ্বর মণ্ডল
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:২৩
Share: Save:

একজনের বাড়ি বিহার, একজনের ওড়িশায়, আর একজন হুগলির বাসিন্দা। তিন কিশোরই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। শেষমেশ অবশ্য তিনজনই বাড়ি ফিরেছে। সৌজন্যে ‘মিসিং ট্র্যাক চাইল্ড পোর্টাল’। মেদিনীপুর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্য মৌ রায় বলেন, ‘‘পোর্টালে নিখোঁজ কিশোরদের ছবি মিলিয়ে এই তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারপর বাড়ির লোকেদের ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের সঙ্গে ওই তিন কিশোরকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’’

কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস্‌ ব্যুরো’ নামে একটি এজেন্সি এই পোর্টাল পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। দেশের যে কোনও প্রান্তের থানায় শিশু-কিশোর নিখোঁজের ডায়েরি হলে পুলিশের তরফেই ছবি-সহ প্রয়োজনীয় তথ্য এই পোর্টালে আপলোড করে দেওয়া হয়। সেই তথ্য যাচাই করেই হুগলির সুজন সিংহ, বিহারের মহম্মদ তাসিফ এবং ওড়িশার রাজকুমার বেহেরাকে বাড়িতে ফেরানো সম্ভব হয়েছে।

গত ৫ ডিসেম্বর হুগলির রিষড়া থানার বাগখাল গ্রামের বাসিন্দা জিতেন্দ্রনাথ সিংহের বছর বারোর ছেলে সুজন খেলতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। সুজন মূক ও বধির। ৬ ডিসেম্বর রিষড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন পরিজনেরা। মেদিনীপুর স্টেশনে সুজনকে দেখে সন্দেহ হয়েছিল আরপিএফের। তাকে মেদিনীপুর চাইল্ড ওয়েলফেয়ারে পাঠানো হয়। এরপর সুজনের ঠাঁই হয় ডেবরার চককুমারের একটি হোমে। পোর্টালের সাহায্যে শনাক্ত করে মঙ্গলবার সুজনকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ছোট ছেলেকে ফিরে পেয়ে জিতেন্দ্রনাথবাবু বলছিলেন, ‘‘ছেলেটার মাথার গোলমাল আছে। আগেও দু’বার বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। তবে এত দূরে আসেনি। সুজনের মুখটা থেকে ধড়ে যেন প্রাণ এল।’’

বিহারের মজফ্‌ফরপুরের বাসিন্দা মহম্মদ মুস্তাকিনের বছর দশেকের ছেলে মহম্মদ তাসিফ আবার হারিয়ে গিয়েছিল কাকার বাড়িতে এসে। তাসিফের কাকা মহম্মদ আবির কলকাতায় কাজ করেন। থাকেন হাওড়ার টিকিয়াপাড়ায়। সেখানেই বেড়াতে এসেছিল তাসিফ। তারপর খাবার কিনতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলে এই কিশোর। খড়গপুর স্টেশন থেকে তাকে উদ্ধার করে রেল পুলিশ। তারপর চাইল্ড লাইন থেকে মেদিনীপুর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার হয়ে তাসিফেরও ঠাঁই হয় ডেবরার ওই হোমে। পোর্টালের মাধ্যমে এ দিন তাসিফকেও পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাসিফের বাবা মুস্তাকিম বলছিলেন, ‘‘আমি দিল্লিতে রাজমিস্ত্রির কাজ করি। ছেলেকে ফেরত পাব ভাবিনি।’’

একই ভাবে সোমবার ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা বারো বছরের রাজকুমার বেহেরাকে পরিজনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুর চাইল্ড ওয়েলফেয়ারের সদস্য মহসীন খান বলছিলেন, ‘‘নিখোঁজ শিশু-কিশোরদের বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই পোর্টাল কাজে আসছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE