Advertisement
E-Paper

ক্ষোভ গড়াচ্ছে গোঁজে, আশঙ্কায় তৃণমূল

দলের ভিতর ক্ষোভ ছিলই। সে ক্ষোভ রাস্তায় এসে পড়েছিল প্রার্থী ঘোষণার পর। তা-ই এ বার গড়াচ্ছে গোঁজ প্রার্থীর লাড়াইয়ে। গোঁজ নিজে না জিতলেও ঘোষিত প্রার্থীকে বেগ দিয়ে মেলে সান্ত্বনা।

সুমন ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৬ ০০:০০

দলের ভিতর ক্ষোভ ছিলই। সে ক্ষোভ রাস্তায় এসে পড়েছিল প্রার্থী ঘোষণার পর। তা-ই এ বার গড়াচ্ছে গোঁজ প্রার্থীর লাড়াইয়ে। গোঁজ নিজে না জিতলেও ঘোষিত প্রার্থীকে বেগ দিয়ে মেলে সান্ত্বনা।

এ বার শাসক দল তৃণমূল প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই ক্ষোভের আগুন জেলা জুড়ে। অভিযোগ, এলাকায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা থাকা সত্ত্বেও প্রার্থী হিসাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘বহিরাগত’দের। যে ক্ষোভ থেকে কোথাও দল ছাড়ার কথা ভাবছেন নেতা-কর্মীরা, কোথাও প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই বিক্ষোভ হচ্ছে। তারই সঙ্গে শুরু হয়েছে গোঁজ প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনাও। তৃণমূল নেতৃত্বেই অনেকগুলি আসনেই গোঁজ প্রার্থী দাঁড়ানোর
আশঙ্কা করছেন।

প্রার্থী পছন্দ না হলে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধদের প্রার্থী হয়ে দাঁড়ানোর রেওয়াজটা তৃণমূলে বহু পুরনো। রাজ্যের ক্ষমতায় আসার আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। এমনকী দলের বর্তমান জেলা সভাপতি দীনেন রায়ও এক সময় ধামসা চিহ্ন নিয়ে দলের বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন। ২০০৬ সালে মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে যখন রমাপ্রসাদ তেওয়ারিকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল, তখন দীনেনবাবুও বিক্ষুব্ধ নির্দল হিসাবে লড়েছিলেন। জয় অবশ্য পেয়েছিলেন সিপিআইয়ের সন্তোষ রাণাই (প্রাপ্ত ভোট ৮৭,৬২৯)। রমাপ্রসাদবাবু দ্বিতীয় হয়েছিলেন ৩১,০৫৫ ভোট পেয়ে। দীনেনবাবু পেয়েছিলেন চতুর্থ স্থান—১২,২৭৯ ভোট।

তারপরেও পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোড়া পাতা চিহ্নে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক প্রার্থী দিয়েছিলেন বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও মেদিনীপুর পুরসভায়। দলের এক নেতার কথায়, “নিজেকে প্রার্থী না করা হলেই বিক্ষুব্ধরা প্রার্থী হবেন, এটা তো দলের জেলা সভাপতিই শিখিয়েছিলেন। এখন তিনি নিজে ও অনুগামীদের বিভিন্ন বিধানসভায় প্রার্থী করেছেন। দলও বহিরাগতদের চাপিয়ে দিয়েছে। অনেক যোগ্য ব্যক্তি টিকিট পাননি। তাঁরা ছাড়বেন কেন?”

তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্য একটি সমস্যাও থাকছে। সরাসরি নেতারা বিক্ষুব্ধ হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে শাসক তৃণমূল। তাই সকলে প্রার্থী খুজছেন। প্রকাশ্যে তাঁর সমর্থনে নিজেরা ময়দানে না নামলেও তলে তলে তাঁকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রচারও চালাবেন। একদিকে সিপিএম-কংগ্রেস জোট হচ্ছে। তার মধ্যে নিজেদের দলের ভোট ভাগ হলে যে দলকে চুড়ান্ত বিপাকে পড়তে হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

কোথায় কোথায় এমন আশঙ্কা রয়েছে? তৃণমূল সূত্রেই পাওয়া গিয়েছে উত্তর, ‘কোথায় নেই?’

প্রায় সর্বত্র একই অবস্থা। প্রথমে ধরা যাক, পিংলা বিধানসভার কথা। যেখানে অজিত মাইতিকে প্রার্থী করা হবে দলনেত্রী আগেই ইঙ্গিতে জানিয়েছিলেন। এলাকায় মাটি কামড়ে পড়েছিলেন অজিতবাবু। প্রার্থী ঘোষণার পরেই দেখা যায়, পূর্ব মেদিনীপুরের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রকে প্রার্থী করা হয়েছে। তা জানার পরেই তাঁর অনুগামীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। কেশপুরেও ‘বহিরাগত’ শিউলি সাহা। সবং ও খড়্গপুর সদরে তো প্রকাশ্য বিক্ষোভ। এমনকি খড়্গপুর গ্রামীণেও জেলা সভাপতি দীনেন রায়কে ঘিরে বিক্ষোভ হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

একই অবস্থা ডেবরা, নারায়ণগড়, ঘাটাল, চন্দ্রকোনাতেও। এলাকার নেতাদের বক্তব্য, “এ ভাবেই যদি বহিরাগতদের চাপিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, তাহলে আগে থেকেই জানিয়ে দিলে হত। তাহলে তো দুঃখ পেতাম না। আমরা খাটব অন্যজন ক্ষীর খাবে, তা কী করে হবে!” তাই দলীয় প্রার্থীদের বেগ দিয়ে সান্ত্বনা খুঁজতে চাইছেন সকলে। সেটা শুধু দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে সাহায্য না করেই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে গোঁজ প্রার্থী দিয়েও। মনোনয়ন দেওয়া শুরু হলেই অবশ্য বোঝা যাবে, কোথায় কতজন বিক্ষুব্ধ প্রার্থী মনোনয়ন দিলেন।

election candidate agitation tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy