Advertisement
০৬ মে ২০২৪

বিজয় উৎসবেও কোন্দল

বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। সেই সাফল্য উদ্‌যাপনে প্রায় প্রতিদিনই মেদিনীপুরের কোনও না কোনও ওয়ার্ডে মিছিল হচ্ছে। রাতে থাকছে পাত পেড়ে খাওয়াদাওয়া। কিন্তু সেই বিজয় উৎসবেও কোন্দলের ছায়া। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে দলীয় কাউন্সিলরের অনুগামীদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে দলেরই ওয়ার্ড সভাপতির অনুগামীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৬ ০২:২১
Share: Save:

বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। সেই সাফল্য উদ্‌যাপনে প্রায় প্রতিদিনই মেদিনীপুরের কোনও না কোনও ওয়ার্ডে মিছিল হচ্ছে। রাতে থাকছে পাত পেড়ে খাওয়াদাওয়া। কিন্তু সেই বিজয় উৎসবেও কোন্দলের ছায়া।

বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে দলীয় কাউন্সিলরের অনুগামীদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে দলেরই ওয়ার্ড সভাপতির অনুগামীদের। বিজয় উৎসবে সেই বিরোধের ছায়া এসে পড়ছে। শনিবারই যেমন শহরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে মিছিল করে তৃণমূল। আয়োজক ছিলেন কাউন্সিলর রাধারানি বেরার অনুগামীরা। দিন কয়েক আগে এখানেই দলের এক গোষ্ঠী মিছিল করেছে। সেই মিছিলে কাউন্সিলর রাধারানিদেবীকে দেখা না গেলেও ছিলেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌ রায়। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এতে বিরোধ দেখছেন না। মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের জেলা চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি বলেন, “দলের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। হয়তো কোথাও কোথাও ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে। তবে তা মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

কেন মিছিল-পাল্টা মিছিল?

২২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রাধারানিদেবীর জবাব, “আমার ওয়ার্ডে ক’দিন আগে একটা মিছিল হয়েছে বলে শুনেছি। তবে আমাকে জানানো হয়নি।’’ দলীয় সূত্রে খবর, আগের মিছিলটি করেছিল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী। ফলে, তাঁকে ডাকার প্রশ্নই নেই।

পরিসংখ্যান বলছে, জয় এলেও মেদিনীপুর শহরে তৃণমূলের ভোট-ব্যাঙ্কে এ বার বড়সড় ধস নেমেছে। ২০১১ সালে শাসক দল যে ভোট পেয়েছিল, এ বার তার থেকে প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট কম পেয়েছে তারা। ২০১১-তে মেদিনীপুর পুর-এলাকায় তৃণমূল প্রায় ৩২ হাজার ভোটের লিড পেয়েছিল। গ্রামাঞ্চলে অবশ্য দল প্রায় ৪ হাজার ভোটে পিছিয়েছিল। শেষমেশ ২৮ হাজার ভোটে তৃণমূল মেদিনীপুর কেন্দ্রে জেতে। আর এ বার শহর থেকে প্রায় ১৪ হাজার ভোটের লিড পেয়েছে তৃণমূল। গ্রামাঞ্চল থেকে লিড এসেছে প্রায় ১৮ হাজারের। মেদিনীপুরের ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪টিতে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। কয়েকটি ওয়ার্ডে খুব কম ব্যবধানে লিড পেয়েছে তারা। যেমন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে মাত্র ৩ ভোটে এগিয়ে তারা। বিধাননগর, শরৎপল্লির মতো এলাকাতেও তৃণমূল প্রত্যাশিত ফল করতে পারেনি।

শাসক-শিবিরের একাংশের দাবি, শহরের কয়েকটি এলাকায় অন্তর্ঘাত হয়েছে। তবে তৃণমূলেরই অন্য একটি অংশের মত, শহর যে মুখ ফেরাচ্ছে সেই ইঙ্গিত ২০১৩ সালের পুর-নির্বাচনেই মিলেছিল। সেই ভোটে মেদিনীপুরের ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টিতে জেতে তৃণমূল। পুরবোর্ড ধরে রাখতে ন্যূনতম ১৩টি আসনই প্রয়োজন ছিল। পরিসংখ্যান বলছে, এক দিকে যেখানে শহরে দলের জনসমর্থন কমছে, সেখানে গোষ্ঠীকোন্দল বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন জেলা তৃণমূলের একাংশও। মৃগেনবাবু বলেন, “ভোটের ফলের বুথ ভিত্তিক পর্যালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কী হয়েছে, কেন হয়েছে, সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” দলের মূলস্রোতের বাইরে গিয়ে কাজ করছেন, এমন বেশ কয়েকজন নেতাকে ইতিমধ্যে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বলেও তৃণমূলের এক সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Conflict Victory rally
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE