Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
TMC

নেতাদের তলব, শেষবেলায় মাঠে দলই

দলীয় সূত্রে খবর, প্রতিটি বিধানসভা এলাকার বাছাই করা নেতাদের মেদিনীপুরে তলব করে কথা বলেছেন তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:০৯
Share: Save:

তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয়ে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) সংস্থার লোকেরা প্রত্যেকটি বিধানসভা এলাকায় গিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার তৃণমূল নেতাদের পাশাপাশি কথা বলেছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। এ বার সমান্তরাল এক সমীক্ষা করল তৃণমূলও।

দলীয় সূত্রে খবর, প্রতিটি বিধানসভা এলাকার বাছাই করা নেতাদের মেদিনীপুরে তলব করে কথা বলেছেন তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার এবং বুধবার, দু’দিন ধরে মেদিনীপুরের এক গেস্ট হাউসে এই পর্ব চলেছে। প্রত্যেক নেতার সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলা হয়েছে। মুখ দেখে তাঁদের মন পড়ারও চেষ্টা হয়েছে। নেতারা যে মতামত দিয়েছেন, সে সব নথিভুক্ত করা হয়েছে।

এই দলটি টিম পিকে-র, না অন্য কারও, সে নিয়ে নেতাদের গোড়ায় একাংশের সংশয় ছিল। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘‘কারও মধ্যে কোনও সংশয় থাকার কথা নয়। ওঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকে এসেছিলেন। অর্থাৎ, দলেরই। পিকে-র টিম তো তার মতো করে সমীক্ষা করছে।’’

কিন্তু বিধানসভা এলাকার বাছাই করা নেতাদের মেদিনীপুরে তলব করে একেবারে সাক্ষাৎকারের ধাঁচে কথা বলা কেন?

তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির জবাব, ‘‘এ সব দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’’ অজিতও জানা, টিমটি পিকে-র টিম নয়, দলেরই। তৃণমূলের এক নেতা জানাচ্ছেন, ‘‘টিমটি প্রত্যেকের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেছে। তাই সময় বেশি লেগেছে। আমি মঙ্গলবার ভোর চারটেয় গেস্ট হাউস থেকে বেরিয়েছি।’’ জানা যাচ্ছে, মূলত প্রত্যেক বিধানসভা এলাকার নির্দিষ্ট কয়েকজনকেই ডাকা হয়েছিল। যেমন বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, দলের ব্লক সভাপতি প্রমুখ। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রথম সারির এক বা একাধিক নেতাকেও ডাকা হয়েছিল। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, শুভেন্দু অধিকারীর মতো তৃণমূল ছেড়ে যাওয়া নেতারা প্রায়ই দাবি করছেন, তৃণমূল এখন কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। পিকে-র টিমের কাজকর্ম নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেও খানিক অসন্তোষ রয়েছে। দলের রাশ যে পুরোপুরি ‘টিম পিকে’-র হাতে যায়নি, সেই বার্তা দেওয়ারই চেষ্টা হয়েছে।

জানা যাচ্ছে, এক নেতার কাছে তাঁর এলাকার বিধায়কের সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। ওই নেতা না কি বলেছেন, ‘‘বিধায়ক বিধায়কের মতোই। সুতরাং তাঁর বিরুদ্ধে কিছু বলার নেই। সে তো গৃহবধূ। ঘরে গেলে আমাদের মুড়ি- টুড়ি খেতে দিত। চা করে দিত। যা হয় আর কী! হঠাৎ সে বিধানসভা কেন্দ্রের টিকিট পেয়ে গেল!’’

ওই নেতা না কি আরও জুড়েছেন, ‘‘বিধায়ক চেষ্টা করছে। প্রথমে তেমন কথা বলতে পারত না। পরে আস্তে আস্তে শিখেছে। বিধায়কের যা যোগ্যতা, তেমন সে কাজ করছে। যদি মনে করেন, যে কাজ হচ্ছে ঠিক আছে। তাহলে বিধায়ককেই ফের প্রার্থী করতে হবে। যদি আরও কাজ চান, তাহলে প্রার্থী বদলে অন্য কাউকে দিতে হবে!’’

আপনি না কি পরোক্ষে বিধায়কের বিরুদ্ধেই কথা বলেছেন? বৃহস্পতিবার ওই নেতা বলেন, ‘‘আমি কারও পক্ষে- বিপক্ষে বলিনি। যা সত্যি, তাই বলেছি।’’ প্রায় সব নেতার কাছেই জানতে চাওয়া হয়েছে, এলাকার পরিস্থিতি কি, বিধানসভা ভোটে কেমন ফল হতে পারে, কাকে প্রার্থী করলে ফল ভাল হবে প্রভৃতি। বিরোধী দলের কাজকর্ম সম্পর্কেও কারও কারও কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। বিজেপির প্রতি কারও ‘নরম’ মনোভাব রয়েছে কি না, কৌশলে না কি তাও বুঝে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। জেলা তৃণমূলের এক নেতার ধারণা, ‘‘পিকে-র টিমের সমীক্ষা রিপোর্টের সঙ্গে এই সমীক্ষা রিপোর্ট মিলিয়ে দেখা হতে পারে। পরে সবদিক পর্যালোচনা করেই দলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE