গোদাপিয়াশালের জঙ্গলে হাতি। নিজস্ব চিত্র
হেলেদুলে এগোচ্ছে গোটা দলটা। সদস্য প্রায় ২৫। সঙ্গে বাচ্চাও রয়েছে।
শীতের রাত। ঘড়িতে প্রায় সওয়া ন’টা। শাবক-সহ হাতির বড় এই দলটাকে নিশ্চিন্তে রেললাইন পেরনোর ব্যবস্থা করে দিতে থমকে গেল ট্রেন। শুধু একটি ট্রেনের দাঁড়িয়ে পড়া নয়, বুধবার রাতে শালবনির গোদাপিয়াশালের কাছে সব ট্রেনের গতিই কম রাখা হয়েছিল। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা মানছেন, ‘‘ওখানে হাতির পাল ছিল। তাই ট্রেনগুলোর গতিবেগ কম রাখার কথা রেলকে জানানো হয়েছিল। রেল সেই মতো পদক্ষেপ করেছে।’’ মেদিনীপুরের এক বনকর্তাও মানছেন, ‘‘রেল ও বন দফতরের সমন্বয়কারী দল রয়েছে। সেই দল গোটা বিষয়টিতে নজর রেখেছিল।’’
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, হাতির পাল একেবারে রেললাইনের ধারে চলে এসেছিল। পরিস্থিতিতে দেখে বুধবার রাতে শিরোমণি প্যাসেঞ্জারকে গোদাপিয়াশাল স্টেশনে মিনিট কুড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। ট্রেনটি হাওড়া থেকে ছেড়ে খড়্গপুর, মেদিনীপুর হয়ে এখানে আসে। তখন সওয়া ন’টা। গন্তব্য ছিল আদ্রা। হাতির পাল রেললাইন পেরোনোর পরে ফের ট্রেন রওনা হয়। ট্রেন থমকানোর কথা অবশ্য সরাসরি মানছে না রেল। তবে রেল স্বীকার করছে যে এই রুটে সমস্ত ট্রেনের গতিবেগ কম রাখা হয়েছিল। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক বিধান চন্দ্র বলেন, ‘‘শালবনির ওখানে ট্রেনের গতিবেগ ঘন্টায় ৩০ কিলোমিটার রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এই গতিবেগেই ট্রেন চলেছে।’’ তবে রাতে ওই শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়নি।
শালবনির উপর দিয়েই গিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর-আদ্রা শাখার রেলপথ। বন দফতর সূত্রে খবর, বুধবার গোদাপিয়াশালের কাছে ২০-২৫টি হাতি ছিল। এত হাতি থাকায় দিনভর উদ্বেগে ছিলেন বনকর্মীরা। রেলকর্মীরাও। বিকেলের পরে উদ্বেগ আরও বাড়ে। আটটা নাগাদ বন দফতরের কাছে খবর আসে, হাতির পাল রেললাইনের অদূরে চলে এসেছে। বন দফতর এই খবর পৌঁছে দেয় রেলের কাছে। শালবনির এক বনকর্মীর কথায়, ‘‘হাতির পাল সামলাতে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে। আচমকাই জঙ্গল ছেড়ে রেললাইনের ধারে হাতির পালটি চলে আসে। পরে অবশ্য দলটি মিরগার দিকে চলে যায়।’’ হাতির পাল রেললাইন পেরনোর পরে হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন বনকর্মীরা, রেলকর্মীরাও। মেদিনীপুরের এক বনকর্তা বলেন, ‘‘হাতির পালকে রেললাইন পেরোতেই হত। না হলে ওরা মিরগার দিকে আসতে পারত না। ওদের স্বাভাবিক পথে বাধা দিতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই মতোই ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
বৃহস্পতিবার বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বড় দলটি শুকনাখালিতে চলে গিয়েছে। আর বীরভানপুরে ২টি হাতি রয়েছে, শুকনাখালিতে ৪৫-৫০টি, ভুরুচাটিতে ৩টি, উখলায় একটি হাতি রয়েছে। গত মঙ্গলবার হাতির হানায় শালবনির জাড়ার এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ওড়িশা হয়ে ফের পশ্চিম মেদিনীপুরে ঢুকে পড়েছে দলমার পাল। ফেরার কথা ঝাড়খণ্ডে। তবে সহজে সেইমুখো হচ্ছে না পালটি। হাতি নিয়ে তাই নাজেহাল অবস্থা বনকর্মীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy