Advertisement
০২ মে ২০২৪

টানা বৃষ্টিতে ধস, বিছিন্ন সড়কপথ

স্থানীয় সূত্রের খবর, মেদিনীপুর গ্রামীণের মণিদহের চাতরকলার এলাকায় মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম (ভায়া ধেড়ুয়া) রাজ্য সড়কে একটি কালভার্ট রয়েছে। ভাঙাচোরা ওই কালভার্টটি সারানোর কাজ শুরু হয়েছে গত বছর।

বৃষ্টিতে ধসেছে বিকল্প রাস্তা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

বৃষ্টিতে ধসেছে বিকল্প রাস্তা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৪
Share: Save:

কালভার্টের সংস্কারের জন্য বন্ধ রয়েছে মূল রাস্তা। গাড়ি চলাচলের জন্য সেখানে তৈরি করা হয়েছিল বিকল্প একটি মোরামের রাস্তা। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সেই বিকল্প রাস্তাও গেল ধসে। ঝাড়গ্রাম থেকে ধেড়ুয়া হয়ে মেদিনীপুর আসার সংযোগকারী ওই রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় বুধবার দিনভর যান চলাচল ব্যাহত হল। নিত্যযাত্রীদের পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহও।

স্থানীয় সূত্রের খবর, মেদিনীপুর গ্রামীণের মণিদহের চাতরকলার এলাকায় মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম (ভায়া ধেড়ুয়া) রাজ্য সড়কে একটি কালভার্ট রয়েছে। ভাঙাচোরা ওই কালভার্টটি সারানোর কাজ শুরু হয়েছে গত বছর। গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য কালভার্টের পাশে মোরাম দিয়ে একটি বিকল্প রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়। তাতে ধসে যায় মোরামের রাস্তাটি।

বুধবার সকালে ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন কয়েকজন। তবে গাড়ি উল্টে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। তার পরেই ওই রাস্তায় বাস, লরির মতো বড় গাড়ির চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে যান চলাচল ব্যাহত হয়। সে কথা স্বীকার করে জেলা বাস অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, ‘‘দিনভর ওই রাস্তায় বাস চলাচল ব্যাহত হয়েছে।’’

কালভার্ট সংস্কারের কাজ এখনও বাকি। নিজস্ব চিত্র

উল্লেখ্য, ঝাড়গ্রাম আলাদা জেলা হিসাবে ঘোষিত হলেও বিভিন্ন প্রশাসনিক, চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে সেখানের বহু মানুষ প্রতিদিন মেদিনীপুরে আসেন। এ দিন তাঁদের একাংশ সমস্যায় পড়েন। অনেকে ঘুরপথে খড়্গপুরের চৌরঙ্গি দিয়ে মেদিনীপুরে পৌঁছেছেন। এ দিনই ঝাড়গ্রামে একটি সরকারি কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ওই কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ। উত্তরাকেও লোধাশুলি দিয়ে ঘুরপথে ঝাড়গ্রামে পৌঁছতে হয়েছে। জেলা সভাধিপতি বলেন, ‘‘মণিদহের ওই রাস্তায় ধস নেমেছিল। তাই ওই রাস্তা দিয়ে যাইনি।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম (ভায়া ধেড়ুয়া) রাজ্য সড়ক দিয়ে দিনে অন্তত ১২০টি বাস, কয়েকশো লরি চলাচল করে। এদের মধ্যে বালি বোঝাই লরিও রয়েছে। সেগুলির ভারে ওই কালভার্ট দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকছিল বলে দাবি। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতেও ওই মোরাম রাস্তা দিয়ে বহু বালি বোঝাই লরি গিয়েছে। বৃষ্টির জলে এমনিতেই মাটি নরম হয়ে গিয়েছিল। আর লরির ভারেই রাস্তাটি এ দিন ধসে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দা সনাতন মুর্মুর কথায়, ‘‘ধস নেমেছে দেখে আমরা এখান দিয়ে চালকদের গাড়ি নিয়ে যেতে বারণ করেছি। গাড়ি উল্টে বড়সড় বিপত্তি হতে পারত।’’ এ দিন সকালে এলাকায় যান স্থানীয় উপপ্রধান অঞ্জন বেরা। অঞ্জন বলেন, ‘‘চাতরকলায় খালের উপর থাকা কালভার্টটিতে সংস্কারের কাজ চলেছে। ওটার পাশে বিকল্প রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল। সেই রাস্তাই ধসে গিয়েছে।’’

অন্যদিকে, রাস্তা সারানোর কাজ এ দিনই শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। মেদিনীপুরের (সদর) বিডিও ফারহানাজ খানম বলেন, ‘‘ধসে যাওয়া রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।’’ প্রশাসন জানাচ্ছে, আজ, বৃহস্পতিবার থেকে ওই রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Landslide Rain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE