Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

এক রাতের টানা বৃষ্টিতে ডুবল জেলা

শুক্রবার রাতে কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে তমলুক পুরসভার ১, ৮, ৯, ১২, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড জলে ডুবে গিয়েছে। চক শ্রীকৃষ্ণপুর কুলবেড়িয়ার কাছে বিস্তীর্ণ এলাকা প্রায় এক ফুট জলের তলায়।

পাঁশকুড়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভেঙেছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

পাঁশকুড়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভেঙেছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ০০:০৯
Share: Save:

খাতায় কলমে বিদায় বেলা। এই অন্তিম লগ্নে এসে ঝোড়ো ইনিংস খেলল বর্ষা। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে কার্যত জলে ভাসল জেলা। সদর শহর তমলুক থেকে হলদিয়া, কাঁথি, পাঁশকুড়া— সব শহরেই কম বেশি জল জমে গিয়েছে।

শুক্রবার রাতে কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে তমলুক পুরসভার ১, ৮, ৯, ১২, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড জলে ডুবে গিয়েছে। চক শ্রীকৃষ্ণপুর কুলবেড়িয়ার কাছে বিস্তীর্ণ এলাকা প্রায় এক ফুট জলের তলায়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলাশাসকের নতুন ভবন যেখানে তৈরি হচ্ছে, ঠিক তার পাশে কোনও নিকাশি নর্দমা না থাকায় বর্ষার জল জমে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শিল্পা দাস বলেন, ‘‘শনিবার ভোর থেকে বাড়ি জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। ভিতরেও জল ঢুকেছে। স্থানীয় কাউন্সিলর-সহ পুর কর্তৃপক্ষের জন্য একাধিকবার সাহায্যের আবেদন জানিয়েও সাড়া মেলেনি।’’ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ভাগ্য ভাল এ দিন বৃষ্টি থেমেছে। না হলে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে হত।’’

এ সকাল ১০টা থেকে তমলুক থেকে নিমতৌড়ি যাওয়ার রাজ্য সড়ক অবরোধ করে স্থানীয়েরা। আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে অবরোধ। তমলুক থানার পুলিশ বাসিন্দাদের নিয়ে জেলা পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেয়। সেই মতো দু’টি ড্রেজার দিয়ে জল নিষ্কাশনের কাজ শুরু হয়। তারপর দুপুর নাগাদ অবরোধ তুলে নেন স্থানীয়েরা।

পুরবাসীর অভিযোগ, শহরের নিকাশি নালা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। মজে যাওয়া নালা দিয়ে বৃষ্টির জমা জল বের হতে পারছে না। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে ফোন করা হয়েছিল পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেনকে। তবে তিনি ফোন ধরেননি।

একই পরিস্থিতি হলদিয়াতেও। সেখানের টাউনশিপ এলাকার বেশ কিছু অংশ এবং দুর্গাচকে দুপুর পর্যন্ত জল জমে ছিল। তবে বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তিতে ছিল কাঁথি। এ দিন সকালে বৃষ্টি থামার পর অধিকাংশ এলাকা থেকে জল নালার মাধ্যমে ওড়িশা কোস্ট ক্যানেলের চলে গিয়েছে। কাঁথি মহকুমা সদর হাসপাতাল যাওয়ার রাস্তা অবশ্য বেলা পর্যন্ত ছিল প্লাবিত। এর ফলে হাসপাতালে যাতায়াতকারী রোগী এবং পুর এলাকার পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দারা সাময়িক দুর্ভোগে পড়েন। এ ব্যাপারে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘তেমন বৃষ্টি হয়নি। তাই শহরের কোথাও সে রকম অসুবিধে হয়নি।’’

পাঁশকুড়া শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন বাড়ির মধ্যে জল ঢুকেছে। ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় বৃষ্টিতে ভেঙেছে দু’টি মাটির বাড়ি। এই পরিস্থিতির জন্য পুরসভার বেহাল নিকাশিকেই দায়ী করছেন শহরবাসী। অন্যদিকে, কোলাঘাটের সিদ্ধা-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ধুলিয়াড়ায় বৃষ্টিতে উপড়ে পড়ে একটি বহু পুরনো গাছ। এলাকার কিছু জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটিও উপড়ে পড়ে বলে খবর। এর জেরে বিঘ্নিত হয়েছে বিদ্যুৎ পরিষেবা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Natural Calamities Rain Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE