প্রতীকী ছবি।
‘কাটমানি’ বিতর্ক এখনও মেটেনি। তারমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় স্বজনপোষণের আশঙ্কা প্রকাশ করে জেলাশাসককে চিঠি দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষ! সেই চিঠি ঘিরে শোরগোল পড়েছে জেলার প্রশাসনিক মহলে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে স্বজনপোষণের অভিযোগ নতুন নয়। সেই অভিযোগ সাধারণত আসে বিরোধীদের তরফ থেকে। কিন্তু খোদ শাসক দলের অন্দর থেকেই এমন আশঙ্কা প্রকাশ কেন? তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অজিত মাইতির জবাব, ‘‘কে কাকে কি চিঠি দিয়েছেন, আমি জানি না। না জেনে কোনও মন্তব্য করব না।’’
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, চলতি আর্থিক বছরে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় প্রায় ৩৭ হাজার বাড়ি তৈরি হবে। রাজ্য থেকেই জেলাকে এই লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জেলাও ব্লকগুলিকে বাড়ি তৈরির নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে। সেই মতো এখন পঞ্চায়েতস্তরে উপভোক্তা-রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে। তার মধ্যেই জেলাশাসক রশ্মি কমলের কাছে ওই চিঠি পাঠিয়েছেন জেলার বিদ্যুৎ ও ক্ষুদ্রশিল্পের কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি।
কেন এমন চিঠি? তাও আবার খোদ জেলাশাসককে শৈবালের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘চিঠির বিষয়টি জানলেন কি করে? আমি তো জেলাশাসককেই একটা চিঠি দিয়েছি। আর তো কাউকে দিইনি!’’ পরে শৈবালের দাবি, ‘‘তেমন কোনও আশঙ্কা প্রকাশ করিনি। প্রকৃত গরিব মানুষেরা যাতে আবাস প্রকল্পে বাড়ি পায় তা নিশ্চিত করার আর্জি জানিয়েই ওই চিঠি দিয়েছি।’’
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গতবার প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় প্রায় ৩০ হাজার বাড়ি বরাদ্দ হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য। এ বার বরাদ্দ- বাড়ি বেড়ে ৩৭ হাজার হয়েছে। অন্য বার অনেক আগেই ওই সরকারি প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা ও বরাদ্দ চলে আসত জেলায়। এ বার কয়েক মাস দেরিতে এই নির্দেশ এসেছে।
বিভিন্ন মহলের অনুমান, 'কাটমানি' বিতর্কের জন্যই এই বিলম্ব। বস্তুত, ‘কাটমানি’ নিয়ে গোলমালে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনার প্রকল্পের নামই সবচেয়ে বেশি উঠে এসেছে। অভিযোগ, বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে উপভোক্তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে শাসক দলের একাংশ জনপ্রতিনিধি। যদিও শাসক দল এই অভিযোগ মানেনি।
এই পরিস্থিতিতে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘শাসক দলের মধ্যে থেকেই সরকারি বাড়ি প্রকল্পে স্বজনপোষণের আশঙ্কা করা হচ্ছে! বুঝুন কি পরিস্থিতি! প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় দুর্নীতি হলে বিজেপি রুখে দাঁড়াবেই।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘আর্থ সামাজিক জাতি সমীক্ষা আগেই হয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধানদের বলেছি, পাকা বাড়ি আছে এমন কাউকে আর সরকারি প্রকল্পে পাকা বাড়ি দেওয়া যাবে না।’’
জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘ওই প্রকল্পে রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে। জিও ট্যাগিংয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউই দু’দফায় পাকা বাড়ি পাবেন না। কেউ আগে বাড়ি পেয়ে থাকলে জিও ট্যাগিং (তথ্য-সহ ছবি আপলোড করা) সময়ে বিষয়টি জানা যাবে। তখন তিনি বাদও পড়ে যাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy