Advertisement
১২ নভেম্বর ২০২৪
তারের জাল জুবিলি মার্কেটে

তিন তিন বার আগুন লাগার পরেও জতুগৃহ

পরপর তিন বার বিধ্বংসী আগুনে ক্ষতি হয়েছে বাজারের। তারপরেও হাল ফেরেনি ঝাড়গ্রাম শহরের জুবিলি মার্কেটের। সঙ্কীর্ণ, ঘিঞ্জি বাজারে ফের আগুন লাগলে দমকল ঢোকারও জায়গা নেই।

জুবিলি মার্কেটের হাল এমনই। নিজস্ব চিত্র

জুবিলি মার্কেটের হাল এমনই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

পরপর তিন বার বিধ্বংসী আগুনে ক্ষতি হয়েছে বাজারের। তারপরেও হাল ফেরেনি ঝাড়গ্রাম শহরের জুবিলি মার্কেটের। সঙ্কীর্ণ, ঘিঞ্জি বাজারে ফের আগুন লাগলে দমকল ঢোকারও জায়গা নেই।

১৯৩৫ সালে ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম জর্জের রাজত্বের ২৫ বছর পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে তত্কালীন মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সরকারি জমিতে জুবিলি মার্কেট তৈরি হয়। বাজারটির মালিকানা নিয়েও অস্পষ্টতা রয়েছে। বাজারটিতে দোকানের জন্য জমির লিজ দেয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। এ জন্য ব্যবসায়ীদের থেকে বার্ষিক রাজস্ব আদায় করে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। নিয়ম অনুযায়ী হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স আদায় করে পুরসভা। কিন্তু বাজারটির সংস্কার ও পুনর্গঠনের ব্যাপারে আজ পর্যন্ত কেউ উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ।

ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সাফাই, সাধারণত, বাজারের সংস্কার বা পুনর্গঠনের দায়িত্ব পুরসভার উপর বর্তায়। তাছাড়া জমির লিজের বন্দোবস্ত নিয়ে ব্যবসায়ীদের একাংশের সঙ্গে ভূমি সংস্কার দফতরের মামলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। যে কারণে বেশ কয়েক বছর ব্যবসায়ীদের একাংশের কাছ থেকে জমির লাইসেন্স বাবদ রাজস্ব আদায় করা যাচ্ছে না। ঝাড়গ্রাম পুর-কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, পুরসভার হাতে বাজারটির মালিকানা না-থাকায় সংস্কার ও পুনর্গঠনের কাজ করা সম্ভব হয় নি।

বাজারের ভিতরে সরকারি পাতকুয়ো বুজিয়েই দোকান তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। বাজারে রয়েছে জামা কাপড়, মনোহারি, বাসনকোসন, ফল, মাছ, সব্জি-সহ বিভিন্ন পট্টি। এ ছাড়াও রয়েছে একাধিক তেলঘানি ও গুদাম। ১৯৮৮ ও ১৯৮৯ সালে বিধ্বংসী আগুনে জুবিলি মার্কেটের বিস্তীর্ণ এলাকা পুড়ে খাক হয়ে যায়। ফের ২০০৫ সালে শট-সার্কিটের দরুণ কয়েকটি দোকান, একটি তেলঘানি ও একটি গুদাম ভস্মীভূত হয়ে যায়।

আগে দু’টি দোকানের মাঝে কিছুটা ফাঁকা জায়গা রাখা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু এখন দু’টি দোকান ঘরের মাঝেও চাপাচাপি করে ঘুপচি অনেক দোকানঘর তোলা হয়েছে। অনেক ব্যবসায়ী বেআইনি ভাবে দোতলা বা তিনতলা বানিয়ে নিয়েছেন। বাজারের ফল পট্টি, বাসন পট্টি, মনোহারি পট্টি ইত্যাদি অংশের মধ্যে যোগাযোগ কারী রাস্তাগুলিও বেদখল হয়ে গিয়েছে।

ঝাড়গ্রাম জেলা চেম্বার অফ কর্মাস-এর সভাপতি ভবতোষ মণ্ডল বলেন, “ঝাড়গ্রাম শহরে কেন্দ্রীয় ভাবে এই একটি বাজার রয়েছে। সুপ্রাচীন বাজারটির সুষ্ঠু সংস্কার ও পুনর্গঠনের জন্য প্রশাসনের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের ঐক্যমত হওয়াটা জরুরি। ঝাড়গ্রাম জেলাশহরে আরও একাধিক বাজার তৈরি করাও খুব প্রয়োজন।”

ঝাড়গ্রাম পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন শিউলি সিংহ বলেন, “বাজারটির নিয়ন্ত্রণ পুরসভার হাতে না থাকায় কাজ করার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী, বাজারে সাব মার্সিবল পাম্প বসিয়ে জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আনাজ পট্টির একাংশে নিকাশি
নালা হয়েছে।”

ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, “জুবিলি মার্কেটের উন্নয়নের ব্যাপারে সব দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE