জ্যোতবাণী গ্রামে পোস্ত চাষ। —নিজস্ব চিত্র।
আনন্দপুরের পর এ বার দাসপুর। ফের অভিযান চালিয়ে বেআইনি পোস্ত চাষ নষ্ট করা হল পশ্চিম মেদিনীপুরে।
সোমবার দাসপুর থানার জ্যোতবাণী গ্রামে আবগারি দফতর ও স্থানীয় পুলিশ যৌথ ভাবে অভিযান চালায়। বিঘা তিনেক জমির পোস্ত নষ্ট করা হয়। তবে আবগারি দফতরের লোকজন গ্রামে পৌঁছনোর আগেই খবর পেয়ে বেশ কিছু পরিমাণ জমির পোস্ত গাছ স্থানীয়রা নষ্ট করে দেয়। গত সপ্তাহে আনন্দপুর থানা এলাকায় ৬০ বিঘার পোস্ত চাষ নষ্ট করেছিল আবগারি দফতর। দফতরের জেলা সুপারিনটেনডেন্ট এ আহমেদ বলেন, “এ দিন দাসপুরে বেশ কয়েক বিঘায় পোস্ত গাছ নষ্ট করা হয়েছে। আগামী দিনেও অভিযান চলবে।”
এ রাজ্যে পোস্ত চাষ একেবারে বেআইনি। তবু পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন ব্লকে প্রকাশ্যে দিব্বি পোস্ত-গাঁজার চাষ চলে। কিছু দিন আগে চন্দ্রকোনা রোডে খাস বন দফতরের রেঞ্জারের আবাসন চত্বরে পোস্ত গাছের দেখা মিলেছিল।
পোস্ত গাছের ফল চিরে রস সংগ্রহ করে তৈরি হয় আফিম। আবগারি দফতর সূত্রের খবর, বেআইনি হলেও পোস্ত, গাঁজা চাষ অত্যন্ত লাভজনক। অসাধু ব্যবসায়ীরা মোটা টাকার বিনিময়ে চাষিদের দিয়ে এই চাষ করান। চাষিদের কার্যত কোনও খরচই হয় না। লোভে পড়ে তাই তাঁরা ঝুঁকি নেন। এই চাষে জেল ও জরিমানার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সেই আইন এতটাই জটিল যে তার ফাঁক গলে অসাধু ব্যবসায়ীরা বেরিয়ে যান। আবগারি দফতর জানিয়েছে, অভিযানে গিয়ে জমির মালিককে গ্রেফতার করা খুব কঠিন। কারণ, নিয়মানুযায়ী কোনও এলাকায় অভিযানের পর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে জমির দাগ নম্বর নিয়ে জমির মালিকের নাম পাওয়া যায়। তারপর রুজু করা যায় মামলা। এ ছাড়া নষ্ট করার পর চাষের নমুনা দিল্লিতে পাঠাতে হয় পরীক্ষার জন্য। দীর্ঘ জটিলতায় মামলা করতেও দেরি হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবগারি দফতরের এক কর্তার কথায়, “এই আইন কিছুটা শিথিল করে অভিযানের সময়ই যদি জমির মালিককে গ্রেফতার করা যায়, তবে কিছুটা কড়া বার্তা দেওয়া যাবে। তাহলে কিছুটা হলেও এই চাষ বন্ধ করা সম্ভব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy