Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঈদের মুখে ফলের বাজার আগুন

ফলের বাজারে গিয়ে মাথায় হাত। আপেল ২০০ টাকা কেজি! খেজুরের দাম ছাড়িয়েছে ১০০ টাকা। টানা এক সপ্তাহ ধরে ফলের বাজার এমনই তেতে উঠেছিল। ফলে রমজান মাসে দিনভর না খেয়েও বহু গরিব মানুষ পছন্দের ফল খেতেই পেলেন না। যাঁর বাড়িতে ন্যূনতম ১ কেজি আপেল ছাড়া ৮-১০ জনের পরিবারে এক টুকরো করেও মিলবে না, তিনি বাধ্য হয়ে ৫০০ গ্রামেই কাজ চালালেন।

চড়া দামেই বিকোচ্ছে ফল। মেদিনীপুর এলআইসি চকে। নিজস্ব চিত্র।

চড়া দামেই বিকোচ্ছে ফল। মেদিনীপুর এলআইসি চকে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৪ ০১:২৫
Share: Save:

ফলের বাজারে গিয়ে মাথায় হাত। আপেল ২০০ টাকা কেজি! খেজুরের দাম ছাড়িয়েছে ১০০ টাকা। টানা এক সপ্তাহ ধরে ফলের বাজার এমনই তেতে উঠেছিল। ফলে রমজান মাসে দিনভর না খেয়েও বহু গরিব মানুষ পছন্দের ফল খেতেই পেলেন না। যাঁর বাড়িতে ন্যূনতম ১ কেজি আপেল ছাড়া ৮-১০ জনের পরিবারে এক টুকরো করেও মিলবে না, তিনি বাধ্য হয়ে ৫০০ গ্রামেই কাজ চালালেন। শুরুতে বেশ কিছুদিন এভাবে চললেও এখন কিছুটা দাম কমেছে ফলের। কোন ফলের দাম কবে কত হবে তা জানা নেই কারও। এই পরিস্থিতিতে রমজান মাসে সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারের মুসলিমদের পড়তে হচ্ছে চরম সমস্যায়।

তবে এখন কেমন দর রয়েছে ফলের? তা কি নিম্নবিত্তদের নাগালে? এখন কলা ৪০ টাকা ডজন। আপেল কখনও ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি তো কখনও ১৭০-১৮০ টাকা কেজি। খেজুর ৮০ টাকা। সাধারণত, এই তিনটি ফলই বেশিরভাগ মানুষ কেনেন। ফতেমা বিবির কথায়, “রোজা রেখেও লোকের বাড়িতে কাজ করি। আমরা সারা বছর ফল খাই না। রমজান মাস এলে ফল খাই। আর সেই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা এমন ভাবে দাম বাড়িয়ে দেয় যে, বিপদে পড়তে হয়।” একই কথা শেখ মুকসেদ আলিরও। তিনি বলেন, “প্রথম প্রথম ফলের দোকানে গিয়ে তো অবাক। ঘরের সবাই রোজা রাখে। অন্তত ২ কেজি আপেল, ২ ডজন কলা, ১ কেজি খেজুর দরকার। না হলে ১০ জনে খাব কী? ২ কেজি আপেল কিনতেই যদি ৪০০ টাকা চলে যায় তো কী হবে? বাধ্য হয়ে সব ফলই কম কম করে বাড়ি নিয়ে গেলাম।”

একদিকে লাগামহীন দাম বৃদ্ধি, আর তার ফলে বেশিরভাগ মানুষের ফল কেনা কমিয়ে দেওয়া - এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও চাপ বাড়তে থাকে। উল্টোদিকে রমজান মাসে বেশি ফল বিক্রি হবে জেনে সকলেই অতিরিক্ত পরিমাণ ফল নিয়ে আসার অর্ডারও দিয়ে বসেছিলেন। সেই ফল বাজারে ঢোকার পর কিছুটা দাম কমতে থাকে। সাধারণ ভাবে যে আপেল ১২০ টাকায় মিলত তা এখন ১৪০-১৫০ টাকায় মিলতে শুরু করেছে। যে কলা ২৫ টাকা ডজন ছিল তা ৩৫-৪০ টাকায় মিলছে। এক ফল বিক্রেতার কথায়, “এই সময়টায় তো লাভের সময়। লক্ষী পুজো, সরস্বতী পুজো বা অন্যান্য পুজোর মরসুমে দু’একদিন ফলের দাম চড়ে। মাত্র দু’একদিন থাকায় মানুষের গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। রমজাম মাস টানা একমাস হওয়ায় বেশি নজরে পড়ে। তবে এখন আমদানি বেশি হওয়ায় শুরুতে যেভাবে দাম চড়েছিল, এখন আর ততটা নেই।”

সাধারণ মুসলিম সম্প্রদায়ের মতে, রমজান মাসকে সামনে রেখে ফলের দামে কিছুটা রাশ রাখা জরুরি। কারণ, হাতে গোনা কিছু মুসলিম পরিবার হয়তো বিত্তবান। বাকি বেশিরভাগ মানুষই তো গরিব। তাঁরাই সমস্যায় পড়ছেন। সারাদিন উপোস থাকার পর ফল না খেয়েও তো উপায় নেই। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ied pricing high fruit market medinipure
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE