একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি উপলক্ষে পৃথক কর্মসূচি করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের যুযুধান দু’পক্ষ। বুধবার বিকেলে জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ব্যানারে শুভেন্দু-অনুগামীরা মেচেদা বাজারে মহামিছিল করে। এর কুড়ি কিলোমিটারের ব্যবধানে পাঁশকুড়ায় পিডব্লিউডি মাঠে ওই একই ব্যানারে প্রস্তুতি-সভা করেন অধিকারী পরিবারের বিরোধী শিবিরের নেতা বলে পরিচিত রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির অনুগামীরা। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের পরের দিনই কোনও পক্ষই এ দিন সরাসরি পরস্পরের বিরুদ্ধে তেমন আক্রমণে যাননি।
তবে, কেউই কটাক্ষ করতে ছাড়েননি প্রতিপক্ষকে। গত ৬ জুলাই তমলুকের নিমতৌড়িতে একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় অখিল গিরির ভাষণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল সভার উদ্যোক্তা জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারীর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে সভা ছেড়েছিলেন অখিলবাবু-সহ তাঁর অনুগামী বিধায়কেরা। ওই দিনই অখিলবাবু ঘোষণা করেছিলেন, ‘১৬ জুলাই পাঁচ হাজার মানুষের জমায়েত করা হবে’। সে কথা ছুঁয়ে গিয়ে বিরোধী শিবিরকে কটাক্ষ করে অখিলবাবু এ দিন মন্তব্য করেন, “মেরেছ কলসির কানা, তা বলে কি প্রেম দেব না! যে যত আঘাত করুক, আমরা পিছিয়ে যাব না। আরও জোরদার আন্দোলন করব।” জেলার রাজনৈতিক শিবিরের মত, দলের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব যে আরও গভীর হতে চলেছে এই মন্তব্য তারই সূচক মাত্র।
অখিলবাবু ঘোষণা করেন, আগামী ৯ অগস্ট শহীদ স্মরণে পাঁশকুড়ায় এক লক্ষ মানুষের সমাবেশ করা হবে। তৃণমূল সূত্রে খবর, এ দিনের সভার আয়োজন করেছিল অখিল-অনুগামী বলে পরিচিত জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস কার্যকরী সভাপতি আনিসুর রহমান। সভায় হাজার আষ্টেক মানুষের জমায়েত হয়। সভায় ছিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ, কার্যকরী সভাপতি হিরণ চট্টোপাধ্যায়, তমলুকের বিধায়ক তথা রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, হলদিয়ার বিধায়ক শিউলি সাহা, কোলাঘাটের বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরী, চণ্ডীপুরের বিধায়ক অমিয় ভট্টাচার্য প্রমুখ। সভায় বক্তব্য রাখেন উপস্থিত সকলেই।
এরই পাশাপাশি, এ দিন বিকেলেই তমলুক মহকুমার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মেচেদা বাজারে মিছিল করেন শুভেন্দু অনুগামী প্রায় দু’হাজার তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। মিছিল শেষে পথসভা হয়। সেখানেও সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি শুভেন্দু অনুগামীরা।
একই দিনে জেলার দু’জায়গায় একই ব্যনারে দলীয় কর্মসূচি কেন? জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সুকুমার দে-র জবাব, “সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁয়ের সঙ্গে কথা বলেই আজকের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পাঁশকুড়ায় দলীয় কর্মসূচির কথা জানতাম না।” কিন্তু, সেখানেই তো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ও জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অখিল গিরি। সেখানে গেলেন না কেন? শুভেন্দু-অনুগামী সুকুমারবাবুর তোপ, “আমাদের মতো জাতীয়তাবাদী দলে কার্যকরি সভাপতির কোনও ভূমিকা নেই। আমারা দলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর নির্দেশ মেনেই চলি।”
সব মিলিয়ে, একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি ঘিরে ফের প্রকাশ্যে আনল জেলা তৃণমূলের গোষ্ঠী-বিভাজনকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy