একই শহরে দলের দুই মহিলা সভানেত্রী! এমন ঘটনায় পুর-নির্বাচনের আগে খড়্গপুর শহরে ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। শনিবার জেলার বর্ধিত সভায় মহিলা তৃণমূলের প্রতিটি ব্লক ও শহরের সভানেত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই তালিকায় ছিল খড়্গপুর শহরও। রবিবার আবার খড়্গপুরে মহিলা সম্মেলন ডেকে ফের সংগঠনের সভানেত্রীর নাম ঘোষণা করলেন শহর তৃণমূল নেতৃত্ব।
শনিবার মেদিনীপুরের ফেডারেশন হলে মহিলা তৃণমূলের বর্ধিত সভায় জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষের উপস্থিতিতে খড়্গপুর শহরের মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী হিসেবে সুমিতা দাসের নাম ঘোষণা করা হয়। সুমিতাদেবী তৃণমূলের প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পালের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। বর্ধিত সভায় জহরলালবাবু হাজিরও ছিলেন। রবিবার সকালে খড়্গপুর শহরের মালঞ্চ ঝাড়েশ্বর মন্দির ময়দানে শহর তৃণমূলের মহিলা সম্মেলন ডাকা হয়। সেখানে দলের অন্যতম জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষের উপস্থিতিতে শহর মহিলা তৃণমূলের ১৯ জনের কমিটি গড়া হয়। সেই সঙ্গে গত পুরভোটে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা প্রার্থী অর্চনা ভট্টাচার্যের নাম শহর সভানেত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি গৌতম বর্মন, রাজ্য যুব সাধারণ সম্পাদক অরুণকুমার আদিত্য।
রেলশহরের প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য জহরলাল পালের সঙ্গে শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর দ্বন্দ্বের কথা সকলেরই জানা। এই ঘটনাতেও ফের সেই কোন্দলই প্রকাশ্যে এসেছে। গত ডিসেম্বরে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খড়্গপুরে কর্মিসভা করে গিয়েছেন। সেই সভা মঞ্চে দেবাশিস-জহরকে একসঙ্গে দেখা গেলেও কোন্দল যে মেটেনি এ দিনের ঘটনাই তার প্রমাণ। জহরলালবাবু বলেন, “আমি শহর তৃণমূলের ওই সম্মেলনের বিষয়ে বা কমিটি গঠনের বিষয়ে কিছুই জানি না। শনিবারই জেলার পক্ষ থেকে শহরে সুমিতা দাসকে সভানেত্রী ঘোষণা করা হয়েছে। তারপরেও এই ধরনের কাজ দলবিরোধী।” অন্য দিকে, দেবাশিসবাবুর বক্তব্য, “জেলার বর্ধিত সভার কথা আমাকে জানানো হয়নি। আর সুমিতা দাসকে আমি চিনি না। এ দিনের মহিলা সম্মেলন পূর্ব নির্ধারিত। এই সম্মেলনে আসার জন্য জেলা সভানেত্রী, জেলা সভাপতি ও কার্যকরী সভাপতিদের বলেছিলাম।”
কয়েক মাসের মধ্যেই খড়্গপুরের ৩৫টি আসনে পুরভোট। তার আগে এ ভাবে তৃণমূলের কোন্দল প্রকাশ্যে আসা দলের পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তির বলেই মনে করছেন জেলার রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা। ক’দিন আগেই মেদিনীপুরে দলের সাংগঠনিক সভায় জেলা তৃণমূল সভাপতি দীনেন রায়, কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দেবাশিসবাবু। সম্মেলনের কথা জানানো হয়েছে স্বীকার করলেও খড়্গপুরে কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়নি বলেই এ দিন দাবি করেন জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎবাবু। আর জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী কাবেরী চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমি খড়্গপুরে এই ধরনের কোনও সম্মেলনের কথা জানি না।”
একই পদের জন্য দু’জনের নাম ঘোষিত হওয়ায় এখন প্রশ্ন হল কোন ঘোষণাটি বৈধ? জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, একই পদে দু’জনের থাকার কোনও সম্ভাবনাই। এ ক্ষেত্রে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy