মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে এডিজি (কারা) অধীর শর্মা। —নিজস্ব চিত্র।
মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের কোন কোন আবাসিক মুক্ত সংশোধনাগারে যাবেন, তা খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার মেদিনীপুরে আসেন এডিজি (কারা) অধীর শর্মা। বেলা এগারোটা নাগাদ মেদিনীপুরে আসেন তিনি। ছিলেন তিনটে পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকজন আবাসিকের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁদের ইন্টারভিউ নেন। মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার খগেন্দ্রনাথ বীর বলেন, “মুক্ত সংশোধনাগারে কারা যাবেন, তা খতিয়ে দেখতে এদিন সিলেকশন কমিটির বৈঠক ছিল। এই বৈঠকে যোগ দিতেই এডিজি (কারা) আসেন। এটা প্রশাসনিক ব্যাপার।”
রাজ্যে দু’টি মুক্ত সংশোধনাগার রয়েছে। যেখানে চার দেওয়ালের ঘেরাটোপ নেই। আবাসিকেরা নিজেদের মতো করেই থাকতে পারেন। ঘোরাফেরা করতে পারেন। একটি লালগোলায়। অন্যটি দুর্গাপুরে। লালগোলার মুক্ত সংশোধনাগারটি পুরনো। আগে থেকেই রয়েছে। দুর্গাপুরেরটি নতুন। সংশোধনাগারের আবাসিকদের সমাজের মূলস্রোতে ফেরাতে মাঝেমধ্যে কিছু কর্মসূচি হয়। কখনও তা চার দেওয়ালের মধ্যে। কখনও বাইরে। জেল-বন্দিদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত করার প্রক্রিয়াও নতুন নয়। কেউ ছবি আঁকেন। কেউ ছৌ-নাচ করেন। মেদিনীপুরেও আবাসিকদের একটি সাংস্কৃতিক দল রয়েছে। অন্য দিকে, এ বছর তো আবার মেদিনীপুর সংশোধনাগারের বেশ কয়েকজন আবাসিক জেল চত্বরের বাইরে বেরিয়ে পিকনিকও করেছেন। পিকনিক হয়েছে গোপগড় পার্কে। তাও আবার কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া। এ ভাবে পিকনিকের আয়োজন আগে কখনও হয়নি। সংশোধনাগার সূত্রে খবর, যাঁরা পিকনিকে গিয়েছিলেন, তাঁরা সকলেই সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। দীর্ঘদিন ধরে সংশোধনাগারে রয়েছেন। নিজেদের আচরণের মধ্য দিয়েই এঁরা জেল-কর্তৃপক্ষের বিশ্বস্ত হয়ে উঠেছেন। এমন বিশ্বস্ত বন্দিদেরই মুক্ত সংশোধনাগারে রাখা হয়। মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে সবমিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ২৫০ জন আবাসিক রয়েছেন। এঁদের মধ্যে প্রায় ৭০০ জন সাজাপ্রাপ্ত। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রায় ৫০০ জন আবার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। মঙ্গলবার প্রায় ২২ জন আবাসিকের ইন্টারভিউ হয়। সকলেই সাজাপ্রাপ্ত। পরবর্তী সময়ে এঁদের অধিকাংশকেই মুক্ত সংশোধনাগারে পাঠানো হবে। কেউ যাবেন লালগোলায়। কেউ দুর্গাপুরে। মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের এক আধিকারিক বলছিলেন, “মুক্ত সংশোধনাগার একটু অন্য রকম। অনেকটা খোলামেলা পরিবেশে থাকা যায়। যাঁরা জেলে বন্দি থাকেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও না- কোনও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের সত্যি- মিথ্যা বিচার করার আমরা কেউ নয়। তবে, অনেকেই নিজেদের আচরণের মধ্য দিয়েই আমাদের সকলের কাছে বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন। মেদিনীপুরে কয়েকজন আবাসিক রয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy