Advertisement
১৬ মে ২০২৪

কর্মীদের নিয়ে ব্যস্ত শুভেন্দু, দিঘায় তাপস

প্রতীক্ষার প্রহর গোনা শেষ। লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের ভোট পরীক্ষার ফলাফল জানা যাবে আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের দুই লোকসভা কেন্দ্র তমলুক ও কাঁথিতে পিতা-পুত্র শিশির ও শুভেন্দু অধিকারীর জয় নিশ্চিত ধরে নিচ্ছে দল। তবে উঠছে আরও একটা প্রশ্ন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৪ ০১:৪১
Share: Save:

প্রতীক্ষার প্রহর গোনা শেষ। লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের ভোট পরীক্ষার ফলাফল জানা যাবে আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই।

নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের দুই লোকসভা কেন্দ্র তমলুক ও কাঁথিতে পিতা-পুত্র শিশির ও শুভেন্দু অধিকারীর জয় নিশ্চিত ধরে নিচ্ছে দল। তবে উঠছে আরও একটা প্রশ্ন। গতবারের চেয়ে মার্জিন বাড়বে তো? নন্দীগ্রামে জমিরক্ষা আন্দোলনে ভর করে গতবার তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী হেলায় হারিয়ে ছিলেন সিপিএমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা লক্ষ্মণ শেঠকে। আর কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী শিশির অধিকারী জিতেছিলেন সিপিএম প্রার্থী প্রশান্ত প্রধানকে হারিয়ে। জেলার দুই লোকসভা কেন্দ্রে শিশির-শুভেন্দুর যুগলবন্দী এবারও অপরিবর্তিত থাকলেও প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম দুই কেন্দ্রেই প্রার্থী ‘পরিবর্তন’ করে জয়ের মুখ দেখতে পারে কি না তা নিয়েও আগ্রহ রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।

তমলুকে লক্ষ্মণ-জমানার অবসানে আনা হয়েছে দলের তরুণ ছাত্র নেতা ইব্রাহিম আলিকে। অন্য দিকে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে প্রশান্ত প্রধানের পরিবর্তে এবার প্রার্থী করা হয়েছে দলের যুব সংগঠনের একদা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তাপস সিংহকে। তাই তৃণমূলের পাশাপাশি জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত বামেরাও। এই পরিস্থিতিতে জনগণের রায় কাদের পক্ষে যায় তা দেখার। জেলা জুড়েই তৃণমূলের জয় কেউ সংশয় প্রকাশ না করলেও গতবারের জেতার ব্যবধান নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। ভোট গণনার আগের দিন অর্থাত্‌ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাঁথি কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের কাজে ডুবে ছিলেন তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। বিকেলে তমলুকে নিজের কার্যালয়ে এসে দলের কাউন্টিং এজেন্টদের নিয়ে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন তিনি। তবে এ দিনও শুভেন্দুবাবু ভোটের ফল নিয়ে কোনও কথা বলেননি। গত ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস, এসইউসি-সহ তৃণমূল জোট প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী জিতেছিলেন ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৯৫৮ ভোটে। ওই লোকসভা এলাকার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর নন্দীগ্রামে এগিয়ে ছিলেন ৫৫ হাজার ভোটে। আর হলদিয়া বিধানসভা এলাকায় ব্যবধান ছিল সবথেকে কম, মাত্র ২৫৬০। এবার নির্বাচনে শুভেন্দুবাবু গতবারের জয়ের ব্যবধান টপকে আরও বেশী ভোটে জেতেন কিনা সেটাই দেখার।

গতবার তৃণমূলের জোট সঙ্গী থাকায় কংগ্রেস ও এসইউসি-এর প্রার্থী ছিল না। তবে এ বার কংগ্রেস ও এসইউসির প্রার্থী হয়েছেন যথাক্রমে আনোয়ার আলি ও বিবেকানন্দ রায়। এককভাবে কংগ্রেস ও এসিউসি’র শক্তি আগের চেয়ে বেড়েছে না কমেছে তারও আভাস মিলবে ফলাফলে। অন্য দিকে মোদী হাওয়ায় ভর করে বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি কতখানি হল তাও জানা যাবে বিজেপি প্রার্থী বাদশা আলমের ফলেই।

তবে ফলাফল নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটাতে বুধবার রাতে দিঘা থেকে ঘুরে এসেছেন কাঁথির সিপিএম প্রার্থী তাপস সিংহ। বৃহস্পতিবার সকালে কাঁথিতে ফিরে দলীয় কর্মীদের ভোট গণনার দিন কি কি করনীয় তা নিয়ে বৈঠক করেন। দিন কয়েক আগে ভোটের প্রচারে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাপসবাবু। অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তা হলে কি তাপসবাবুর বিষয়ে তৃণমূল ভয় পাচ্ছে? তাপসবাবুর বক্তব্য, “একজন কমিউনিস্ট সৈনিক হিসেবে যতটা লড়াই করার, তাই করেছি। তবে এ বার মানুষরেক ঠিক ভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে দেওয়া হয়নি।”

কাঁথির বিজেপি প্রার্থী কমলেন্দু পাহাড়ি সকাল থেকে ভোট গণনাকেন্দ্রে দলের কর্মীদের নাম ঠিক করতেই ব্যস্ত ছিলেন। ফলাফল নিয়ে কোনও টেনশন নেই বলে মুখে বললেও মুখে একটা চিন্তার ছাপ ছিলই। আর কাঁথির তৃণমূল প্রার্থী শিশির অধিকারী ভোটের আগের দিন আর কোনও দুশ্চিন্তাই রাখেননি নিজের জন্য। সকালে বাড়িতে নাতি দেবদীপ আর নাতনি তিয়ানের সঙ্গে খুনসুটি করা, বিভিন্ন খবরের কাগজে চোখ বোলাতেই ব্যস্ত ছিলেন তিনি। প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক, কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক সবই সামলেছেন শিশিরবাবুর বিধায়ক পুত্র দিব্যেন্দু ও কাঁথির পুরপ্রধান সৌমেন্দু। বিকেলে কাঁথি পুরসভায় যাওয়ার পথে শিশিরবাবু বলেন, “পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে রাজনীতি করছি। ফল নিয়ে কখনও নৈরাশ্যবাদী হই না। আর এবার তো কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূলের দখলে থাকা নিয়ে আমি একশোভাগ নিশ্চিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

subhendu tapas singha nandigram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE