কলেজের পরিচালন কমিটির বৈঠক চলাকালীন তৃণমূলপন্থী সভাপতিকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। বুধবার এই ঘটনার জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইল ব্লকের কুলটিকরি এলাকার অনিল বিশ্বাস স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে পঠন পাঠন বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ, টিএমসিপি-র কর্মী-সমর্থকদের তাণ্ডবে ভেস্তে যায় পরিচালন কমিটির বৈঠকও। তবে আক্রান্ত অমিয় মহাপাত্র পুলিশে এ বিষয়ে অভিযোগ জানাননি।
কুলটিকরির ওই কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি বছর আঠান্নর অমিয় মহাপাত্র তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। ২০১২ সালের এপ্রিলে অমিয়বাবু কলেজ পরিচালন কমিটির সভাপতি হন। তার পর থেকেই কলেজ সংক্রান্ত নানা বিষয়ে টিএমসিপি-র একাংশের সঙ্গে তাঁর বিরোধ বাধে। কলেজ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে কলেজের পরিচালন কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন অমিয়বাবু। বৈঠক চলাকালীন অমিয়বাবু বাথরুমে গিয়েছিলেন। ওই সময় টিএমসিপি-র কিছু কর্মী-সমর্থক তাঁর উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। অমিয়বাবুর অভিযোগ, “বাথরুমে যাওয়ার সময় পাঁচ-ছ’জন আচমকা আমার উপর চড়াও হয়। সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। নিগ্রহকারীদের মধ্যে কলেজ পড়ুয়াদের পাশাপাশি, বহিরাগতরাও ছিল। ওদের হাতে টিএমসিপি-র পতাকাও ছিল। আমি কোনও মতে ওদের হাত ছাড়িয়ে অফিস ঘরে চলে আসি।” বিক্ষোভকারীরা এরপর অমিয়বাবুর ইস্তফার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। কলেজে পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে ক্ষমতার পালা বদলের পরে এই কলেজের রাশ এখন তৃণমূলের হাতে থাকলেও কলেজের ছাত্র সংসদ গঠন করা যায় নি। কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকা সংখ্যা ২৬ জন। এর মধ্যে মাত্র দু’জন স্থায়ী শিক্ষক। বাকিরা আংশিক সময়ের বা অতিথি শিক্ষক। কলেজে কমপক্ষে চার জন স্থায়ী শিক্ষক না থাকলে নির্বাচন সংক্রান্ত কমিটি গড়া যায় না এই যুক্তিতে গত বছর নির্বাচন স্থগিত রাখার জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় টিএমসিপি-র একাংশ। যে কারণে এখনও কলেজে কোনও নির্বাচিত ছাত্র সংসদ গঠন করা সম্ভব হয় নি। তবে কলেজে টিএমসিপি-র ইউনিট রয়েছে। কিন্তু, টিএমসিপি-র একাংশের সঙ্গে অমিয়বাবুর বিরোধ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কলেজে অশান্তি নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। টিএমসিপি-র একাংশ অমিয়বাবুর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সোচ্চার হয়েছে। অন্য দিকে, অমিয়বাবুর পাল্টা অভিযোগ, “ছাত্র সংগঠনের কিছু ছেলে কলেজে ভর্তির সময় ছাত্র ছাত্রীদের থেকে বেআইনি ভাবে টাকা নিয়েছিল। সরস্বতী পুজোর তহবিলের টাকাও ওরা আত্মসাৎ করেছে। এ সব অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে মিথা কুৎসা প্রচার করে আমাকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মহলকে বিষয়টি জানাব।” কলেজের টিচার-ইনচার্জ হরিপদ মহাপাত্র এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চান নি। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, “ওই কলেজের গোলমালের বিষয়টি একেবারেই স্থানীয় সমস্যা। কী ঘটেছে খোঁজ নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy