আগামী বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই লোকসভা কেন্দ্র ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুরে ভোট। জঙ্গলমহলের জেলায় ভোট প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে শনিবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ। জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার দুই সুপার যথাক্রমে শিসরাম ঝাঝোরিয়া এবং অলোক রাজোরিয়া, রিটার্নিং অফিসার ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সার্কিট হাউসে প্রায় ২ ঘন্টা বৈঠক করেন তিনি। বৈঠক শেষে রাকেশ বলেন, “জেলার প্রস্তুতি খুবই ভাল। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
এ দিন রাকেশের আসার খবর পেয়েই বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি নেতৃত্ব তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। প্রশাসনিক বৈঠক শেষে কলকাতায় ফেরার উদ্দেশে গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়ই তাঁকে ঘিরে ধরেন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। মেদিনীপুরের বাম প্রার্থী প্রবোধ পাণ্ডা তাঁর সঙ্গে কথাও বলতে চান। রাকেশ তখন ফের সার্কিট হাউসে ঢুকে প্রায় ১৫ মিনিট সকলের সঙ্গে কথা বলেন। প্রবোধবাবুর কথায়, “উনি বললেন সব ধরনের পদক্ষেপ করছেন। ভোটের দিনেই বোঝা যাবে কী করলেন।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তীর্থঙ্কর ভকতের কথায়, “আমরা সাফ জানিয়েছি, আপনার ভূমিকাও নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এই জেলার ক্ষেত্রে আমরা নিরপেক্ষ কমিশনকে দেখতে চাই।” আর বিজেপি-র জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগে বামফ্রন্ট যে কায়দায় সন্ত্রাস করে ভোট লুট করত এখন তৃণমূলও তাই করছে। কোথায় কোথায় কী পরিস্থিতি তা লিখিতও জানিয়েছি।” বিশেষ পর্যবেক্ষক বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলের কোনও বিষয়ে দুশ্চিন্তা থাকলে লিখিত ভাবে জানাতে বলা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয়।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে রাকেশ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। কোনও আশঙ্কার কথা জানানো হলেও দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে হবে, যাতে আশঙ্কা ঘটনায় রূপান্তরিত না হয়। রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও মাওবাদী হামলা এড়াতে ভোটের আগের দিনই ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড সীমানা সিল করে দেওয়া হবে। স্পর্শকাতর বুথে আধা সামরিক বাহিনী, ক্যামেরা ও মাইক্রো অবজারভার রাখার কথাও বলা হয়েছে।