Advertisement
১৯ মে ২০২৪

তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দলেরই একাংশের

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল নন্দীগ্রামে। তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে শুক্রবার অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিলেন উপপ্রধান-সহ ছয় তৃণমূল সদস্য। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বয়াল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুমা মান্নার বিরুদ্ধে দলেরই ছয় সদস্য অনাস্থা আনায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৪ ০০:৩২
Share: Save:

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল নন্দীগ্রামে। তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে শুক্রবার অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিলেন উপপ্রধান-সহ ছয় তৃণমূল সদস্য। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বয়াল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুমা মান্নার বিরুদ্ধে দলেরই ছয় সদস্য অনাস্থা আনায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। আর এতে অস্বস্তিতে পড়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বয়াল-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা সমর মাইতিকে গুলি করে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে এলাকার বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল নেতা শেখ নাজিমুদ্দিন ও তাঁর অনুগামী হিসেবে পরিচিত বয়াল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্দল সদস্য শেখ ওসমান আলি-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।

এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা সমরবাবুকে খুনের অন্যতম কারণ হিসেবে এলাকায় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব কায়েমের জন্য তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়টি সামনে আসে। তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বয়াল-২ এলাকার নেতা হওয়া সত্ত্বেও সমরবাবু বয়াল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ নিয়ে তৃণমূলেরই একাংশ ক্ষুদ্ধ ছিল।

তার জেরে গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বয়াল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্দল হিসেবে লড়েন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধরা। ১০টি আসনের মধ্যে ৬টিতে জিতেও যান নির্দল প্রার্থীরা। মাত্র চারটি আসনে জেতে তৃণমূল। নির্দলরা অবশ্য পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করতে পারেনি।

একটি সংঘর্ষের ঘটনায় জয়ী নির্দল সদস্যদের একাংশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। গ্রেফতার এড়াতে তাঁরা এলাকা ছাড়েন। সেই ফাঁকে কৌশলে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করে তৃণমল। এই ঘটনায় সমরবাবুর ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। তারপরই তৃণমূলের সঙ্গে নির্দল সদস্যদের সংঘাত বাড়ে। এরই মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে তেরপেখ্যা বাজারের কাছে সমরবাবুকে গুলি করে খুনের ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল নেতা নাজিমুদ্দিনের সঙ্গে নির্দল সদস্য ওসমান আলির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। গ্রেফতার হয়ে জেল হেফাজতেও ছিলেন ওসমান। ইতিমধ্যে ছয় নির্দল সদস্যদের মধ্যে তিন জন তৃণমূলে যোগ দেন।

কিন্তু সম্প্রতি বয়াল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুমা মান্নার সঙ্গে নির্দল সদস্য ওসমান আলিদের সমঝোতার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে আলোচনার জন্য সপ্তাহ দুয়েক আগে তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব বৈঠক ডাকেন। কিন্তু তাতে ঝুমাদেবী যাননি বলে অভিযোগ। তারপরেই উপ-প্রধান সহ তৃণমূলের ছয় সদস্য এ দিন বিডিও’র কাছে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন। সে কথা স্বীকার করে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান দেবপ্রসাদ দাস বলেন “আমাদের এড়িয়ে ঝুমাদেবী পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজের সিদ্ধান্ত নিতেন। ওঁর অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই আমরা অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছি।”

প্রধান ঝুমাদেবীর অবশ্য বক্তব্য, “আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতেই মিথ্যা অভিযোগ তুলে অনাস্থা আনা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc tamluk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE