Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তরুণীকে পুড়িয়ে খুন, ধৃত এক তৃণমূল কর্মী

বাবা আর ভাই কাজের সূত্রে ভিন্ রাজ্যে থাকেন। বাড়িতে মধ্য চল্লিশের মা-র সঙ্গে থাকতেন এক তরুণী। তাঁকেই পুড়িয়ে মারার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে খেজুরির টিকাশি এলাকার এক তৃণমূল কর্মীকে। ওই তরুণীর মায়ের সঙ্গে শম্ভুরাম দাস নামে ওই তৃণমূল কর্মীর ‘সম্পর্ক’ ছিল বলে অভিযোগ। ওই তরুণীর মা-ও মানছেন, “শম্ভুরাম জোর করে আমার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছিল। সম্প্রতি নজর পড়ে মেয়ের দিকে।” তরুণীর বাবা খেজুরি থানার অর্ন্তগত হেড়িয়া পুলিশি তদন্তকেন্দ্রে অভিযোগ করেন, মেয়ের সঙ্গে জোর করে সম্পর্ক করতে চেয়েছিলেন শম্ভুরাম।

সুব্রত গুহ
খেজুরি শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩৫
Share: Save:

বাবা আর ভাই কাজের সূত্রে ভিন্ রাজ্যে থাকেন। বাড়িতে মধ্য চল্লিশের মা-র সঙ্গে থাকতেন এক তরুণী। তাঁকেই পুড়িয়ে মারার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে খেজুরির টিকাশি এলাকার এক তৃণমূল কর্মীকে। ওই তরুণীর মায়ের সঙ্গে শম্ভুরাম দাস নামে ওই তৃণমূল কর্মীর ‘সম্পর্ক’ ছিল বলে অভিযোগ। ওই তরুণীর মা-ও মানছেন, “শম্ভুরাম জোর করে আমার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছিল। সম্প্রতি নজর পড়ে মেয়ের দিকে।” তরুণীর বাবা খেজুরি থানার অর্ন্তগত হেড়িয়া পুলিশি তদন্তকেন্দ্রে অভিযোগ করেন, মেয়ের সঙ্গে জোর করে সম্পর্ক করতে চেয়েছিলেন শম্ভুরাম। তিনি বলেন, “তার প্রতিবাদ করাতেই মেয়েকে পুড়িয়ে মেরেছে শম্ভুরাম।”

শুক্রবার তাঁকে ধরার পরে শম্ভুরামের চার দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। শম্ভুরামের স্ত্রী চন্দনা দাস স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা। তাঁর দাবি, বিষয়টি দলের একাংশের চক্রান্ত। তবে গ্রামবাসী তা মানতে নারাজ। রবিবার বাড়ির দাওয়ায় বসে সেই রাতের বিবরণ দিতে গিয়ে শিউরে ওঠেন ওই মহিলা। তিনি জানান, তাঁর মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। বাড়িতে তাঁর সঙ্গেই থাকত মেয়ে। গত ২৪ অক্টোবর উঠোনে দাঁড়িয়ে মোবাইলে ছেলের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। তিনি বলেন, “মেয়ে ঘরের কাজ করছিল। শম্ভুরাম ওই ঘরেই ছিল। হঠাৎ চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি মেয়ে আগুনে পুড়ছে।” ওই তরুণীকে প্রথমে তমলুক জেলা হাসপাতাল, পরে এসএসকেএমে স্থানান্তর করা হয়। দু’দিন পর সেখানেই মারা যান তিনি। ঘটনার দিনই হেড়িয়ার পুলিশি তদন্তকেন্দ্রে জেনারেল ডায়েরি করেন মৃতার মা। মেয়ের মৃত্যুর পর ২৬ অক্টোবর ফের ওই তদন্তকেন্দ্রেই খুনের অভিযোগ দায়ের করেন তরুণীর বাবা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শম্ভুরামের ওই বাড়িতে যাতায়াত ছিল। পড়শি এক বৃদ্ধের কথায়, “স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্যা ও নিজে তৃণমূলকর্মী, এই সুবাদে ওই পরিবারের উপরে কর্তৃত্ব ফলাতে চাইত শম্ভুরাম।”

সম্প্রতি খেজুরিতেই তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যা তাঁর দলেরই টিকাশি অঞ্চল সভাপতি সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে তাঁকে স্বামী, ছেলের সামনেই গণধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ আনেন। ওই মাসেই ঘরছাড়া এক সিপিএম নেতার স্ত্রীকে খেজুরি লাগোয়া কাঁথির সুনিয়া গ্রামে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় ব্লক যুব তৃণমূল সম্পাদক দেবাশিস ভুঁইয়া-সহ ১২ জনের নামে। দু’টি ঘটনাতেই মূল অভিযুক্তেরা এখনও অধরা। পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।

কেন বারবার দলের নেতা-কর্মীদের নাম এমন অভিযোগে জড়াচ্ছে? পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সম্পাদক মামুদ হোসেন ঘটনাগুলি বিচারাধীন বলে মন্তব্য করতে চাননি। তবে তরুণীকে পুড়িয়ে মারায় ঘটনায় দলীয় তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

subrata guha khejuri shambhuram das tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE