গত আড়াই মাসে জেলায় বিজেপির প্রায় সাড়ে ১২ হাজার প্রাথমিক সদস্য বেড়েছে। আরও প্রায় ৮ হাজার আবেদন এসে পড়ে রয়েছে। আবেদনগুলো খতিয়ে দেখে বিভিন্ন দল ছেড়ে আসা কর্মী- সমর্থকদের প্রাথমিক সদস্যপদ দেওয়া হবে। এই পরিস্থিতিতে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে আন্দোলন কর্মসূচিতে নামছে বিজেপি। রবিবার মেদিনীপুরে দলের এক বৈঠক হয়। বৈঠকে দলের ২৮টি মণ্ডলের সভাপতিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়, প্রদীপ পট্টনায়েক, অন্তরা ভট্টাচার্য, বাবলু বরমের মতো দলের জেলা নেতৃত্ব। এই বৈঠকেই আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ৮ অগষ্ট সবক’টি থানায় বিক্ষোভ দেখানো হবে। দলের কর্মী- সমর্থকেরা মিছিল করে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাবেন। এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য জেলা নেতাদের দায়িত্বও ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। জেলার তরফে এক- একজন জেলা নেতা এক- একটি থানার কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন।
বৈঠকের পর বিজেপির জেলা সভাপতি তুষারবাবু বলেন, “আমাদের অভিজ্ঞতা বড় তিক্ত। বিভিন্ন এলাকায় আমাদের দলকে কোনও কর্মসূচিই করতে দেওয়া হচ্ছে না। একটা রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক কর্মসূচি করবে না? যখনই মণ্ডল- নেতৃত্ব থানায় গিয়ে কর্মসূচির অনুমতি চাইছেন, তখনই থানা থেকে বলা হচ্ছে, আগে উপরতলার অনুমতি দরকার! উপরতলাটি কী সেটাও আমরা জানতে চাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না ভারতী ঘোষ (জেলা পুলিশ সুপার)?” তাঁর কথায়, “৮ অগষ্ট সব থানার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা আগে অনুমতি চাইব। দিলে ভাল, না- দিলেও আমাদের কর্মসূচি হবে। আমরা এই কর্মসূচি থেকে কোনও ভাবেই পিছিয়ে আসছি না।” চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে মেদিনীপুরে একটি বড় কর্মসূচি হবে বলেও এদিন সিদ্ধান্ত হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, হয় জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে, না- হয় জেলা পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে। নেতৃত্ব দেবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তুষারবাবুর কথায়, “এ মাসের শেষে মেদিনীপুরে একটি বড় কর্মসূচি হবে। রাহুলদার সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি আসবেন। বাবুল সুপ্রিয়- পি সি সরকারও থাকতে পারেন। আমরা ওঁদের সঙ্গেও কথা বলছি। বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন, উনি যদি ওই দিন কলকাতায় থাকেন, নিশ্চিত ভাবেই আসবেন।” বস্তুত, পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলাতেও এ বার লোকসভা ভোটে ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি। পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দল ছেড়ে অনেকেই বিজেপিতে আসতে চাইছেন। দলবদলের ক্ষেত্রে যুবদের প্রবণতাই বেশি বলে দলীয় সূত্রে খবর। ইতিমধ্যে অন্য দলে ভাঙনও ধরিয়েছে গেরুয়া- শিবির। এই পরিস্থিতিতে দলকে শৃঙ্খলায় বাঁধতেও তত্পর হয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। সংগঠন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেনোজলের রাশ টেনে ধরতে ভাবমূর্তিকেই মাপকাঠি করছে বিজেপি। এদিন বৈঠকেও দলের জেলা সভাপতি তুষারবাবু বার্তা দিয়েছেন, আর কোনও শিথিলতা নয়। অন্য দল ছেড়ে যাঁরা আসতে চাইছেন, তাঁদের ভাবমূর্তি আগে দেখতে হবে। এলাকায় ভাবমূর্তি সন্তোষজনক না- হলে কাউকে দলে জায়গা দেওয়া হবে না। কর্মীদেরও আরও শৃঙ্খলাপরায়ন হতে হবে। বিজেপির এক জেলা নেতার কথায়, “সংগঠন বাড়ার সময় দলে বেনোজল ঢুকেই। একে আটকানোও কঠিন। তবু যতটা সম্ভব বেনোজল আটকানোর চেষ্টা চলছে। এটা ঠিক, ক্ষেত্র বিশেষে কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে সমাঝোতা করতেই হয়। লোকসভা ভোট পরবর্তী সময় জেলায় বিজেপির প্রায় সাড়ে ১২ হাজার প্রাথমিক সদস্য বেড়েছে। আরও প্রায় ৮ হাজার আবেদন এসে পড়ে রয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে প্রাথমিক সদস্যপদ দেওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু বিধিনিষেধ চালু করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy