নিকাশি সমস্যায় চাষ জমি জলমগ্ন হয়ে পড়ার প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন গ্রামবাসী। রবিবার ডেবরা টোলপ্লাজার কাছে ৬নম্বর জাতীয় সড়কে খড়্গপুর গ্রামীণ ও ডেবরার বাসিন্দাদের ওই কর্মসূচিতে দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। তবে মিনিট চল্লিশ অবরোধ চলার পরে পুলিশ ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনালি চতুর্ভূজ প্রকল্পে দীর্ঘ বছর ধরে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এই কাজের ফলেই ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উত্তর অংশে একটি নিকাশি খাল মজে যাওয়ায় জল বেরোতে পারছে না। এর জেরে প্রতি বছরই খড়্গপুর গ্রামীণের বসন্তপুর, কাজিচক, সাঁকোটি, হরিনা, সীমানা ও ডেবরার অর্জুনী, দাড়িকাপুর, পানিগেড়িয়া-সহ প্রায় ১২টি গ্রামে চাষে ক্ষতি হচ্ছে। গ্রামবাসীদের দাবি, বহুবার এই নিয়ে নানা জায়গায় অভিযোগ জানিয়েও সুফল মেলেনি। এ বছরও পরিস্থিতির বদল না হওয়ায় ওই সব এলাকায় ধান রোয়ার পর ফসল জলে ডুবে গিয়েছে। বেশিদিন জল দাঁড়িয়ে থাকলে ধান গাছ বাঁচানো মুশকিল হবে। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েবেন চাষিরা।
তাই রবিবার তৃণমূলের সমর্থনে খড়্গপুর গ্রামীণ ও ডেবরার গ্রামবাসী একজোট হয়ে ‘জমি বাঁচাও কমিটি’ গড়ে আন্দোলনে নামেন। ডেবরা টোলপ্লাজার কাছে অবরোধে সামিল হন ডেবরার অর্জুনীর সঞ্জয় ভৌমিক, খড়্গপুর গ্রামীনের সীমানা গ্রামের রামপদ মাজিরা। তাঁদের কথায়, দীর্ঘ দু’বছর ধরে নিকাশি খাল বন্ধ হয়ে যাওয়াতেই আমরা সমস্যায় পড়ে গিয়েছি। চাষ করতে পারিনি গত বছর। এ বছর যেটুকু ধান রুইয়ে ছিলাম তা-ও এই বর্ষায় জলের তলায়।” ডেবরা ব্লক তৃণমূল সভাপতি রতন দে, খড়্গপুর-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি তৃষিত মাইতিরা বলেন, “অবরোধকে আমরা সমর্থন করি না। তবে চাষিদের এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এ নিয়ে যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। আমরা তাই নৈতিকভাবে ওঁদের আন্দোলনের পাশে আছি।”
এ দিন দীর্ঘক্ষণ অবরোধ চলায় দুর্ভোগে পড়ে মুম্বই ও কলকাতাগামী লরি, বাস, ট্রেকার, গাড়ি-সহ বহু যানবাহন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। তাঁরা আপাতত পাম্প চালিয়ে জল বের করার আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়। তবে কর্মসূচির নেতৃত্বে থাকা সূর্যকান্ত বেরা বলেন, “তৃণমূলের সমর্থনে আমরা জমি বাঁচাও কমিটি গড়ে এই আন্দোলন করেছিলাম। আমরা চাই স্থায়ী সমস্যার সমাধান। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে তা করে দিতে হবে। নচেত্ বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।” এ দিন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে সিনিয়ার রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আনন্দবিহারী সিংহ বলেন, “আমি ঘটনার বিস্তারিত আমাদের প্রজেক্ট ম্যানেজারকে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy