নববর্ষে তমলুকে তৃণমূলের জনসংযোগ।
‘নমষ্কার, আমরা তমলুকের প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষ থেকে এসেছি। নববর্ষের শুভেচ্ছা নেবেন।’ এরপরেই দোকানদারের হাতে হাসি মুখে সুবেশী এক তরুণী ধরিয়ে দিলেন তাজা গোলাপ। এক তরুণ তুলে দিলেন শুভেচ্ছা কার্ড আর ক্যালেন্ডার।
নববর্ষের সকালে দলীয় প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর হয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা পৌঁছাতে পথে নেমেছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রায় ৬০ জন তরুণ-তরুণী। ১৬টি দলে ভাগ হয়ে তাঁরা তমলুক শহর-সহ রাধামনি থেকে মানিকতলা, মেচেদা বাজার থেকে বুড়ারি, কাঁকটিয়া, ডিমারিবাজার ও কোলাঘাট থেকে হলদিয়া দুর্গাচক বাজারে ঘুরলেন। ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেন প্রায় ১০ হাজার গোলাপ, শুভেচ্ছা কার্ড এবং ক্যালেন্ডার। তবে সরাসরি মুখে ভোট দেওয়ার কথা বলেননি তাঁরা।
কী ছিল কার্ডে? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার পঙক্তি ‘হে মোর চিত্ত, পুণ্য তীর্থে জাগরে ধীরে, এই ভারতের মহামানবের সাগর তীরে।’ কবি আব্দুল কাদিরের কবিতার লাইন ‘যাত্রা তব শুরু হোক হে নবীন, কর হানি দ্বারে, নবযুগ ডাকিছে তোমারে।’ ক্যালন্ডারে রয়েছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দুর ছবি। সঙ্গে রয়েছে সাংসদ প্রার্থীর প্রশস্তি-সহ তাঁকে এ বারের ভোটে পুনর্নিবাচিত করার আহ্বান।
এ দিন ভোর থেকে তমলুক শহরের বর্গভীমা মন্দিরে হালখাতার পুজো দিতে ভিড় জমান ব্যবসায়ী-সহ ক’য়েক হাজার মানুষ। জমজমাট ছিল ভীমার বাজার, বড়বাজার, হরিরবাজার, মানিকতলা, হাসপাতাল মোড়, নিমতলা-সহ বিভিন্ন এলাকা। এই সব বাজারে ঢুকে তমলুকের বিদায়ী তৃণমূল সাংসদের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়ে গোলাপ, শুভেচ্ছা কার্ড-ক্যালেন্ডার দিয়ে কার্যত ভোট প্রচার চালান তমলুকের সাংসদ পদপ্রার্থী। বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কাজে ছিলেন তমলুক কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা শুভাশিস সাঁতরা, শুভদীপ দত্ত, রাহুল নারায়ণ রায়, ইভান মেট্যা, দেবশ্রী চক্রবর্তী ও ইপ্সিতা হাজরা-সহ জনা দশেক তরুণ-তরুণী।
তমলুকের সাংসদ পদপ্রার্থী বলেন, “সারা বছরই সব উত্সব পালন করি। সব সময় রাজনীতি করা ঠিক নয়।” তাঁর কটাক্ষ, “এখন তো নাস্তিক সিপিএম নেতারা গাজনেও যাচ্ছেন। কিন্তু, হজ করতে গেলে অনুমোদন দেয় না তাদের দল!” তমলুক কলেজের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সম্পাদক শুভাশিস সাঁতরা বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী শুধু তমলুক লোকসভার প্রতিনিধি নন, তিনি যুব সমাজের অন্যতম নেতা। এলাকার মানুষকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতেই তিনি এমন উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা তাঁকে সাহায্য করছি মাত্র।”
তমলুকের কংগ্রেস প্রার্থী আনোয়ার আলিও কোলাঘাটের সাগরবাড় এলাকায় ভোট প্রচারে গিয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে গোলাপ তুলে দেন। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বহলা, বাড় বহলা, নহলা, তাহালা, মান্দারগেছিয়া গ্রামে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোট প্রচার চালান তিনি। আনোয়ারবাবু বলেন, “নববর্ষে ভোট প্রচারের পাশাপাশি সব মানুষকে শুভেচ্ছা জানাতে এবং তাঁদের শুভকামনা করতেই গোলাপ দিয়েছি।”
গোলাপ কিংবা কার্ড না দিলেও নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে ভোট প্রচার চালান তমলুক লোকসভার সিপিএম প্রার্থী ইব্রাহিম আলি। এ দিন সকাল থেকে ময়নার তিলখোজা, নন্দকুমারের বহিচবেড়িয়া, রাজারামপুর, ঠেকুয়াবাজার এলাকায় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে এলাকা চষে বেড়ান ইব্রাহিম। তিনি বলেন, “এলাকার মানুষের হাতে কোনও উপহার তুলে দিতে পারিনি। তবে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েই প্রচার চালাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy