পুর এলাকায় নলবাহিত পানীয় জল সব এলাকায় পর্যাপ্ত নয়। শহরের নিকাশি অবস্থাও বেহাল। বিরোধী থাকাকালীন হামেশাই এই দুই বিষয়ে লাগাতার আন্দোলন করেছে তৃণমূল। ক্ষমতায় এসে সেই দুই সমস্যার সমাধানে মাস্টার প্ল্যান করছে হলদিয়া পুরসভা। হলদিয়া পুরসভা সুত্রে খবর, নিকাশির জন্য ৯০ কোটি এবং পানীয় জলের ৪৫ কোটি টাকা খরচ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ বিষয়ে পুরসভা সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে। পুরসভার চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “ক্ষমতায় আসার পর আমরা এই দু’টি সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করা হবে। আর এই প্রকল্প শেষ বলে লাভবান হবে স্থানীয় বাসিন্দারাই।
পুরসভা সূত্রে খবর, এই দু’টি বিষয় ছাড়াও বেশ কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। পরিবহণ সমস্যা হলদিয়ার বাসিন্দাদের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। হলদিয়ার টাউনশিপ এলাকায় রয়েছে একাধিক শিল্পসংস্থার আবাসন। বহু মানুষের বাস এই শহরে। অথচ দুর্গাচক বা ব্রজলালচক এলাকায় সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন শ্রমিকরা। রাত্রিকালীন বাস পরিষেবা তো দূর, রাত আটটার পর রানিচক, মাখনবাবুর বাজার এলাকায় কোনও গাড়িই থাকে না। তাই বাধ্য হয়ে শ্রমিকদের সাইকেল আনতে হয়। অনেকেই ৫- ১০ মাইল রাস্তা সাইকেলে যাতায়াত করেন। সেই সমস্যা মেটাতে অটো এবং মিটার ট্যাক্সি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। বন্দরে কর্মরত এক সাইকেল সওয়ারি শ্রমিকের বক্তব্য, “রাতে গাড়ি থাকে না। সাইকেলেই যাতায়াত করতে হয়। রাতে বাস চালানো হলে তো সুবিধা হবেই।”
সম্প্রতি রাজ্য পরিবহণ দফতর হলদিয়া পুরসভাকে ২০০ টি অটো এবং ১০০ টি ট্যাক্সি চালানোর সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। প্রথম লপ্তে হলদিয়া পুরসভা এলাকায় ৫০টি অটো চলবে। পরে সংখ্যাটা বাড়বে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে এই পরিষেবা দিতে ইতিমধ্যেই অটোচালকদের রুট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। হলদিয়া পুরসভার ২৬টি ওয়ার্ডে ৫০টি গ্রিন অটো চালানোর অনুমতি দিয়েছে হলদিয়া পুরসভা।
বন্ধ হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সার কারখানার আবাসনগুলির বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ এবং হলদিয়া পুরসভার যৌথ উদ্যোগে ৬৭ লক্ষ টাকায় বসছে দুটি বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মারও। কারখানা বন্ধ হয়ে গেলও বর্তমানে সেক্টর ১৩-র ১৫০ টি পরিবার এবং সেক্টর ৮-এর ২০০ টি পরিবার রয়েছেন। কিন্তু কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর জীর্ণ কারখানার আবাসনের জন্য বিদ্যুত্ সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হয়। আবাসিকদের সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের বিদ্যুতে কাজ চালানো হলেও প্রতি মাসে বিল আসত প্রায় দ্বিগুণ। তাই এই নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ ছিলই। এ বার ট্রান্সফর্মার লাগানো হলে সেই সমস্যা মিটবে বলেই আশা। পুরসভার চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “আশা করি শীঘ্রই বন্ধ হয়ে যাওয়া সার কারখানার আবাসিকরা সঠিক মূল্যে বিদ্যুত্ পাবেন।” বন্ধ হয়ে যাওয়া সার কারখানার আবাসিক মানিক মিত্র, অলোক চন্দরাও এই খবরে খুশি।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিষাদলের গেঁয়োখালি জল প্রকল্প থেকে তিন মিলিয়ন গ্যালন জল কেনা হয়। কিন্তু ওই ওয়ার্ডে প্রতিদিন জল লাগে প্রায় সাত মিলিয়ন গ্যালন। দেবপ্রসাদবাবু বলেন, “হলদিয়া পুরসভার যে ওয়ার্ডগুলিতে গ্রামীণ পরিকাঠামো রয়েছে সেখানেও নলবাহিত জল পৌঁছে দেওয়াই আমাদের চ্যালেঞ্জ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy