Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
জাড়া পঞ্চায়েত

প্রধানের সামনেই হাতাহাতিতে জড়াল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী

ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের উপভোক্তা নির্বাচন নিয়ে পঞ্চায়েত অফিসেই হাতাহাতিতে জড়াল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। বৃহস্পতিবার চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের জাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে বৈঠক চলাকালীন দুই গোষ্ঠীর পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে বচসা শুরু হয় বলে অভিযোগ। পরে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ব্লকের বিডিও সুরজিৎ ভড় বলেন, “ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৯
Share: Save:

ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের উপভোক্তা নির্বাচন নিয়ে পঞ্চায়েত অফিসেই হাতাহাতিতে জড়াল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। বৃহস্পতিবার চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের জাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে বৈঠক চলাকালীন দুই গোষ্ঠীর পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে বচসা শুরু হয় বলে অভিযোগ। পরে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ব্লকের বিডিও সুরজিৎ ভড় বলেন, “ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে।”

পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, জাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৮ জন সদস্য রয়েছেন। পঞ্চায়েতে আগে থেকেই গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে। একদিকে রয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান শম্পা মণ্ডল ও উপ-প্রধান স্বদেশ প্রামাণিক-সহ সাত পঞ্চায়েত সদস্য। তাঁরা ব্লক তৃণমূল সভাপতি চিত্ত পালের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। অন্য দিকে, বাকি পঞ্চায়েত সদস্যেরা ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুজয় পাত্রের গোষ্ঠীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত। উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই পঞ্চায়েতের চার জন সদস্য নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে জেতেন। ভোটের পর তাঁরা শাসকদলে যোগ না দিলেও সুজয়বাবুর গোষ্ঠীর অনুগামী হিসেবেই পরিচিত।

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে জাড়া পঞ্চায়েত এলাকায় ২৫০টির মতো বাড়ি তৈরির অনুমোদন হয়েছে। ফের পঞ্চায়েত এলাকায় ১৮০টি বাড়ি তৈরির অনুমোদন এসেছে। এখন নতুন করে বাড়ি তৈরির জন্য উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। সুজয় পাত্রের গোষ্ঠীর পঞ্চায়েত সদস্যদের অভিযোগ, সরকারি নিয়ম অমান্য করে প্রধান ও উপ-প্রধান নিজের পছন্দের লোকেদের নাম তালিকায় ঢোকাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের সব সংসদ থেকে সমান সংখ্যক লোকের নাম নেওয়ার নীতিও মানা হচ্ছে না। তা নিয়ে তাঁরা আপত্তিও করেন। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আলোচনা করতে বৈঠক ডাকেন প্রধান।

প্রধানের বিরোধী গোষ্ঠীর লোকেদের দাবি, পরিকল্পনা করেই এ দিন আগেভাগে পঞ্চায়েতের বাইরে লোক জড়ো করে রেখেছিলেন ব্লক সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিত পঞ্চায়েত সদস্যরা। তাতে প্রধান ও উপ-প্রধানেরও সায় ছিল। বৈঠক শুরু হতেই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। সেই সময় আচমকা দলের একটি গোষ্ঠীর লোকজন পঞ্চায়েতে ঢুকে সুজয় পাত্রের অনুগামী সদস্যদের মারধর করে বলে অভিযোগ। মহিলাদের মারধরের অভিযোগ ওঠে।

সুজয় পাত্রের অনুগামী বলে পরিচিত নির্দল পঞ্চায়েত সদস্যা গীতা দেওয়ান বলেন, “আগের তালিকাতেই আমাদের সংসদের ২০ জনের বেশি ব্যক্তির নামের তালিকা রয়েছে, যারা এখনও প্রকল্পের সুবিধা পাননি। অথচ নতুন তালিকায় তাঁদের নাম না দিয়ে প্রধান ও উপ-প্রধান সরকারি প্রকল্পের অপব্যবহার করছেন।” গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যা চম্পা চক্রবর্তী, সনাতন পাল, রাজলক্ষী দাসদেরও অভিযোগ, “এই প্রকল্পে সরকারি কোনও নিয়মই মানা হয়নি। তদন্ত হলে সব প্রমাণ হয়ে যাবে। আমরা বিডিওকে বিষয়টি জানিয়েছি।” তাঁদের আরও অভিযোগ, “বৈঠক চলাকালীন এ দিন পঞ্চায়েত অফিসে আচমকা জনা পঞ্চাশেক লোক ঢুকে মারধর শুরু করে। আমাদের গায়েও হাত দেওয়া হয়।” পঞ্চায়েত প্রধান শম্পা মণ্ডলের দাবি, আমাকেও মারধর করা হয়েছে। ঘটনায় দলেরই একটি পক্ষ যুক্ত। পুলিশে বিষয়টি জানাব।

ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ প্রসঙ্গে শম্পাদেবী ও স্বদেশবাবুদের দাবি, প্রকল্পের কাজে কোনও অনিয়ম হয়নি। সরকারি নিয়ম মেনেই ও সব পঞ্চায়েত সদস্যদের সম্মতির ভিত্তিতেই ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে উপভোক্তা ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু কিছু সদস্য মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন। আমরাও চাই, বিডিও তদন্ত করুন। যদিও এ বিষয়ে চিত্ত পাল ও সুজয় পাত্র কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jara panchayat clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE