Advertisement
১৭ মে ২০২৪

পাঁশকুড়ায় সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে তৃণমূলের কোন্দল

সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চে, সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্যের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর উপস্থিতিতে দলীয় বিধায়কের ছেলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালেন দলেরই একাংশ কর্মী-সমর্থকরা। মঙ্গলবার পাঁশকুড়ার রাতুলিয়ার এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েন ঘটনাস্থলে উপস্থিত তৃণমূল নেতৃত্ব।

মঞ্চে তখন নেতা-মন্ত্রীরা, নীচে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।

মঞ্চে তখন নেতা-মন্ত্রীরা, নীচে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৪ ০৭:০০
Share: Save:

সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চে, সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্যের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর উপস্থিতিতে দলীয় বিধায়কের ছেলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালেন দলেরই একাংশ কর্মী-সমর্থকরা। মঙ্গলবার পাঁশকুড়ার রাতুলিয়ার এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েন ঘটনাস্থলে উপস্থিত তৃণমূল নেতৃত্ব।

স্থানীয় সূত্রে খবর, খাদ্য দফতরের উদ্যোগে বেসরকারি মালিকানাধীন নবনির্মিত একটি খাদ্য গুদামের উদ্বোধন ছিল এ দিন। অনুষ্ঠান উপলক্ষে ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পরিষদীয় সচিব জ্যোতির্ময় কর, ফিরোজা বিবি, কোলাঘাটের বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরী এবং তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। সকাল সোওয়া ১১টা নাগাদ অতিথিদের বরণ করার সময় এসে পৌঁছন পাঁশকুড়ার তৃণমূল বিধায়ক ওমর আলি ও তাঁর ছেলে মোসলেম আলি। তাঁরা সোজা মঞ্চে উঠে যান। তারপরই তাল কাটে অনুষ্ঠানের, শুরু বিক্ষোভ!

মঞ্চের খুব কাছ থেকে এক দল বিক্ষোভকারী চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘মোসলেম আলি কে? ওকে মঞ্চ থেকে নামাতে হবে।’ ক’য়েক মিনিট ধরে চলে ওই চিৎকার-চেঁচামেচি। পরিস্থিতি সামাল দিতে তৃণমূলের কিছু স্থানীয় নেতা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, তাতেও দাঁড়ি পরেনি বিক্ষোভে। অবস্থা দেখে মোসলেম আলি মঞ্চ থেকে নেমে এসে নিচের চেয়ারে বসেন। তারপর পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপর যথারীতি অনুষ্ঠান চলে।

এই বিক্ষোভে পাঁশকুড়ার তৃণমূল পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খান ও তাঁর ভাই জাইদুল খানের গোষ্ঠী জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ মোসলেম আলির অভিযোগ, “বিক্ষোভে জাইদুল খানের লোকজন জড়িত। আমি ওদের তোলাবাজির বিরোধিতা করি বলেই ওরা পরিকল্পিত ভাবে অভব্য আচরণ করেছে। বিষয়টি আমি সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীকে জানিয়েছি।” তৃণমূল নেতা জাইদুল খান অবশ্য বলেন, “বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এলাকার জনগণ।” এর বেশি তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

বিক্ষোভের ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েন এ দিনের সভায় উপস্থিত পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তিনি বলেন, “এ ধরণের বিক্ষোভ কাম্য নয়। এতে পাঁশকুড়া থেকে দলের তরফে ভুল বার্তা যাবে।” এ দিনের ঘটনায় কারা জড়িতে তা তিনি বলতে চাননি। সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী এ দিনের বিক্ষোভকে গুরুত্ব দিতে চাননি। তিনি অবশ্য বলেন, “মোসলেম আলি জন প্রতিনিধি নন। তাই মঞ্চ থেকে তাঁকে যাঁরা নেমে যেতে বলেন, তাঁরা ঠিকই বলেছিলেন।”

এ দিনের অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বাম সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “আগে রাজ্যে মাত্র ৬৮ হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতার গোডাউন ছিল। আর তিন বছরের মধ্যে আমরা শুধু পাঁশকুড়া ব্লকেই ২০ হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতার গোডাউন করেছি।” এ ছাড়াও জেলার কাঁথি, নন্দীগ্রাম, এগরা, ভগবানপুরে ও পাঁশকুড়ায় সরকারি উদ্যোগে ৫ হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন খাদ্য গুদাম তৈরির কাজ চলছে বলে তিনি জানান। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের লক্ষ্য চলতি বছরের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে ৮০ হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতার গোডাউন তৈরি করা।” ২০১৫ সালের মধ্যে রাজ্যে ১০ লক্ষ মেট্রিক টন ক্ষমতার গোডাউন করার কথাও তিনি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

panskura ethnic clashes of TMC ratulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE