Advertisement
০২ জুন ২০২৪
আজ একুশে জুলাই

পশ্চিমে বাসে না, পূর্বে বাস নিয়েই কোন্দল তৃণমূলে

আজ, ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস। কলকাতার ধর্মতলায় এই উপলক্ষে তৃণমূলের সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে দুই ছবি ধরা পড়ল পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। পশ্চিম মেদিনীপুরে যেখানে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সমাবেশে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বাসের পরিবর্তে ট্রেনে যাওয়ার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে পূর্ব মেদিনীপুরে সমাবেশের প্রস্তুতি ঘিরেও তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ঠান্ডা লড়াই অব্যাহত থাকল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক ও মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৪ ০০:২৯
Share: Save:

আজ, ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস। কলকাতার ধর্মতলায় এই উপলক্ষে তৃণমূলের সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে দুই ছবি ধরা পড়ল পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। পশ্চিম মেদিনীপুরে যেখানে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সমাবেশে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বাসের পরিবর্তে ট্রেনে যাওয়ার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে পূর্ব মেদিনীপুরে সমাবেশের প্রস্তুতি ঘিরেও তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ঠান্ডা লড়াই অব্যাহত থাকল।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোথাও কোথাও এবার তৃণমূলের শিশির অধিকারী ও অখিল গিরি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে আলাদাভাবে বাস রাখার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ফলে কোন গোষ্ঠীর বাসে চেপে ধর্মতলার সমাবেশে যাবেন, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন জেলার বহু সাধারণ তৃণমূল সমর্থক। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার সমাবেশে দলীয় সমর্থকদের নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে এবার জেলার বাস মালিক সংগঠনগুলির কাছে চিঠি দিয়ে কোনও বাস ভাড়ার জন্য চাওয়া হয়নি। প্রতিটি ব্লকের তৃণমূল নেতারাই স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নিয়ে দলীয় সমর্থকদের জন্য বাস ভাড়া করেছেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চণ্ডীপুর ব্লকের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সমাবেশে নিয়ে যেতে তৃণমূল জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর অনুগামী স্থানীয় নেতারা যেমন বাসভাড়া করেছেন, আবার তাঁর বিরোধী শিবিরের নেতা অখিল গিরির অনুগামী হিসেবে পরিচিত বিধায়ক অমিয়কান্তি ভট্টাচার্যও দলীয় সমর্থকদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছেন। অমিয়বাবু অবশ্য বলেন, “ব্লকের কর্মী-সমর্থকদের অনেকেই ট্রেনে করে সমাবেশে যাবেন। অনেকে বাসে করেও যাবেন। সেজন্য আমরা ১৪টি বাস ভাড়া করেছি। তবে অন্য কেউ বাস ভাড়া করেছেন কি না, আমি তা জানি না।”

তবে পাঁশকুড়ায় কর্মী-সমর্থকদের ট্রেনে করে সমাবেশে নিয়ে যেতে পাঁশকুড়া, ক্ষীরাই, হাউর স্টেশনে দলের ব্লক নেতৃত্বের পক্ষ থেকে একটিই শিবির করা হয়েছে। তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি দীপ্তিকুমার জানা বলেন, “আমাদের ব্লকের অধিকাংশ কর্মী-সমর্থক প্রতি বছরই ট্রেনে করে কলকাতার সমাবেশে যান। সেজন্য তাদের সাহায্যও করা হয়। এবারও একইরকমভাবে দলের পক্ষ থেকে এলাকার বিভিন্ন স্টেশনে শিবির করা হয়েছে।” তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সুজিত রায়ও বলেন, “ব্লকের দলীয় কর্মী-সমর্থকরা অধিকাংশই ট্রেনে করে সমাবেশে যাবেন। তবে স্থানীয়ভাবে ভাড়া করে কয়েকটি বাস যেতে পারে।” পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুকুমার বেরা বলেন, “কলকাতায় সমাবেশে যাওয়ার জন্য তৃণমূলের তরফে স্থানীয়ভাবে জেলার বিভিন্ন রুটের কিছু বাস নেওয়া হয়েছে।” জেলা বাস ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক সামসের আরেফিন বলেন, “কলকাতার সমাবেশের জন্য প্রায় ৩০০টি বাস ভাড়া নেওয়া হয়েছে। জেলায় এখন প্রতিদিন প্রায় ৭০০টি বাস চলে। ফলে সোমবার বাসযাত্রীদের কিছুটা হলেও অসুবিধা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।”

তবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বাসের পরিবর্তে ট্রেনে করেই সমাবেশে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে যে সব ব্লকের দলীয় নেতৃত্ব বাস ভাড়া করে নিয়েছিলেন, তাদের বলা হয়েছে বাসে চেপে কর্মী-সমর্থকরা নিকটবর্তী স্টেশনে পৌঁছতে পারবেন। তবে হাওড়া পৌঁছতে হবে ট্রেনে। সেখান থেকে মিছিল করে ধর্মতলায়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “দলের কর্মী-সমর্থকদের আমরা ট্রেনে করেই সমাবেশে যাওয়ার কথা বলেছি। সেই মতো ব্লকস্তরে পদক্ষেপও করা হয়েছে।” তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ জানিয়েছেন, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই সমাবেশে যাবেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, এর ফলে একদিকে যেমন বাস ভাড়া বাঁচবে, তেমনই কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা দেখা দেবে।

নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে ব্লকস্তরে পদক্ষেপও শুরু হয়েছে। তৃণমূলের ডেবরা ব্লক সভাপতি রতন দে বলেন, “এ বার আমরা ট্রেনে করেই কলকাতার সমাবেশে যাবো।” তিনি জানান, যে সব এলাকার নেতারা আগে থেকে বাস ভাড়া করে নিয়েছিলেন, তা বাতিল করা হয়েছে।” তৃণমবলের শালবনি ব্লক সভাপতি নেপাল সিংহ, নারায়ণগড় ব্লক সভাপতি মিহির চন্দও জানালেন, জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ মতো কর্মী-সমর্থকরা সকলে বাস করেই কলকাতার সমাবেশে যাবেন। জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, “সমাবেশের জন্য আগের থেকে এ বার অনেক কম সংখ্যক বাসই ভাড়া করা হয়েছে। কিছু বাস আগে থেকে ভাড়া করা হয়েছিল। পরে তা বাতিল করা হয়।” মৃগাঙ্কবাবু বলেন, “বিভিন্ন এলাকায় বাস ভাড়া করা হয়েছে নিকটবর্তী স্টেশনে পৌঁছনোর জন্য। ঝাড়গ্রাম, খড়্গপুর মহকুমায় এমনটাই হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি যা তাতে পরিবহণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে না। রাস্তায় বাস থাকবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

21july tamluk tmc sahid dibos
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE