রাস্তায় পড়ে মদের বোতল। কান ধরে দাঁড়িয়ে ধৃতরা। ছবি: কৌশিক মিশ্র।
এলাকার বেআইনি মদের ঠেক ভাঙার জন্য পুলিশ-প্রশাসনের কাছে একাধিকবার আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু তার জেরে বাড়তি নজরদারি বাড়েনি। ধরা পড়েনি কোনও বেআইনি কারবারিও। এ বার হাতেনাতে এক বেআইনি মদ ব্যবসায়ী ও তার সঙ্গীকে ধরল গ্রামবাসীই। এমনকী পুলিশি হস্তক্ষেপের তোয়াক্কা না করে ধৃতদের কান ধরে রাস্তার ধারে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বেশ কিছুক্ষণ। বৃহস্পতিবার দুপুর এগারোটা নাগাদ এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল পটাশপুর-১ ব্লকের সিংদামোড়। ওই দু’জনকে অবশ্য তারপর পুলিশের হাতে তুলে দেন গ্রামবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় দিন দিন বাড়ছিল বেআইনি মদের ব্যবসা। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হলেই এলাকার ছোটো ছোটো পানের গুমটিগুলোই হয়ে যেত মদের ঠেক। আর সেই বেআইনি মদের ঠেকে আসর জমাচ্ছিল এলাকার দুষ্কৃতীরা। দিন কয়েক আগে পটাশপুর-১ ব্লকের একটি স্কুলের ছাত্রদের জলের বোতল থেকে মেলে মদ। ফলে এলাকায় এই বিষয় নিয়ে অসন্তোষ দানা বাধছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় নরিয়া গ্রামের গুরুপদ জানা নামে এক বেআইনি মদ ব্যবসায়ী দোকান থেকে মদ কিনে নিয়ে যাওয়ার সময়ই তাকে হাতেনাতে ধরেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আটক করা হয় তার এক শাগরেদকেও। ভাঙচুর চালানো হয় মদের ভাটিতে। ভেঙে ফেলা হয় কয়েকশো মদের বোতল। এরপরই ধৃতদের কান ধরে রাস্তার ধারে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
পটাশপুর-১ ব্লক যুব তৃণমূলের আহ্বায়ক পীযূষ পণ্ডা বলেন, “এলাকার বাসিন্দারা অনেকদিন ধরে বেআইনি মদ ব্যবসায়ীদের সন্ধানে ছিল। এ দিন দু’জন হাতেনাতে ধরা পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারাই তাদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।” বেআইনি মদ ব্যবসার প্রতিবাদে পরবর্তীকালে আরও বড় আন্দোলনের পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। পটাশপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, সিংদা মোড়ের বেআইনি মদ ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
চোলাই ঠেকে অভিযান। গত ১৫ জুলাই কোলাঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে হলদিয়া শহর ও সংলগ্ন এলাকায় চোলাই ঠেক ও বেআইনি মদ ব্যবসার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সরব হয়েছিলেন পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ মণ্ডল। তাঁর অভিযোগ ছিল মূলত পুলিশ ও আবগারি দফতরের বিরুদ্ধে। তারপর চোলাইয়ের ঠেক ভাঙতে ও বেআইনি মদ ব্যবসা বন্ধ করতে যৌথ অভিযানে নামল পুলিশ ও আবগারি দফতর। পুলিশ ও আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অভিযোগের পর জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযান চালানো হবে। বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার ভবানীপুর, সুতাহাটা, হলদিয়া ও দুর্গাচক থানা এলাকার কসবেড়িয়া, ডিশিবরামনগর, কুঁকড়াহাটি, চৈতন্যপুর, রায়রায়চক-সহ বিভিন্ন এলাকায় যৌথ অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে ১৩ হাজার লিটার চোলাই মদ তৈরির কাঁচামাল, আড়াই হাজার লিটার চোলাই মদ ও মদ তৈরির সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy