চণ্ডীপুরে রাহুল সিংহের সভার প্রস্তুতি ঘুরে দেখছেন বিজেপি জেলা নেতৃত্ব। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপি ফল করেছে যথেষ্ট ভাল। সেই তুলনায় পূর্ব মেদিনীপুরের সেই সময় বিজেপি খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। তবে লোকসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেই শক্তি প্রদর্শন শুরু করেছে এই দল। তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি পূর্ব মেদিনীপুরে দলের শক্তি বৃদ্ধির পরখ করতে এ বার আসরে নামছে বিজেপি। লোকসভা ভোটের সময় নন্দকুমারে সভার প্রায় ৮ মাস পরে আজ শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে সভা করতে আসছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ।
নন্দীগ্রাম লাগোয়া চণ্ডীপুর বাজারের কাছে দিঘা-কলকাতা সড়কের ধারে কালিকাখালি কালীপদ স্মৃতি ময়দানে এই জনসভার আয়োজন নিয়ে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব প্রস্তুতি নিয়েছে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই। যদিও চণ্ডীপুরের এই স্থানে সভা করা হয়েছে পরিবর্তিত স্থান হিসেবে। প্রথমে চণ্ডীপুর বাজার লাগোয়া একটি ফুটবল ময়দানে সভাস্থল ঠিক করেছিল জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু ওই ময়দান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি না পাওয়ায় পরিবর্তিত সভাস্থল হিসেবে কালীপদ স্মৃতি ময়দানে এই সভাস্থল করতে হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজেপি জেলা নেতৃত্ব। তবে সভার স্থান পরিবর্তন হলেও দলীয় সভায় জমায়েতের বহর কমবে না বলেই দাবি বিজেপির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তপন করের। তপনবাবুর কথায়, “গত লোকসভা নির্বাচনের আগে জেলায় আমাদের যে শক্তি ছিল এই কয়েক মাসে তা কয়েক গুণ বেড়েছে। আর রাজ্যে সারদা, খাগড়াকাণ্ড থেকে শুরু করে এই জেলায় একচ্ছত্র আধিপত্য থাকা তৃণমূলের কার্যকলাপ নিয়ে মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে।”
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চণ্ডীপুরের সভায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ ছাড়াও দলের রাজ্য সহ-সভাপতি বাদশা আলম, গত লোকসভা নির্বাচনে বীরভূমে দলের প্রার্থী অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন। সভায় সারা জেলা থেকে ৩০ হাজার লোকের সমাবেশের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য দলের গ্রামীণ এলাকায় ব্লক, অঞ্চল নেতৃত্ব থেকে শহর এলাকার ব্লক সভাপতিদের নিয়ে একাধিকবার প্রস্তুতি বৈঠক করেছে জেলা নেতৃত্ব। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আসার জন্য বাস, ট্রেকার ভাড়া নেওয়া হয়েছে। কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিজেপি জেলা নেতৃত্ব জেলা পুলিশের কাছে নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। বিজেপি জেলা সভাপতি তপন কর বলেন, “সমাবেশের প্রস্তুতির মুখে কয়েক জায়গায় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মারধর ও তোরণ ভাঙার ঘটনা ঘটেছে। তাই সমাবেশে আসা লোকজনকে বাধা দেওয়া হতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। সভায় যাতে দলের কর্মী-সমর্থকরা নির্বিঘ্নে আসতে পারেন সেজন্য উপযুক্ত নিরাপত্তার জন্য জেলা পুলিশ সুপারের কাছে দাবি জানিয়েছি।”
এ দিকে লোকসভা নির্বাচনের পরে জেলার কয়েকটি এলাকায় তৃণমূল কর্মীদের একাংশ প্রকাশ্যে দলবদল করেছে। অন্য দল থেকেও কর্মী-সমর্থকরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে বলে বিজেপি জেলা নেতৃত্বের দাবি। তপনবাবু জানান, হলদিয়া, এগরা, রামনগর ও পাঁশকুড়া-সহ বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকজন নেতা চণ্ডীপুরের সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেবেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ-এর ‘ভারত নির্মাণ মঞ্চ’-এ যোগ দেওয়া কয়েকজন নেতা, সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লকের স্থানীয় কয়েকজন নেতা, এমনকি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের কয়েকজন নেতা-কর্মী আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy