জলে ডুবে রয়েছে ধান।—নিজস্ব চিত্র।
গত কয়েক দিনে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টির সঙ্গে কালবৈশাখীর জেরে বোরো চাষে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে জেলায় বেশির ভাগ জমি থেকেই বোরো ধান তুলে নিয়েছেন চাষিরা। তাই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও কম বলে মত কৃষি দফতরের। দফতরের সহ-আধিকর্তা (তথ্য) দুলাল দাস আধিকারী বলেন, “এখনও বেশ কিছু এলাকায় বোরো ধান রয়েছে। ফলে ঝড়ে এবং বৃষ্টিতে কিছুটা হলেও ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।”
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এত দিন সেচের অভাবে বোরো চাষের জমি শুকিয়ে যেত। বহু জমি নষ্টও হয়ে যেত। কারণ, ফি বছরই সেচ নির্ভর বোরো চাষে জল না পেয়ে মাঠ ফুটিফাটা হয়ে যায়। কখনও-সখনও খরা পরিস্থিতিও তৈরি হয়। কিন্তু এ বারে তা হয়নি। গত বছর বর্ষায় জেলায় রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছিল। তার জেরে জেলার নালা, খাল থেকে ভূগর্ভে পর্যাপ্ত জল ছিল। ফলে এ বারে জেলায় রেকর্ড পরিমাণে (১ লক্ষ ৭৫ হাজার হেক্টর) বোরো চাষ হলেও এত দিন এই চাষে সমস্যার মুখে পড়েননি চাষিরা। কিন্তু, গত দু’তিন দিনের ঝড়-বৃষ্টিতে জেলার একাধিক এলাকায় বোরো চাষে ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। কোথাও ঝড়ের দাপটে ধান জমিতে মিশে গিয়েছে, আবার কোথাও জমিতে জল দাঁড়িয়ে যাওয়া ফলন্ত ধানে আঁকুরও বেরিয়ে গিয়েছে। কৃষি দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, যেখানে সেচের অভাবে ধান নষ্ট হয়ে যায় সেখানে এ বারে পুরোপুরি উল্টো চিত্র। অর্থাৎ, সেচ নয় এ বার প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে কালবৈশাখী এবং সাম্প্রতিক কয়েক দফার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। এর জেরে আশঙ্কা অনেক চাষিই শেষ পর্যন্ত আশানুরূপ ফলনই পাবেন না।
মেদিনীপুরে ঝড়ে উল্টেছে বোর্ড
জেলার ঘাটাল, দাসপুর, কেশপুর, ডেবরা-সহ বিভিন্ন এলাকায় এখনও বেশ কিছু চাষি উপযুক্ত সংখ্যক মজুরের অভাবে ধান কাটতে পারেননি। কপালে ভাঁজ পড়েছে তাঁদের। দাসপুরের নিমতলার স্বরূপ কাণ্ডার, কমল কাঁঠাল, কেশপুরের হারধন দোলইয়েরা বলেন, “আমরা মজুরের অভাবে ধান কাটতে পারিনি। কিন্তু ঝড়ে-বৃষ্টিতে ফলন্ত ধান মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছে। জমিতে জল দাঁড়িয়ে থাকায় ধানেও জল লাগছে।” শেষমেষ কতটা ধান অবশিষ্ট থাকবে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। চন্দ্রকোনার কোচগেড়িয়ার চাষি প্রফুল্ল আদক বলেন, “গত শনিবারই ধান কেটেছি। কিন্তু ওই দিন বিকাল থেকেই ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়ায় মাঠ থেকে ধান তোলা হয়নি। পরদিন রবিবার ধান তুলে দেখি আঁকুর বেরিয়ে যাচ্ছে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy