শুরু হয়ে গেল খড়্গপুর বইমেলার প্রস্তুতি। এ বার র্পী্চদশ বর্ষ। গত কয়েক বছরের মতো এ বারও মেলার স্লোগান ‘বই পড়ুন, বই কিনুন এবং প্রতিদিন আসুন বইমেলায়’। মানস-গৌতম-নারায়ণ চৌবে মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সহযোগিতায় এই বইমেলা শুরু হয় ৩ জানুয়ারি। আগামী বছরও নির্ঘন্ট পাল্টাচ্ছে না বলে রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছে বইমেলা কমিটি।
রেলশহর খড়্গপুরে ‘বর্তিকা’, ‘বোধন’, ‘একালের স্বপ্ন’, ‘প্লুতস্বরে’র মতো সাহিত্যপত্রিকা, কবিতা পত্রিকা ‘ধানসিড়ি’ একসময় জনপ্রিয় হয়েছে। এই শহরে বহু বছর কাটিয়েছেন পবিত্র সরকার, রমাপদ চৌধুরী, অনিল ঘোড়ইয়ের মতো ব্যক্তিত্ব। একটা সময় শহরে দুষ্কৃতী দাপটে সংস্কৃতির সেই ধারা মরতে বসেছিল। মানস চৌবের মৃত্যুর পরে প্রয়াত সাংসদ নারায়ণ চৌবের বড় ছেলে গৌতম চৌবে বাবা ও ভাইয়ের নামে মেমোরিয়াল ট্রাস্ট গড়ে বইমেলার পরিকল্পনা করেন। ২০০০ সালে ১৮টি স্টল নিয়ে যাত্রা শুরু করে খড়্গপুর বইমেলা। দুষ্কৃতীদের গুলিতে গৌতমের মৃত্যুতেও তাতে ছেদ পড়েনি। আনন্দ, দে’জ, পুনশ্চ, এনবিটি-র মতো প্রকাশনা সংস্থার উপস্থিতি এই মেলাকে জনপ্রিয় করেছে। সুচিত্রা ভট্টাচার্য, মহাশ্বেতা দেবী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, হর্ষ দত্তের মতো কবি-সাহিত্যিকরা এখানে এসেছেন। ভূমি, চন্দ্রবিন্দু, নচিকেতা চক্রবর্তী, মমতাশঙ্কর থেকে অনুপম রায়ের মতো শিল্পীরা অনুষ্ঠান করেছেন।
এ দিন সাংবাদিক বৈঠক ডেকে মেলার প্রস্তুতির কথা শুনিয়েছেন আয়োজকরা। ছিলেন বইমেলা কমিটির সভাপতি সাহিত্যিক নন্দদুলাল রায়চৌধুরী, সম্পাদক দেবাশিস চৌধুরী, অন্যতম সম্পাদক অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি প্রয়াত বইমেলা কমিটির সহ-সভাপতি সাহিত্যিক অনিল ঘোড়াইয়ের স্মৃতিতে লিটল ম্যাগাজিনের প্যাভেলিয়নটি উত্সর্গ করা হবে। এ বছরই প্রথম আসছে বাংলাদেশের একটি প্রকাশনা সংস্থা। এ ছাড়াও থাকছে নানা আয়োজন। ৪ জানুয়ারি কবি হরপ্রসাদ সাহুকে সংবর্ধনা, ইন্ডিয়ান সুপার লিগ এবং ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে আলোচনাসভা, ৯ জানুয়ারি স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে ক্যুইজ-সহ নানা আয়োজন থাকছে। জোর দেওয়া হচ্ছে প্রচারেও। ডিসেম্বরের শেষে হবে বইয়ের জন্য দৌড় ও পদযাত্রা। এ দিন নন্দদুলালবাবু বলেন, “বই এখন বিনোদনের একটা মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বই পড়া কমেনি বরং বেড়েছে। ট্রেনে ভ্রমণে বইয়ের মতো সঙ্গীর বিকল্প নেই। সকলের সহযোগিতায় এই বইমেলা এগিয়ে যাবে বলে আমার আশা।” আদতে শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা রেলওয়ে বালক উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বইপ্রেমী প্রীতিময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সাহিত্য চর্চার প্রসারে এই বইমেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। তবে বিভিন্ন ভাষার বইয়ের স্টল বাড়ালে ভাল হয়।”
আলোচনাসভা। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের ২৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটি ও শহর বিজ্ঞান কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে গত শনিবার সারা দিন ব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শহরের জেলা বিজ্ঞান ভবনে সকালে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন মঞ্চের কার্যকরী সভাপতি নন্দদুলাল ভট্টাচার্য, অনিলকুমার ঘোষ, কলেজ শিক্ষক প্রদীপ দাস মহাপাত্র, কলেজ শিক্ষিকা সুজাতা মাইতি প্রমুখ। পাশাপাশি, এক স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরও অনুষ্ঠিত হয়। শহর বিজ্ঞান কেন্দ্রের সম্পাদক বাবুলাল শাসমল জানান, শিবিরে প্রায় ৩০০ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ওষুধ দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy