স্বামীর সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই অশান্তি চলছিল। তার জেরে বছর আঠাশের এক বধূকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীদের একাংশ মারধর করে চুল কেটে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। গত ১৩ জুন ঘটনাটি ঘটেছে পাঁশকুড়ার চৈতন্যপুর ১ পঞ্চায়েতের কানাসি বৃন্দাবনচক গ্রামে। স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, দেওর-সহ মোট ১৭ জনের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বধূ। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি।
কানাসি বৃন্দাবনচক গ্রামের মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা ওই তরুণীর সঙ্গে গ্রামের এক ভ্যান চালক যুবকের বিয়ে হয়েছিল বছর বারো আগে। ওই দম্পতির ৯ বছরের ছেলে ও ৪ বছরের মেয়ে রয়েছে। বধূর স্বামী মৃগী রোগী। বধূর অভিযোগ, তাঁর স্বামী যথাযথ রোজগার করে সংসারের দায়িত্ব পালন করেন না। এ নিয়ে কিছু বলতে গেলে তাঁকে শ্বশরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করে। দিন পনেরো আগে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে পাঁশকুড়া থানাতেও অভিযোগ দায়ের করেন ওই বধূ। গত ৩১ মে দু’পক্ষকে ডেকে আলোচনার মাধ্যমে পুলিশ বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টাও করে। তবে সমাধান সূত্র বেরোয়নি।
এরপরই ১৩ জুন ওই বধূকে নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, অশান্তির জেরে কিছু দিন হল ছেলে-মেয়েকে নিয়ে কাছেই ইন্দিরা আবাসে পাওয়া শ্বশুরমশাইয়ের বাড়িতে থাকছিলেন বধূটি। ঘটনার দিন ছেলেকে ডাকতে শ্বশুরবাড়ির কাছে এসেছিলেন তিনি। তখন সেখানে শ্বশুরবাড়ির লোকজন এবং পাড়া-প্রতিবেশীরা মিলে তাঁকে নিয়েই আলোচনা করছিল। অভিযোগ, ওই বধূকে দেখতে পেয়ে সেখানে উপস্থিত সকলে মিলে তাঁকে আটকে দেয়। তারপর মারধর করে কেটে দেওয়া হয় তাঁর চুল।
সোমবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বাপেরবাড়িতে রয়েছেন নিগৃহীতা বধূ। আর অভিযুক্তরা সকলেই গ্রামছাড়া। ওই বধূর জ্যেঠশাশুড়ি অবশ্য দাবি করেন, “বউমা সব মিথ্যা অভিযোগ করেছে। ও আসলে নিজের মতো করে থাকতে চায়।” স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের মিতা পালেরও বক্তব্য, “অনেক দিন ধরেই ওই দম্পতির অশান্তি চলছিল। তবে মারধর করে চুল কাটার অভিযোগ ঠিক নয়।” ঘটনার তদন্তে গ্রামে এসেছিল পুলিশ। তবে অভিযুক্তরা তার আগেই এলাকা ছেড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy