রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে মোগলমারিতে খননের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হল। মঙ্গলবার দাঁতনের মনোহরপুরের মোগলমারি গ্রামের সখীসেনা ঢিবিতে এসে পৌঁছেছেন পুরাতত্ত্ব বিভাগের কর্মীরা। এ দিন মূলত খননের আগে যে নক্সা বা পরিকল্পনার প্রয়োজন হয় সেই কাজ হয়েছে। আজ, বুধবার খননের কাজে হাত দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গত বছরের মার্চ থেকে বন্ধ ছিল এই বৌদ্ধবিহার খননের কাজ। তবে রাজ্যের তরফে আবেদনের পরে চলতি মাসের ৭ তারিখ ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ এই খননের অনুমতি দেওয়ার পরে ফের আজ কাজ পুরোপুরি শুরু হবে।
রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ সূত্রে খবর, প্রথম পর্যায়ের খননে পুরাতত্ত্ব বিভাগের হাত ধরেই বিহারের ‘শ্রীবন্দক মহাবিহার’ নামফলক উদ্ধার হয়েছিল। অবশ্য সেই খননের লক্ষ্যই ছিল ওই ফলক খুঁজে বের করার। এ বার বিভাগের উদ্যোগে দ্বিতীয় পর্যায়ের এই খননে বৌদ্ধবিহারের স্থাপত্যরীতি, তাম্রপত্রের খোঁজ চালানো হবে বলে খবর। বেশ কিছু পুরাসামগ্রী উদ্ধারের আশা রাখলেও নির্দিষ্ট কোনও লক্ষ্যমাত্রা থাকবে না বলেই জানান বিভাগের অতিরিক্ত অধিকর্তা প্রভাকর পাল।
এই দ্বিতীয় পর্যায়ের খননের জন্য গত বছরের জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। তাতে সাড়া দিয়ে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি তার অনুমতি দিয়েছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। এ দিন থেকে সেই কাজেই নামল পুরাতত্ত্ববিভাগ। কাজ শুরুর উদ্দেশে এ দিন দাঁতনে এসে পৌঁছেছেন সাত জনের একটি দল। বিভাগের তরফে জানা গিয়েছে, এই খনন প্রক্রিয়ার অধিকর্তা করা হয়েছে দফতরের পুরাতাত্ত্বিক প্রকাশ মাইতিকে। আজ, বুধবার থেকে খনন শুরু করতে বেশ কয়েক জন স্থানীয় শ্রমিককে নিয়োগ করা হবে। এ ছাড়াও মুর্শিদাবাদ থেকে এক জন দক্ষ শ্রমিক আনার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার মূলত কী ভাবে ট্রেঞ্চ কাটা হবে, সেগুলির গভীরতা কত হবে তার একটি ছক তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ট্রেঞ্চ ৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট প্রস্থের হবে। তবে এ বারের খননে সখীসেনা ঢিবির উত্তর-পূর্ব দিকের বাকি থাকা অংশে প্রাথমিক পর্যায়ে খনন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
২০০৩-২০১২ পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছ’দফায় খনন করে এই বৌদ্ধস্তূপ আবিস্কার করে। ওই ছ’দফার খননকালে উদ্ধার হয় স্ট্যাকোর অলঙ্কৃত দেওয়াল, মূর্তি ইত্যাদি। তবে রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে ফের দ্বিতীয় দফায় খনন শুরু হয়। গত বছরের ৫ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় এই এলাকার খনন কাজ। রোদে-বর্ষায় ক্ষতি বাড়ছিল। কিন্তু ফের খনন শুরু হওয়ায় খুশির হাওয়া মোগলমারিতে। স্থানীয় শ্রমিক গৌরগোপাল দে বলেন, “খননে যুক্ত থেকে আমরা এই বিহার উদ্ধার করেছি। সেগুলির অবহেলা হলে খারাপ লাগে। খনন শুরু হওয়ায় আবারও কাজ পাব বলেই আশা রাখছি।” বৌদ্ধবিহারে অবস্থিত তরুণ সেবা সঙ্ঘের যুগ্ম-সম্পাদক অতনু প্রধানের দাবি, এ বার খননের পাশাপাশি সংরক্ষণও শুরু হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy