Advertisement
E-Paper

মিড ডে মিলে সাফল্যের শীর্ষে পশ্চিম মেদিনীপুর

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৪ ০৮:০২
বেড়বল্লভপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রামপ্রসাদ সাউয়ের তোলা ছবি।

বেড়বল্লভপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রামপ্রসাদ সাউয়ের তোলা ছবি।

ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত মিড ডে মিল খাইয়ে রাজ্যের মধ্যে প্রথম হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা।

এ বারই প্রথম রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি সমীক্ষা করা হয়। ৯টি বিষয়ের মাপকাঠিতে হয় সমীক্ষা। তাতে দেখা যায়, নিয়মিত মিড ডে মিল খাওয়ানো, সময়ে রাঁধুনিদের সাম্মানিক দেওয়া, প্রতিটি স্কুলকে মিড ডে মিলের আওতায় নিয়ে আসা-সহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই এগিয়ে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। আর এই হিসেবে সব দিক থেকে পিছিয়ে পড়া জেলা হল নদিয়া।

২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কোন মাপকাঠিতে কোন জেলা কত শতাংশ সফল তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে জেলাগুলি পিছিয়ে রয়েছে, তাদের সমস্যা খতিয়ে দেখে দ্রুত সমাধান করতে বলা হয়েছে। রাজ্যের মিড ডে মিল প্রকল্পের প্রজেক্ট ডিরেক্টর সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের জানিয়ে দিয়েছেন, যে মাপকাঠিতে তাঁরা পিছিয়ে রয়েছেন সেগুলি খতিয়ে দেখে কাজে গতি আনতে যেন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

মিড ডে মিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। গরিব পরিবারের ছেলেমেয়েদের স্কুলমুখী করার ক্ষেত্রে দিগন্ত উন্মোচন করেছে এই প্রকল্প। স্কুলে গেলে একবেলা ভরপেট খেতে পাবে, এই নিশ্চয়তায় দরিদ্র অভিভাবকেরাও বাচ্চাদের কাজে পাঠানোর পরিবর্তে এখন স্কুলে পাঠান। এর ফলে একদিকে স্কুলছুটের সংখ্যা কমছে, অন্য দিকে স্কুলে ছাত্র ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। তা সত্ত্বেও এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসন উদাসীন থাকে বলে অভিযোগ।

মিড ডে মিল রান্না না হওয়া, চাল চুরি যাওয়া বা নিম্নমানের চাল ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে বারবার। কয়েক মাস আগে মিড ডে মিল খেয়ে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে বেশ কয়েক জন ছাত্রের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে। তা নিয়ে সারা দেশ তোলপাড় হয়েছিল। ওই ঘটনার পরে মিড ডি মিল নিয়ে এ রাজ্যেও কড়াকড়ি হয়েছিল। তাতে ফল কতটা মিলেছে, তা খতিয়ে দেখতেই সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকারের।

সমীক্ষার জন্য ৯টি মাপকাঠি ধরা হয়েছিল। তার মধ্যে রয়েছে কতগুলি স্কুল মিড ডে মিলের আওতায় রয়েছে, সব ছাত্রকে প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে কিনা, প্রতিদিন রান্না করা খাবার খাওয়ানো হয়েছে কিনা, সব স্কুলে রান্নাঘর ও রান্নার সরঞ্জাম রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে কিনা, চাল খরচ হচ্ছে কিনা প্রভৃতি। সমীক্ষা শেষে দেখা যাচ্ছে, দুই চব্বিশ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ-সহ বেশ কয়েকটি জেলা এখনও একশো শতাংশ স্কুলকে মিড ডে মিলের আওতায় আনতে পারেনি।

মালদহ, নদিয়া, হাওড়ার মতো কয়েকটি জেলা আবার মিড ডে মিল চালু হওয়া স্কুলেও সব দিন রান্না করা খাবার খাওয়াতে পারেনি। অভিযোগ, নানা অছিলায় রান্না বন্ধ রাখা হয়। ফলে, ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে গিয়েও রান্না করা খাবার থেকে বঞ্চিত হয়।

এ দিক দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর এগিয়ে। এই জেলা ১০০ শতাংশ প্রাথমিক স্কুলের ১০০ শতাংশ ছাত্রছাত্রীকেই মিড ডে মিলের রান্না খাইয়েছে। শুধু ৪টি আপার প্রাইমারি স্কুল সবে অনুমোদন পাওয়ায় সেখানে মিড ডে মিল চালু করা যায়নি বলে আপার প্রাইমারিতে ৯৯.৮৫ শতাংশ স্কুলকে এর আওতায় নিয়ে আসা গিয়েছে। তবে এই স্কুলগুলির ১০০ শতাংশ ছাত্রছাত্রীকে মিড ডে মিলের আওতায় আনা গিয়েছে। মিড ডে মিল প্রকল্পে এহেন সাফল্যে খুশি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। তবে আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগতে নারাজ জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি। তাঁর কথায়, “এটা ধরে রাখতে হবে।” মিড ডে মিলের জেলা প্রকল্প আধিকারিক নীলাঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “এই সাফল্য স্কুলের শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির। আমরা তো কেবল নজরদারি চালিয়েছি। সমস্যা হলে সাহায্য করেছি। এই সাফল্য স্কুলগুলিকে আরও উৎসাহিত করবে।”

যাঁদের জন্য এই সাফল্য সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা কী বলছেন?

শালবনি ব্লকের নান্দারিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শুদ্ধদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল হওয়ায় গরিব ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেশিই। তাই আমরা সব সময় মিড ডে মিলে বাড়তি গুরুত্ব দিই। এখন অভিভাবকেরাও অনেক বেশি সচেতন। সব মিলিয়েই এই সাফল্য।”

মিড ডে মিলের হালহকিকত

সফল
​পশ্চিম মেদিনীপুর • দক্ষিণ দিনাজপুর • দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা • জিটিএ • হুগলি

সাধারণ
​বাঁকুড়া • বর্ধমান • পুরুলিয়া • জলপাইগুড়ি • উত্তর দিনাজপুর • মুর্শিদাবাদ

পিছিয়ে
​নদিয়া • পূর্ব মেদিনীপুর • বীরভূম • কোচবিহার • মালদা • শিলিগুড়ি • হাওড়া • উত্তর চব্বিশ পরগনা • কলকাতা

midday meal west medinipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy