পূর্ণিমা রাতে ময়নাগড়ের পরিখায় শ্যামসুন্দ জিউড়ের নৈশ নৌকাবিহার। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।
পূর্ব মেদিনীপুরে শুরু হল ময়না রাসমেলা। বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়নাগড়ের রাজবাড়ি সংলগ্ন এলাকায় এই মেলার উদ্বোধন করেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। তাঁর কথায়, “ঐতিহ্যবাহী এই ময়নাগড়ের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য প্রশাসনিক ভাবে সব সাহায্য করা হবে।”
অনুষ্ঠানে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা শাসক প্রশান্ত অধিকারী, পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন, তমলুকের এসডিপিও রাজ মুখোপাধ্যায়, নন্দকুমারের বিধায়ক সুকুমার দে প্রমুখ।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও লোক সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী এই রাসমেলা এ বার ৪৫৪ বছরে পদার্পণ করেছে। এ দিন বিকেলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর সন্ধ্যায় ময়না রাজ পরিবারের কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জীউকে মন্দির থেকে আলোকসজ্জিত নৌকায় চাপিয়ে ময়নাগড়ের পরিখায় বাজনা, ফানুস ওড়ানো ও আতস বাজির প্রদর্শনী সহযোগে গড় সংলগ্ন রাসমঞ্চে নিয়ে আসা হয়।
এই রাসযাত্রা উপলক্ষে এ দিন থেকে শুরু হয়েছে ১৫ দিন ব্যাপী রাসমেলা। মঙ্গলকাব্যের ধর্মমঙ্গলের কাহিনীখ্যাত রাজা লাউসেনের রাজত্বের মধ্যে ছিল ময়নাগড়। কাঁসাই নদীর পশ্চিম তীরবর্তী এই ময়নাগড় রাজপরিবারের উত্তরসুরী বাহুবলীন্দ্র পরিবারের কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জীউর রাসযাত্রা ঘিরে দীর্ঘ দিন ধরে মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
একদা রাজপরিবারের হাতে থাকা ওই মেলা এখন পরিচালিত হয় স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের উদ্যোগে। রাস উপলক্ষে আয়োজিত মেলার অন্যতম আকর্ষণ সবংয়ের মাদুর শিল্পীদের তৈরি রকমারি মাদুর ও চিনি দিয়ে তৈরি বিখ্যাত মিষ্টি কদমা ও বিশালাকার বাতাসা। কয়েক বছর আগেই রাজ্য হেরিটেজ কমিশন ঐতিহ্যবাহী স্থানের স্বীকৃতি দিয়েছে। মেলা চলবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত।
অন্য দিকে, কাঁথির বড় রাস উত্সব হয় মারিশদা থানার নাচিন্দাতে। এ ছাড়াও কাঁথি শহরের মনোহরচক রাসমঞ্চে ও গৌড়ীয় মঠেও এই উত্সব হয়। মনোহরচক রাসমঞ্চে মিত্রসঙ্ঘের উদ্যোগে এ বারের উত্সব ৯১ বছর। নাচিন্দা রাসের অন্যতম আকর্ষণ ঘূর্ণায়মান মঞ্চে রাধাকৃষ্ণের যুগলমূর্তি। রাস উপলক্ষে নাচিন্দা মন্দিরেও পাঁচ দিনের রাসমেলা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy