Advertisement
১০ মে ২০২৪

র‌্যাগিং কাণ্ডে শিক্ষিকার ইস্তফা, পেশ রিপোর্টও

গোপ কলেজের হস্টেলের দায়িত্ব থেকে ইস্তফাই দিলেন শিক্ষিকা রিনা পাল। রিনাদেবী কলেজের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। কলেজের পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি হস্টেল দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। কলেজেরই এক সূত্রে খবর, র্যাগিং-কাণ্ডের পরপরই রিনাদেবী কলেজের অধ্যক্ষা কৃষ্ণা মাইতির সঙ্গে দেখা করে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪১
Share: Save:

গোপ কলেজের হস্টেলের দায়িত্ব থেকে ইস্তফাই দিলেন শিক্ষিকা রিনা পাল। রিনাদেবী কলেজের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। কলেজের পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি হস্টেল দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। কলেজেরই এক সূত্রে খবর, র‌্যাগিং-কাণ্ডের পরপরই রিনাদেবী কলেজের অধ্যক্ষা কৃষ্ণা মাইতির সঙ্গে দেখা করে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন। আর বৃহস্পতিবার তিনি কৃষ্ণাদেবীর সঙ্গে দেখা করে ইস্তফাপত্র জমা দেন। অবশ্য এ নিয়ে অধ্যক্ষা এবং ওই শিক্ষিকা- কেউই মুখ খুলতে চাননি। কেন ইস্তফা? রিনাদেবীর মন্তব্য, “সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু বলার নেই!” আর কৃষ্ণাদেবীর জবাব, “আমি কিছু বলব না!”

কলেজের ওই সূত্রে অবশ্য খবর, এ ঘটনার আগেও হস্টেলের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন রিনাদেবী। তিনি ’৯৬ সাল থেকে এই দায়িত্বে ছিলেন। মাঝে ২০০৭ থেকে ২০০৯- এই সময়ের মধ্যে বছর দেড়েক দায়িত্বে ছিলেন না। পরে পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফের দায়িত্বে আসেন। অন্য দিকে, র‌্যাগিং- কাণ্ডে রিপোর্ট জমা দেওয়া নিয়ে কলেজ- কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবারই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সেই রিপোর্ট পাঠিয়েছেন কলেজ-কর্তৃপক্ষ। বস্তুত, র‌্যাগিং কাণ্ডের পর গোপ কলেজের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত রবিবার এ ঘটনা নিয়ে মেদিনীপুর কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। এরপর সোমবারই কলেজের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেন কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়- কর্তৃপক্ষ মনে করেছিলেন, বুধবারই রিপোর্ট জমা পড়বে। তা অবশ্য হয়নি। জানা গিয়েছে, এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ সমূহের পরিদর্শক বিনয় চন্দের কাছে এই রিপোর্ট জমা দেন গোপ কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিনয়বাবু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর কাছে রিপোর্টটি পাঠিয়ে দেন।

রিপোর্টে ঠিক কী জানিয়েছেন কলেজ- কর্তৃপক্ষ? বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সূত্রে খবর, রিপোর্টে ঘটনার কথাই উল্লেখ রয়েছে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পুলিশের কাছে অভিযোগ করার আগে ওই ছাত্রী বা তাঁর পরিবারের কেউ কলেজের কাছে কোনও অভিযোগ করেননি। কলেজে অ্যান্টি র‌্যাগিং সেল রয়েছে। অভিযোগ করলে তা খতিয়ে দেখে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপই করতেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার তথা ছাত্রকল্যাণ বিভাগের প্রধান জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, “কলেজের রিপোর্ট এসেছে। রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “কলেজের রিপোর্ট পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও একটি রিপোর্ট ইউজিসি’র কাছে পাঠানো হবে।” র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠার পর পরিচালন সমিতির জরুরি বৈঠক ডাকা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলেন কলেজ-কর্তৃপক্ষ। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে সমিতির বৈঠক এখনই হচ্ছে না। বদলে ৯ অগষ্ট কলেজের অ্যান্টি র‌্যাগিং সেলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ইতিমধ্যে কলেজকে এ ঘটনা নিয়ে অভ্যন্তরীন তদন্ত করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক নিয়েই ওই বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে কলেজেরই এক সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gope college ragging case resignation teacher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE