এ বার রেলের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছে খড়্গপুর পুরসভা। সম্প্রতি রেলবস্তিতে বিদ্যুত্ সংযোগে পুরসভার অনুমতিতে কাজ শুরু হলেও রেলের বাধায় তা থমকে যায়। তার প্রেক্ষিতেই শুক্রবার পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আধার কার্ডে একশো শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা ও ভাতা প্রাপকদের পরিচয়পত্র দেওয়ার তোড়জোরও শুরু হয়েছে।
খড়্গপুর শহরর একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে রেল এলাকা। ২০১০ সালের শেষ পুর-নির্বাচনের আগে এলাকা পুনর্বিন্যাসে খড়্গপুর পুরসভার অধীনে চলে আসে রেল এলাকা। এখন রেল এলাকার ৮টি ওয়ার্ড নিয়ে খড়্গপুরে মোট ৩৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। কিন্তু অন্য এলাকার মতো রেল এলাকার বাসিন্দারা পুর-পরিষেবা পাচ্ছে না বলে নানা সময়েই অভিযোগ ওঠে। তাঁদের কথা মাথায় চলতি বছরের গোড়ায় রেলের বিভিন্ন এলাকায় নলবাহিত জল পরিষেবা দিতে উদ্যোগী হন পুর-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেখানে বেশ কিছু এলাকায় বাধা সত্ত্বেও অনুমতি ছাড়াই পাইপ বসিয়ে জল দেওয়ার কাজ করেছে পুরসভা। এ দিকে, রেলের অধিকাংশ বস্তি এলাকাতেই বিদ্যুত্, শৌচাগার, আবর্জনা সাফাইয়ের মতো ন্যূনতম পরিষেবাই নেই। এ নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুতের দাবিতে লড়াই চালাচ্ছে বস্তি উন্নয়ন সমিতিও।
মাস কয়েক আগে বিদ্যুত্ দফতরের সঙ্গে কথা বলে রেলের বস্তি এলাকায় বিদ্যুত্ সংযোগ দেওয়ার দাবি জানায় পুরসভা। কিন্তু অনুমতি না থাকায় বিদ্যুত্ দফতর সেই সংযোগ দিতে অপারগ বলে জানিয়ে দেয়। মাস দু’য়েক আগে পুর-এলাকার অন্তর্গত রেল এলাকায় বিদ্যুত্ সংযোগ দেওয়ার অনুমতি দেয় পুরসভা। মাস খানেক ধরে সেই অনুমতিপত্রের ভিত্তিতেই কাজ চালাচ্ছিল বিদ্যুত্ দফতর। শান্তিনগর, নিমপুরা বাজার বস্তি, চুনাবস্তি, চায়না টাউন-সহ বিভিন্ন বস্তি এলাকায় খুঁটি বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু রেলের অনুমতি না থাকায় ওই কাজ বন্ধ করতে বিদ্যুত্ দফতরকে নির্দেশ দেন রেল কর্তৃপক্ষ।
এ দিন পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে রেল এলাকায় কাজ করতে না পারার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এর পরেই সকলের সম্মতিতে রেলের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন পুর কর্তৃপক্ষ। কংগ্রেসের পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “স্বাধীন ভারতে মানুষ বিদ্যুত্হীন অবস্থায় থাকবে তা ঠিক নয়। তাই রেলের বিরুদ্ধে আমরা মামলা করব।” হাইকোর্টে যাওয়ার ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুরপ্রধান। বোর্ড মিটিংয়ের এই সিদ্ধান্তকে বিজেপির একমাত্র কাউন্সিলর বেলারানি অধিকারী, প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের জহরলাল পাল সমর্থন করেছেন। যদিও রেলের খড়্গপুরের ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের কাছে রেলের যে বিধি রয়েছে সেই অনুযায়ী কাজ করেছি। এর পরে মামলা হলে আমরা বিধি আদালতে তুলে ধরব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy