Advertisement
০৬ মে ২০২৪

রাহুলের পাল্টা সভা, আজ জেলায় মুকুল

বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের জেলা সফরের ঠিক পরেই এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে সভা করতে আসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ মুকুল রায়। রাহুলবাবু যেখানে সভা করেছেন, সেই নয়াগ্রাম এবং খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার মাতকাতপুরেই আজ, মঙ্গলবার সভা করার কথা মুকুলবাবুর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৪ ০০:৪১
Share: Save:

বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের জেলা সফরের ঠিক পরেই এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে সভা করতে আসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ মুকুল রায়। রাহুলবাবু যেখানে সভা করেছেন, সেই নয়াগ্রাম এবং খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার মাতকাতপুরেই আজ, মঙ্গলবার সভা করার কথা মুকুলবাবুর।

রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির রাজ্য সভাপতির সভায় উপচে পড়া ভিড় এবং বিভিন্ন দল ছেড়ে বহু নেতা-কর্মীর বিজেপিতে যোগদানের বিষয়টিকে রীতিমতো গুরুত্ব দিচ্ছে শাসক তৃণমূল। তাই তড়িঘড়ি এই দু’জায়গায় সভা করার সিদ্ধান্ত। মুকুলবাবু অবশ্য সোমবার দাবি করেন, “এটা পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি।” আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বক্তব্য, “লোকসভা নির্বাচনে আমরা বিপুল জয় পেয়েছি। তারপর একটা সভাও করিনি। সভা না হওয়াটাই তো অস্বাভাবিক। মঙ্গলবার নয়াগ্রাম এবং খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকায় সভা হবে। মুকুল রায় থাকবেন। পরে অনান্য এলাকাতেও সভার আয়োজন করা হবে।”

তৃণমূল সূত্রে অবশ্য খবর, রাহুলবাবু জেলা ছাড়ার পর তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়েই মুকুলবাবুর সভার আয়োজন করেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। আজ, মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম সভাটি হবে নয়াগ্রামের কলমা পুকুরিয়ায়। দ্বিতীয়টি খড়্গপুর গ্রামীণের মাতকাতপুরে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলায় বিজেপি যে ভাবে বাড়তে শুরু করেছে, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে তৃণমূলের একাংশই। যদিও তৃণমূল থেকে বড় মাপের কোনও নেতা এখনও বিজেপিতে নাম লেখাননি, তবু সতর্ক থাকছে রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের অন্দরেই দাবি উঠেছে, কেন বিজেপির ভোট বাড়ল, দ্রুত তা গভীর ভাবে পর্যালোচনা করতে হবে। না হলে দলের সমর্থন আরও কমতে পারে।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় কোনও দিনই বিজেপির জোরদার সংগঠন ছিল না। তবে মোদী হাওয়ায় এ বারের লোকসভা নির্বাচনে রীতিমতো ভাল ফল করেছে গেরুয়া শিবির। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর কেন্দ্রে ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। ঝাড়গ্রাম এবং ঘাটালে তাদের প্রাপ্ত ভোট ছিল যথাক্রমে ৫ এবং ৩ শতাংশ। সেখানে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুরে বিজেপির ভোট বেড়ে হয়েছে ১৪ শতাংশ, ঝাড়গ্রামে ১০ শতাংশ এবং ঘাটালে ৭ শতাংশ। কার্যত বিনা সংগঠনে বিজেপির এই ভোটপ্রাপ্তিকে লঘু করে দেখতে চাইছেন না একাংশ তৃণমূল নেতা। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “গোটা রাজ্যে বিজেপি ভোট পেয়েছে ১৭ শতাংশ। আমাদের জেলায় ১০ শতাংশ। ফলে, পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপির উত্থান সেই অর্থে চমকপ্রদ নয়। তা-ও কেন জেলার তিন লোকসভা কেন্দ্রেই বিজেপির ভোট বেড়েছে, তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা জরুরি।”

বিজেপির সাফল্যের পরে বিভিন্ন দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগদানের প্রবণতা বেড়েছে। রবিবার জেলায় এসে যে চারটি সভা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ, তার প্রতিটিতেই সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন দল ছেড়ে বহু নেতা-কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেন। দলবদলের তালিকায় ছিলেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি সিপিএমের অন্তরা ভট্টাচার্য, পিংলার কংগ্রেস নেতা গৌর ঘোড়ই, সিপিআইয়ের শ্রমিক নেতা অশোক সেনাপতি প্রমুখ। বেশ কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্যও বিজেপিতে যোগ দেন। জেলায় বিজেপির এই উত্থানেই শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আপাতত তাই মুকুলবাবুকে এনে পাল্টা সভা করে ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখার চেষ্টায় তৎপর তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rahul sinha mukul roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE