Advertisement
১৯ মে ২০২৪

লক্ষাধিক ভোটে ঘাটালে জয় দেখছে তৃণমূল

ভোট মিটতেই চিন্তা গায়েব। মুখে হাসি শাসক দলের নেতাদের। ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে দেবের মতো হাইপ্রোফাইল প্রার্থী থাকায় বিশাল মার্জিনে জয় নিশ্চিত করার বাড়তি চাপ ছিল তৃণমূল শিবিরে। সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছিল প্রস্তুতি। তবু উদ্বেগ ছিলই। দেব যতই জনপ্রিয়তার শিখরে থাকুন না কেন, প্রতিপক্ষ তো মানস ভুঁইয়া, সন্তোষ রাণার মতো পোড়খাওয়া রাজনীতিকরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৪ ০১:১৫
Share: Save:

ভোট মিটতেই চিন্তা গায়েব। মুখে হাসি শাসক দলের নেতাদের।

ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে দেবের মতো হাইপ্রোফাইল প্রার্থী থাকায় বিশাল মার্জিনে জয় নিশ্চিত করার বাড়তি চাপ ছিল তৃণমূল শিবিরে। সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছিল প্রস্তুতি। তবু উদ্বেগ ছিলই। দেব যতই জনপ্রিয়তার শিখরে থাকুন না কেন, প্রতিপক্ষ তো মানস ভুঁইয়া, সন্তোষ রাণার মতো পোড়খাওয়া রাজনীতিকরা। তার উপর বিজেপি প্রার্থীর অনুকূলে রয়েছে মোদী হাওয়া। সব মিলিয়ে ভোটের দিন যত এগোচ্ছিল, ঘাটাল নিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কপালের ভাঁজ তত বাড়ছিল।

সোমবার ভোট-পর্ব মিটতেই অবশ্য চিন্তা ঘুচেছে। প্রচারে দেবের সর্বক্ষণের সঙ্গী তথা ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই চেয়ারে হেলান দিয়ে এক মুখ হাসি নিয়ে বলেই ফেললেন, “ভোট ভাল ভাবে হয়েছে। কোথাও বড় গণ্ডগোল হয়নি। প্রার্থী লক্ষাধিক ভোটে জিতবেন। গতবারে বামেরা যে ব্যাবধানে জিতেছিল, তাকে টেক্কা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”তৃণমূল শিবির যতই নিশ্চিত হোক, কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়া এবং বাম প্রার্থী সন্তোষ রাণাও কিন্তু আত্মবিশ্বাসী। মানসবাবু বলেন, “তৃণমূল রিগিং, সন্ত্রাস করে ভোট করেছে। তাতেও আমি জিতবই।” আর সন্তোষবাবুর বক্তব্য, “ভোট লুঠ হয়েছে। আমি ৯৩টি বুথে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু অঙ্ক বলছে আমরা ফের এই কেন্দ্রটি ধরে রাখতে পারব। তবে ব্যবধান কমবে।”

২০০৯ সালে ঘাটাল থেকে সিপিআই প্রার্থী গুরুদাস দাশগুপ্ত দেড় লক্ষ ভোটে জিতেছিলেন। সে বার ১৩ লক্ষ ৫৩ হাজার ৩৩ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছিলেন ১১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯৩৪ জন। মোট ৮৬.৪৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল। বামেরা পেয়েছিল ৫৩.৫০ শতাংশ ভোট, কংগ্রেস-তৃণমূল জোট ৪০.৯২ শতাংশ ও বিজেপি ২.৯৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১১ সালে ছবিটা পুরোপুরি বদলে যায়। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে ঘাটাল কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভার ৫টিতেই এগিয়েছিল বামেরা। কিন্তু ২০১১ সালে ৭টির মধ্যে ৫টি বিধানসভাতেই জয়ী হয় কংগ্রেস-তৃণমূল জোট। ২০১১ সালের বিধানসভার তথ্য বলছে সবংয়ে জোট প্রার্থী ৫১.২৫ শতাংশ, বাম ৪৪.৪১ এবং বিজেপি ২.৩০ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। পিংলায় জোট ৪৬.৫৬, বাম ৪৭.২৪ ও বিজেপি ৪.২৬ শতাংশ ভোট পায়। ডেবরায় জোট ৫০.৫৭, বাম প্রার্থী ৪৫.৪০,বিজেপি ২.২৮ শতাংশ ভোট পায়। দাসপুরে জোট প্রার্থী ৫৪.৭৬, বাম প্রার্থী ৪২.২৪ এবং বিজেপি প্রার্থী ৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। ঘাটালে জোট প্রার্থী ৫২.২৪, বাম প্রার্থী ৪৩.৮৫ এবং বিজেপি ২.৩৬ শতাংশ ভোট পান। কেশপুরে জোট পেয়েছিল ৩৮.৮২ শতাংশ, বাম ৫৭.৫৮ এবং বিজেপি পেয়েছিল ৩.৬০ শতাংশ ভোট। পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভায় জোট প্রার্থী ৪৯.৯৭, বাম প্রার্থী ৪৫.০৮ ও বিজেপি প্রার্থী পান ৩.২১ শতাংশ।

সব মিলিয়ে ২০১১ সালের বিধানসভা ওয়াড়ি ফলাফলে নিরিখে জোট প্রায় ৫০ শতাংশ, বামেরা ৪৪ শতাংশ এবং বিজেপি প্রায় চার শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এই অঙ্ক সামনে রেখেই হিসেব কষছে বিরোধীরা। ফলে, তাদের প্রশ্ন, “যদি অবাধ ভোটই হয়, তাহলে তৃণমূল প্রার্থী লক্ষাধিক ভোটে জিতবেন কী করে?” সন্তোষবাবু স্পষ্টই বলেন, “তৃণমূলের ওই দাবি হয় ভিত্তিহীন, নাহলে রিগিং করে ওরা ওই তথ্য বলছে। মানসবাবুর অভিযোগ, “দেবের জন্যও শাসক দলকে ছাপ্পা মারতে হল!” একই অভিযোগ বিজেপি প্রার্থী মহম্মদ আলমেরও।

তৃণমূল অবশ্য এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছে। শাসক শিবিরে এখন শুধুই জয়ের অপেক্ষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

lok sabha election ghatal tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE