হা পিত্যেশ করে বসেছিলেন ব্যবসায়ীরা। ঈদের বাজারও ফাঁকা, সুনসান! রকমারি শাড়ি, সালোয়ার, পাঞ্জাবি কী তা হলে দোকানেই থেকে যাবে। এই আশঙ্কায় কপালে ভাঁজ পড়েছিল। শেষ দু’দিন অবশ্য সেই দু:খ ঘুচিয়ে দিল। ভিড় দেখা দিল সব বাজারেই। তা সে বড়বাজার হোক বা কালেক্টরেট, শপিং মল থেকে রাস্তার ফুটপাত। যে যার সাধ্য মতো শাড়ি, সালোয়ার, পাঞ্জাবি কিনে বাড়ি ফিরেছেন। তারই সঙ্গে হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখেও। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মলয় রায় বলেন, ‘‘প্রথমের দিকে বাজারে কিছুটা ভাটা পড়লেও শেষদিকে বাজারে ভিড় ছিল ভালোই।”
কয়েক দিন ধরেই মসজিদ সুন্দর করে সাজানো, ইদগা মাঠে নমাজের প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে। শুধু মসজিদ বা ইদগাই নয়, প্রতিটি মহল্লাও সেজে উঠেছে রঙিন আলোতে। বড়দের পাশাপাশি আনন্দে মেতে ওঠে কচিকাঁচারাও। মেয়েদের হাতে মেহেন্দি ও রকমারি চুড়ি। আতর মেখে, চোখে সুরমা দিয়ে প্রস্তুত ছেলেরাও। সকাল থেকেই সকলে সেজেগুজে শহর জুড়ে ঘুরে বেড়ানোর দিন যে। কচিকাঁচাদেরও এ দিন ঘোরাঘুরিতে তেমন নিষেধাজ্ঞা নেই। ফলে এই দিনটা ছোটদের কাছে ভীষণ মজারও। বাইরে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে পরিচিত জন দেখলেই জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি। বড়দের দেখলে সালাম। বাড়ি ফিরে সেমুই, লাচ্চা, ফিরনি, হালুয়া, বিরিয়ানি সহ রকমারি খাবার। শুধু মুসলিমরাই কেন, পাশাপাশি থাকা সব ধর্মের প্রতিবেশিরাও আনন্দে মেতে ওঠেন। এটা যে এক ধরনের মিলন মেলা। তাই তো কাজের সন্ধানে যাঁরা বছরভর বাইরে থাকেন, এই দিনটিতে সকলেই বাড়ি ফিরে আসেন। সব মিলিয়ে আনন্দের এই উৎসবকে সফল করতে পুলিশ-প্রশাসন থেকে শুরু করে হিন্দু-মুসলিম সকলেই সচেষ্ট। মেদিনীপুর টাউন মুসলিম কমিটির সভাপতি শেখ মিরাজুল ইসলাম বলেন, “আনন্দের এই দিনে সকলকে শুভেচ্ছা জানাই। সকলের বাড়িতেই পৌঁছে যাক ঈদের খুশি।”
ঈদের আগে থেকেই বিভিন্ন জায়গায় বস্ত্র থেকে শুরু করে লাচ্ছা, চিনি, মিষ্টি প্রভৃতি বিতরণ করা চলছিল। আগের দিনেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। সোমবার বই আড্ডাতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লাচ্ছা, চিনি ও দুধ বিতরণ করা হল। প্রায় ৫০০ জন গরিব মানুষের হাতে এই খাবার তুলে দেন প্রাক্তন কাউন্সিলর রহিমা আহমেদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শেখ সফিক, দুলদুল আহমেদ। এদিনই কেরানীতলাতেও এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বস্ত্র বিতরণ করা হয় ১৩ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা ইমদাদুল ইসলাম, এরশাদ আলিরা। ডেবরাতেও এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। প্রায় ৫০০ মানুষের হাতে নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। ছিলেন রাজ্য সংখ্যালঘু সেলের সম্পাদক ওহেদুর হক, নজরুল ইসলামেরা। বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের পক্ষ থেকে ঈদকে সফল করতে এভাবেই মাঠে নেমেছেন সকলেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy