রাস্তার ধারে প্ল্যাকার্ড হাতে গ্রামবাসী। —নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রামে উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়ার দাবিকে অস্বস্তিতে ফেললেন কাঁকড়াঝোর-আমলাশোলের বাসিন্দারা। বুধবার আমলাশোলে জনসংযোগ কর্মসূচির অনুষ্ঠান সেরে ফেরার পথে ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) বিশাল গর্গ, ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের কাছেও সেতুর দাবি জানান গ্রামবাসী। ‘ব্রিজ চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে স্কুল পড়ুয়া-সহ বাসিন্দারা অবিলম্বে ওই কজওয়ের উপর উঁচু সেতু তৈরির জন্য পুলিশ কর্তাদের কাছে দাবি জানান। ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “অবিলম্বে দাবি পূরণের জন্য জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করব।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকড়াঝোরের গন্দরপাড়ায় গামারদহ খালের উপর ঢালু কজওয়ে রয়েছে। কিছুটা দূরে ধানঘোরি পাড়ার বড়ঘাটি খালের উপর আরও একটি কজওয়ে রয়েছে। একটু ঝেঁপে বৃষ্টি হলেই পাহাড়ি এলাকার একাধিক ঝোরার জল এসে গামারদহ খালের ঢালু কজওয়ে ছাপিয়ে তোড়ে বইতে থাকে। হড়পা বাণের সময় তখন দীর্ঘক্ষণ কার্যত অবরুদ্ধ থাকে কাঁকড়াঝোর, আমলাশোল, আমঝর্নার মতো গ্রামগুলি। আমলাশোল-কাঁকড়াঝোরের মাঝে পিচরাস্তার বাঁকে ওই কজওয়েটির উপর একটি উঁচু সেতু তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। সেতু না থাকায় বৃষ্টি হলেই চরম সমস্যায় পড়েন এলাকাবাসী। গামারদহ খালের উপর ঢালু কজওয়েটি কজওয়েটি কাঁকড়াঝোর গ্রামের মাঝ বরাবর থাকায় খালে হড়পা বাণ নামলে গ্রামের দু’টি প্রান্ত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কজওয়ের একপ্রান্তে রয়েছে কাঁকড়াঝোরের পাঁচটি পাড়া। অন্য প্রান্তে রয়েছে কাঁকড়াঝোরের দু’টি পাড়া, কাঁকড়াঝোর প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র, আমলাশোল ও আমঝর্না গ্রাম এবং ঝাড়খণ্ড সীমান্ত। ভারী বৃষ্টি হলেই দুই প্রান্তের কয়েকশো বাসিন্দা চরম দুর্ভোগে পড়েন। তখন আমঝর্না, আমলাশোলের বাসিন্দারা এবং কাঁকড়াঝোরের দু’টি পাড়ার বাসিন্দারা ওদলচুয়া কিংবা বেলপাহাড়ির দিকে যেতে পারেন না। হড়পা বাণের রাতে গুরুতর অসুস্থকে বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার জন্য দু’টি কজওয়ের জল নামার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আবার হড়পা বাণ নামলে কাঁকড়াঝোরের চারটি পাড়ার স্কুল পড়ুয়ারা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে যেতে পারে না।
কয়েক দশক ধরেই এই সমস্যা চলে আসছে। স্থানীয় বাসিন্দা ধর্মাল মাণ্ডি, মঙ্গল মুড়া, পরেশ সিং সর্দার, ইপিল মুড়া, মঞ্জু মুড়া, রেণুকা মাহাতোদের অভিযোগ, রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পরেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয় নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ৭ জানুয়ারি আমলাশোলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের সময় গামাারদহের ঢালু কজওয়ের উপর পাথর ও মাটি ফেলে উঁচু করা হয়। কিন্তু পরে ভারী বৃষ্টিতে ওই মাটি ধুয়ে গিয়ে ঢালু কজওয়েটি এই বর্ষায় স্থনীয় বাসিন্দাদের নিত্য যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক মহলে কয়েকবার দাবিপত্র দিয়েছেন এলাকাবাসী। মাস খানেক আগ বেলপাহাড়ির বিডিওকে স্মারকলিপি দিয়েছেন বাসিন্দারা। বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী কংগ্রেস সদস্য সুব্রত ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “সমস্যার গভীরে না গিয়ে গ্রামবাসীদের খিচুড়ি খাইয়ে এবং পোষাক, সাইকেল, মুরগি বিলি করলেই উন্নয়ন হয় না। মানুষের ন্যায্য দাবি পূরণ না হওয়ার কারণেই এলাকায় নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy