Advertisement
১৯ মে ২০২৪

হাইকোর্টের নির্দেশে মেলা শুরু নয়াগ্রামে

তৃণমূলের দলাদলিতে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে নয়াগ্রামের সেই মেলা শুরু হল বৃহস্পতিবার। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মেলা শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত। গত মঙ্গলবার থেকেই বেসরকারি উদ্যোগে মেদিনীপুর সদর ব্লকের নয়াগ্রামে এই মেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল। প্রস্তুতি সত্ত্বেও শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত হয়ে যায়।

নয়াগ্রামে মেলার সূচনা।

নয়াগ্রামে মেলার সূচনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:২১
Share: Save:

তৃণমূলের দলাদলিতে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে নয়াগ্রামের সেই মেলা শুরু হল বৃহস্পতিবার। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মেলা শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত।

গত মঙ্গলবার থেকেই বেসরকারি উদ্যোগে মেদিনীপুর সদর ব্লকের নয়াগ্রামে এই মেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল। প্রস্তুতি সত্ত্বেও শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত হয়ে যায়। স্কুলের মাঠে মেলা করার জন্য উদ্যোক্তারা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন। সংসদ অনুমতি দেয়নি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি নারায়ণ সাঁতরা অবশ্য অনুমতি না দেওয়ার কারণ জানিয়েছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, আগামী ১১-১২ জানুয়ারি সরকারি উদ্যোগে এই মাঠে মেলা হবে। বেসরকারি উদ্যোগে যে মেলাটি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলত। একই মাঠে দু’টি মেলা হবে কী ভাবে? সরকারি মেলার কথা আগে থেকেই জানানো হয়েছিল। তাই বেসরকারি মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।” স্থানীয় সূত্রে অবশ্য খবর, তৃণমূলের দলাদলিতেই মেলা স্থগিত হয়ে যায়। তৃণমূলের একপক্ষের পরামর্শে স্কুল মাঠে মেলার প্রয়োজনীয় অনুমতি দেননি সংসদ সভাপতি।

শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর একদিকে রয়েছে শাসক দলের ব্লক সভাপতি দিলীপ দে এবং তাঁর অনুগামীরা। অন্যদিকে রয়েছে দিলীপবাবুর বিক্ষুব্ধরা। মেলার যাঁরা উদ্যোক্তা, তাঁদের অনেকেই শাসক দলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত। মেলা স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর উদ্যোক্তাদের অন্যতম, তৃণমূলের সদর ব্লকের সাধারণ সম্পাদক গোলক মাইতি বলেও দেন, “দলের ব্লক সভাপতি চক্রান্ত করে মেলা ভেস্তে দিলেন! সেই চক্রান্তে সংসদ সভাপতিও নিজেকে জড়িয়ে দিলেন! ব্লক সভাপতির পরামর্শেই সংসদ সভাপতি মেলার অনুমতি দেননি।” তাঁর কথায়, “গ্রামীণ এলাকায় সে ভাবে মেলা হয় না। এলাকার অনেকেই এই মেলার জন্য বছরভর অপেক্ষা করে থাকেন। আমাদের এই মেলায় জাঁকজমকও থাকে। কত স্টল থাকে।” বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন উদ্যোক্তারা। হাইকোর্ট মেলার পক্ষেই নির্দেশ দেয়। মেলা করার জন্য যাতে কোনও রকম সমস্যা না- হয়, কোতয়ালি থানার আইসি ও সদর বিডিওকেও বিষয়টি দেখতে বলা হয়।

নয়াগ্রাম এলাকাটি মেদিনীপুর সদর ব্লকের মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। গ্রামীণ এলাকায় মেলা করতে হলে পঞ্চায়েতের ‘নো- অবজেকশন’ সার্টিফিকেট লাগে। আগে সেই সার্টিফিকেটও পেয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে রয়েছে। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অঞ্জন বেরা এদিনও বলেন, “মেলা হলে আমাদের কোনও আপত্তি ছিল না। আমরা এ কথা উদ্যোক্তাদের জানিয়েও দিয়েছিলাম। এরপর কেন মেলা স্থগিত হয়ে গেল তা বলতে পারব না। শুনেছি, এদিন থেকে মেলা শুরু হয়েছে।” তৃণমূলের অন্দরে অঞ্জনবাবু দিলীপ- বিরোধী শিবিরের লোক বলেই পরিচিত। নয়াগ্রাম উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এই মেলার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিবেক মেলা’। এ বার ছিল তৃতীয় বর্ষ। এদিন মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা গোলকবাবু বলেন, “মেলা করতে চেয়ে আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। হাইকোর্টে সুবিচার পেয়েছি। এদিন থেকেই মেলা শুরু হয়েছে।” মেদিনীপুর সদরের বিডিও ঋত্বিক হাজরা বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশের কথা শুনেছি। আইনজীবীর একটি চিঠিও পেয়েছি। এদিন থেকেই নয়াগ্রামে মেলা শুরু হয়েছে।” জানা গিয়েছে, মেলা যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, সেই জন্য বৃহস্পতিবার সকালে এক বৈঠকও করেন বিডিও।

সরকারি উদ্যোগে আগামী ১১- ১২ জানুয়ারি ‘বিবেক মেলা’ এই নয়াগ্রামেই হবে। সেটি স্থানীয় হাইস্কুল মাঠে হতে পারে। সদরের বিডিও ঋত্বিকবাবুর কথায়, ‘‘আগামী ১১-১২ জানুয়ারি সরকারি উদ্যোগে নয়াগ্রামেই ‘বিবেক মেলা’ হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

medinipur nayagram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE