স্থানীয় কয়েকজন যুবকের হামলার প্রতিবাদে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কাজ বয়কট করলেন পঞ্চায়েত প্রধান, উপ-প্রধান-সহ তৃণমূলের নয় সদস্য। বুধবার খড়্গপুর-২ ব্লকের কালিয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। ওই তৃণমূল সদস্যদের অভিযোগ, দিন কয়েক ধরেই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা তাঁদের ওপর নানা বিষয় নিয়ে চড়াও হচ্ছেন। মঙ্গলবার বিকেলে এলাকার কয়েকজন যুবক প্রধান ও উপ-প্রধানকে ঘিরে হেনস্থা শুরু করেন। এই পরিস্থিতিতে কাজ করা অসম্ভব জানিয়ে ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার তাঁরা কাজ বয়কটের ডাক দেন। ওই যুবকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিডিওকে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হয়েছে।
স্থানীয় ও তৃণমূলের দলীয় সূত্রে খবর, খড়্গপুর-২ ব্লকের তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মতবিরোধ থাকলেও বিরোধ কখনও প্রকাশ্যে আসেনি। কিন্তু একমাত্র কালিয়ারা গ্রাম পঞ্চয়েত এলাকায় একাধিক ঘটনায় অশান্তি ঘিরে নাম জড়িয়েছে শাসকদল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের সবকটিতেই তৃণমূলের জয়ের পর থেকেই বেড়েছে সমস্যা। সম্প্রতি গীতাঞ্জলি ও অধিকারের মতো গৃহনির্মাণ প্রকল্পে প্রাপকদের তালিকা নিয়ে বিডিও-র কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছেন তৃণমূল সমর্থিত কয়েকজন গ্রামবাসী। তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের একাংশ সদস্যের কারসাজিতে প্রধান ও উপ-প্রধানরা তালিকায় কারচুপি করেছেন।
এই অভিযোগ নিয়েই মঙ্গলবার পঞ্চায়েত অফিসে চড়াও হন তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত স্থানীয় কয়েকজন যুবক। ওই দিন পঞ্চায়েতের প্রধান সোহাগী বাস্কে ও উপ-প্রধান কমল দে-কে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু চলে। এমনকী কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্যর সঙ্গে হাতাহাতিও বাধে ওই যুবকদের। এরপরই ওই প্রধান, উপপ্রধান-সহ পঞ্চায়েত সদস্যরা জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি জানান। উপ-প্রধান কমল দে বলেন, “প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী আমরা স্বচ্ছভাবেই তালিকা পাঠিয়েছি। কিন্তু কিছু উশৃঙ্খল যুবক আমাকে ও মহিলা প্রধানের ওপর হামলা করেছে। তাঁদের মধ্যে আমাদের দলেরও কেউ কেউ থাকতে পারেন।” জেলা সাধারণ সম্পাদক অজিত মাইতি বলেন, “দলের মধ্যে কিছু মতপার্থক্যে একটা ছোট ঘটনা ঘটেছে। তবে এই ধরনের ঘটনা আমরা বরদাস্ত করি না।”
কিন্তু বুধবার সকাল পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি অভিযোগ তুলে কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন প্রধান, উপ-প্রধান-সহ কালিয়ারা পঞ্চায়েতের নয় সদস্য। এ বিষয়ে বিডিও সোমা দাসের কাছে তাঁরা আবেদনও জানান। আর পঞ্চায়েত অফিসে এভাবে কাজ বন্ধ রাখায় সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। প্রত্যেকেই প্রয়োজনীয় কাজ করাতে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। বাধ্য হয়েই বিডিও বিষয়টি জানিয়েছে মহকুমাশাসককে। মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “কালিয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েতে কেন এরকম হল তা নিয়ে বৈঠক ডাকতে বলেছি।” আজ, বৃহস্পতিবার মাদপুরে বিডিও অফিসেই ওই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy